বড় হয়ে কী হতে চাও? এ প্রশ্নের অনেকেই আমরা একগাল হেসে বলতাম পাইলট। বড় হতে হতে হারিয়ে যেত সেই তবে স্বপ্ন। তবে, বিহারের ভাবনা কান্ত কিন্তু হারিয়ে যেতে দেননি তাঁর স্বপ্ন। ভারতের প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট হয়ে ইতিহাস হতে চলেছেন ভাবনা। হেকিমপেট বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ট্রিনিংরত ভাবনার স্বপ্ন সফল হতে চলেছে ১৮ জুন, ২০১৬। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন দুই মহিলা সহকারী মোহনা সিংহ ও অবনী চতুর্বেদী।
বর্তমানে উত্তর প্রদেশের মথুরায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে কর্মরত ভাবনার বাবা তেজ নারায়ন কান্ত। ইন্টারমি়ডিয়ট পরীক্ষার পর তিনিও সুযোগ পেয়েছিলেন বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার। কিন্তু বাধ সেধেছিলেন তাঁর বাবা। আজ এতদিন পর সেই সুপ্ত স্বপ্নই পূরণ করতে চলেছে তাঁর মেয়ে।
১৯৯২ সালের ১ ডিসেম্বর জন্ম ভাবনার। পড়াশোনা বিহারের বেগুসরাইয়ের বিআর ডিএভি স্কুলে। ছোট থেকেই খো-খো, ব্যাডমিন্টন খেলতেন তিনি। ক্লাস টেনের পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে মেধা অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। রাজস্থানের কোটা থেকে ইন্টারমিডিয়ট শেষ করার পর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হবেন ভেবেছিলেন ভাবনা। তবে মহিলাদের জন্য এনডিএ-তে ভর্তি হওয়ার অনুমতি না থাকায় বেঙ্গালুরুর বিএমএস ইঞ্জিনিয়রিং কলেজে মেডিক্যাল ইলেকট্রকিসে ভর্তি হন তিনি। কলেজে পড়ার সময় মডেলিংও শুরু করেন ভাবনা। বেশ কিছু অ্যাড ফিল্মে কাজ করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে চাকরি পান টিসিএসে।
তবে ভবিষ্যত্ যেন তাঁর জন্য পরিকল্পনা করেই রেখেছিল। শর্ট সার্ভিস কমিশন এগ্জামিনেশন দিয়ে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের জন্য কোয়ালিফাই করেন ভাবনা। শুধু নিজের স্বপ্নের পিছনেই ছোটেননি তিনি। অনুপ্রাণিত করেছেন বোন তনুজাকে, ভাই নীলাম্বরকেও। পুণের ডিওয়াই পাতিল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী তনুজা স্বপ্ন দেখেন ইন্ডিয়ান নেভিতে যোগ দেওয়ার। দিদির মতোই ফাইটার প্লেন চালানোর স্বপ্ন দেহরাদূনের ইউআইটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র নীলাম্বরের।
বায়ুসেনা শর্ত দিয়েছে, অন্তত আগামী চার বছর মা হতে পারবেন না ভাবনা। আর বাবা, মা কী বলছেন? জানালেন, ‘‘এখন তো মেয়েরা বেশ দেরিতেই বিয়ে করছেন। আমার মেয়ে নিজের কেরিয়ার তৈরি করছে। ইতিহাস রচনা করতে চলেছে। এখনই ওর বিয়ের কথা ভাবতে চাই না আমরা।’’
আরও পড়ুন: প্রেগন্যান্সিতে এড়িয়ে চলুন এই তিন ফল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy