Advertisement
E-Paper

ফোন-ইন্টারনেটের জন্যই শোনা যাচ্ছে না কৃষ্ণগহ্বরের গোঙানি! মহাশূন্যে পৃথিবীকে ‘খুঁজে’ পাওয়া না গেলে কী বিপদ হবে?

জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার ধ্রুপদী তত্ত্ব বলে, কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষ বল এতই শক্তিশালী যে, সেই টান ফাঁকি দেওয়ার উপায় নেই কারও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ১৬:৪০
ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর।

ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর। —প্রতীকী চিত্র।

ইদানীং মহাশূন্যে পৃথিবীকে ‘খুঁজে’ পেতেই হিমশিম খাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ— মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট!

মহাকাশে পৃথিবীর সঠিক অবস্থান জানতে সাধারণত কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের কৃষ্ণগহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) অবস্থানকে কাজে লাগান বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘জিয়োডেসি’ বলা হয়। কৃষ্ণগহ্বর থেকে ভেসে আসা অস্ফুট গোঙানির শব্দ শুনেই পৃথিবীর অবস্থান জানা যায়।

কিন্তু যে রেডিয়ো টেলিস্কোপে কৃষ্ণগহ্বরের শব্দতরঙ্গ ধরা পড়ে, সেখানে জড়ো হয় মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের তরঙ্গও। সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়তে থাকায়, সেই তরঙ্গের মাত্রা তীব্র এবং জোরালো হয়েছে। যার ফলে কৃষ্ণগহ্বর থেকে ভেসে আসা ক্ষীণ শব্দ সঠিক ভাবে শুনতেই পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা!

জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার ধ্রুপদী তত্ত্ব বলে, কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষ বল এতই শক্তিশালী যে, সেই টান ফাঁকি দেওয়ার উপায় নেই কারও। কৃষ্ণগহ্বর হল সর্বভুক রাক্ষস, যা সবই গিলে ফেলতে পারে। এমনকি আলোও। সেখানে দুমড়ে মিলিয়ে যায় স্থান-কালও!

কিন্তু পৃথিবীর অবস্থান জানতে এই কৃষ্ণগহ্বরকে কেন কাজে লাগানো হয়? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মহাবিশ্বে কোনও কিছুই স্থির নয়, সবই চলমান। ফলে কোনও একটি নির্দিষ্ট বস্তু থেকে দূরত্ব মেপে পৃথিবীর সঠিক অবস্থান জানা সম্ভব নয়। এই কারণেই লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরে থাকা কৃষ্ণগহ্বরকে বেছে নেওয়া হয়। তার মানে এই নয়, কৃষ্ণগহ্বর নড়াচড়া করে না। কিন্তু তারা এতটাই দূরে যে, তাদের অবস্থান বদল হলেও, তা ধরা পড়তে কোটি কোটি বছর লেগে যাবে!

তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এ রকমই কোনও এক কৃষ্ণগহ্বরকে স্থির বস্তু হিসাবে ধরে নিয়ে তার নিরিখে মহাশূন্যে পৃথিবীর অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। ব্রহ্মাণ্ডের সুদূরতম প্রান্ত থেকে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কৃষ্ণগহ্বরের শব্দতরঙ্গ পৃথিবীতে পৌঁছোয়। কোনও পুকুরের মাঝখানে ঢিল ফেললে যেমন জলে তরঙ্গের জন্ম হয় আর তা ধীরে ধীরে আরও বড় আকার নিয়ে পাড়ে পৌঁছোয়, ঠিক তেমনই ব্রহ্মাণ্ডের কোথাও কোনও ঘটনা বা দুই মহাজাগতিক বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষ হলে, তার তরঙ্গও একই ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তা-ই ধরা পড়ে রেডিয়ো টেলিস্কোপে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, কৃষ্ণগহ্বর থেকে ভেসে আসা তরঙ্গ শুনতে পাওয়া না গেলে, পৃথিবীর অবস্থান সঠিক ভাবে জানা সম্ভব হবে না। তেমনটা হলে, তার প্রভাব পড়বে মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও। বন্ধ হয়ে যেতে পারে ইন্টারনেট। বিচ্ছিন্ন হতে পারে কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে সংযোগও। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রনেতাদের আরও সচেতন হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের পরামর্শ, যে সব জায়গায় রেডিয়ো টেলিস্কোপ রয়েছে, তার আশপাশে যাতে জনবসতি না গড়ে ওঠে। আশপাশের এলাকায় মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার কমাতে পারলেই এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব।

GPS Satellite black hole
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy