Advertisement
E-Paper

জীবাশ্মের বয়স ৫২ কোটি বছর! নাড়িভুঁড়ি, মস্তিষ্ক নিয়ে আজও অক্ষত কাঁকড়া, মাকড়সার সেই পূর্বপুরুষ

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজকের মাকড়সা, কাঁকড়ার পূর্বপুরুষ ঠিক কেমন ছিল, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে তাঁদের কাছে। অত কোটি বছর আগেও এই প্রাণীটির শরীরের গঠন ছিল সময়ের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৭
Scientists uncover a 520 million old fossil, brain and gut are intact

চিনের ইউনান অঞ্চল থেকে উদ্ধার হওয়া সেই জীবাশ্ম। ছবি: সংগৃহীত।

৫২ কোটি বছর আগে পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়াত ওই সন্ধিপদ প্রাণীটি। বিজ্ঞানীরা তার জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়ার পরে প্রথমে বুঝতেই পারেননি, যে সে এতটা বুড়ো। এ বার সেই জীবাশ্ম নিয়ে পরীক্ষা চালানোর পরেই বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, কোটি কোটি বছর ধরে কী ভাবে অভিযোজিত হয়েছে এই প্রাণী। বাঁচার লড়াই করতে করতে কতটা পরিবর্তন হয়েছে তার, তা ধরা পড়েছে গবেষণায়। বিজ্ঞানীদের আরও অবাক করেছে জীবাশ্মের গঠন। তাঁরা জানিয়েছে, মাথা থেকে, নাড়িভুঁড়ি (গাট), এত কোটি বছর পরেও অক্ষত রয়েছে সব।

জীবাশ্ম আসলে কী? দীর্ঘ দিন ধরে প্রাণীর দেহ চাপা পড়ে থাকলে তা পাথরে পরিণত হয়। একেই বলে জীবাশ্ম। বিরল হলেও কখনও কখনও প্রাণী শরীরের নরম কলা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে অক্ষত থেকে যায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সন্ধিপদ প্রাণীর লার্ভাও সে ভাবেই অক্ষত থেকে গিয়েছে। শুধু নিপুণ দেহরেখা নয়, দেহের ভিতরের অন্ত্র, শরীরের যন্ত্রও অক্ষত থেকে গিয়েছে।

প্রাণীদেহ জীবাশ্মে পরিণত হলে তার অবয়ব, দেহরেখাটুকুই বুঝতে পারতেন, সেই নিয়ে গবেষণা করতে পারতেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ভিতরের গঠন আজানাই থেকে যেত। কিন্তু নতুন যে জীবাশ্ম মিলেছে, তা ত্রৈমাত্রিক। প্রাণীটির শরীরের ভিতরের অন্ত্র, যন্ত্রগুলিও অক্ষত রয়েছে। সে কারণে, বিজ্ঞানীরা নতুন দিশা পেলেন। তাঁরা কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরেছেন, যে সৃষ্টির আদিতে কেমন ছিল প্রাণীদের শরীরের গঠন।

চিনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সংরক্ষিত রয়েছে জীবাশ্মটি। ওই অঞ্চল থেকেই মিলেছিল সেটি। ডুরহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্টিন স্মিথের নেতৃত্বে জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তা প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ জার্নালে। এই লার্ভার জীবাশ্মটির নাম দেওয়া হয়েছে ইউতি ইউয়ানসি। একটি রেখার মতো তার শরীর। প্রাণীটি ক্যাম্ব্রিয়ান যুগে পৃথিবীতে বেঁচে ছিল। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সে সময় যে সব জীব বেঁচে ছিল, তাদের দ্রুত বিবর্তন হচ্ছিল। জীবাশ্মটি যার, সেই সন্ধিপদ প্রাণীরও বার বার বিবর্তন হয়েছে। আজও পৃথিবীর বুকে অক্ষত এই শ্রেণি, যার মধ্যে রয়েছে মাকড়সা, কাঁকড়া।

জীবাশ্মটির সিনক্রোটন এক্স-রে টোমোগ্রাফি করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা তার ত্রৈমাত্রিক ছবিও তুলেছেন। জীবাশ্মটির মস্তিষ্কের অঞ্চল, হজমের গ্রন্থি, সংবহনতন্ত্র (রুডিমেন্টারি সার্কুলেটরি সিস্টেম), এমনকি, পা এবং চোখের স্নায়ুও খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজকের মাকড়সা, কাঁকড়ার পূর্বপুরুষ ঠিক কেমন ছিল, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে তাদের কাছে। অত কোটি বছর আগেও এই প্রাণীটির শরীরের গঠন ছিল সময়ের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত।

বিজ্ঞানী স্মিথ জানিয়েছেন, এমনিতে লার্ভার জীবাশ্ম তৈরি হয় না। কারণ, তার আগেই ভেঙে যায় ছোট দেহটি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই লার্ভার শরীর সুস্পষ্ট জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে। এই গবেষণার অন্যতম সহায়ক স্ট্র্যাথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ক্যাথরিন ডবসন জানিয়েছেন, ওই জীবাশ্ম দেখে বিবর্তনের ধারা অনেকটাই বোঝা গিয়েছে। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও ধরা পড়েছে। ভবিষ্যতে এই নিয়ে আরও গবেষণা হবে বলে মনে করেন তিনি।

Fossils Arthropod
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy