Advertisement
E-Paper

দূষণ রোধের শর্তের জেরে বন্ধ বহু ইটভাটা

পরিবেশ দূষণ রোধের শর্তাবলী মানতে না পারায় বন্ধ হতে বসেছে রাজ্যের অধিকাংশ ইটভাটা। তার জেরে কয়েক লক্ষ শ্রমিকের কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৩৫

পরিবেশ দূষণ রোধের শর্তাবলী মানতে না পারায় বন্ধ হতে বসেছে রাজ্যের অধিকাংশ ইটভাটা। তার জেরে কয়েক লক্ষ শ্রমিকের কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইটভাটা চালাতে হলে পরিবেশ সংক্রান্ত ১৭ দফা শর্ত মানতে হবে, গত ২৯ মে এই নির্দেশ জারি করে রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। যে ভাটাগুলি নির্দেশ মানছে না, সেগুলি বন্ধ করার নির্দেশও জারি করা হয়। ভাটামালিকদের একাংশ পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। গত ১০ অক্টোবর পূর্বাঞ্চলীয় পরিবেশ আদালত সরকারি নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে বলে, নির্দেশ না মানলে ইটভাটা চালু করার অনুমতি মিলবে না।

ওই রায়ের জেরে রাজ্যের প্রায় ১০ হাজার ইটভাটার অধিকাংশ এখনও চালু হয়নি। ভাটার মরসুম শুরু হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি। কাজ পুরোদমে চালু হয়ে যায় নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। কিন্তু এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হতে চললেও অধিকাংশ ভাটাতে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়নি।

কেন সরকারি নির্দেশ মানতে সমস্যা হচ্ছে ইটভাটাগুলির? বেঙ্গল ব্রিক ফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তমকুমার রায় বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের জারি করা নির্দেশের বেশির ভাগ শর্ত আমরা মানতে রাজি আছি। কিন্তু কিছু শর্ত শিথিল করতেই হবে।’’

কী কী শর্ত শিথিলের দাবি করছেন ভাটামালিকরা? সরকারি নির্দেশে রয়েছে, ইটভাটা যেখানে হবে, তার এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও হাসপাতাল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্কুল থাকবে না। নদী বা নদীর খাল থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে ইটভাটা করা যাবে না। দু’টি ভাটার মধ্যে ব্যবধান রাখতে হবে অন্তত ১ কিলোমিটার। ভাটামালিকদের বক্তব্য, এই শর্তগুলি মানতে হলে তাঁদের অন্তত তিন বছর সময় দিতে হবে। তাঁরা পরিবেশ আদালতে এই আর্জি করবেন।

রাজ্যে মোট ইটভাটা রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। শ্রমিকের সংখ্যা অন্তত ৩০ লক্ষ। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই ভাটাগুলিতে ইট তৈরি শুরু হয়, নভেম্বরের গোড়ায় পুরোদমে কাজ চালু হলে সব শ্রমিক কাজে লেগে যান। এ বছর অধিকাংশ ভাটায় কাজ শুরু না হওয়ায় কাজ পাচ্ছেন না শ্রমিকেরা। এ ব্যাপারে সরকারকেই দূষছেন শ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বেআইনি ভাবে ভাটাগুলি চলছে। সরকার যদি কড়া হাতে প্রথম থেকে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করত, তা হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হত না।

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে পরিবেশ আদালত একটি মামলার রায়ে জানায়, রাজ্য জুড়ে পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে বহু ইটভাটা চলছে। কেন এই বেআইনি ভাটাগুলিকে ২ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় পরিবেশ আদালত। এই রায়ের পরে ভাটাগুলি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিভিন্ন জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর।

ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পরিবেশ আদালতে পাল্টা মামলা করেন কয়েক জন ভাটামালিক। তারই রায়ে গত ১০ অক্টোবর পরিবেশ আদালত আবার জানায়, অধিকাংশ ভাটা চলছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র না নিয়ে। তাদের জরিমানা করার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই সঙ্গে, প্রতিটি ভাটাকে রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের জারি-করা নির্দেশ মানতে হবে বলেও জানিয়ে দেয়। বুধবার ভাটা মালিকেরা জানান, জরিমানা দিতে তাঁরা রাজি, অধিকাংশ শর্ত মানতেও রাজি। কিন্তু কিছু শর্ত যাতে শিথিল করা হয়, তার জন্য আদালতে আবেদনের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাবেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy