প্রসূতি ও শিশুদের জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মসূচি রয়েছে কেন্দ্রের। স্বাস্থ্যপ্রকল্প রয়েছে প্রবীণদের, কিশোর-কিশোরীদের জন্যও। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যনীতির উপদেষ্টাদের একাংশ অভিযোগ তুলছিলেন, জনসংখ্যার একটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্বাস্থ্যপ্রকল্পের বাইরে থেকে গিয়েছে। এঁরা হলেন চল্লিশে পা দেওয়া এবং চল্লিশোর্ধ্ব মহিলারা। যাঁরা ঋতুবন্ধ বা ‘মেনোপজ’-এর কাছাকাছি চলে এসেছেন।
মহিলাদের এই অংশের জন্য নতুন স্বাস্থ্য কর্মসূচি নিতে চলেছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে তাদের অন্যতম সহযোগী হয়ে কাজ করবে জাতীয় স্তরে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেনোপজ সোসাইটি।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব প্রীতি সুদনের কথায়, ‘‘চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাদের স্ক্রিনিংয়ের জন্য মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে জেলা হাসপাতাল এমনকী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ক্লিনিক হবে। যোগ শিবিরও করা হবে। যেখানে শুধু চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাদের শরীর ও মন ঠিক রাখতে যোগব্যায়াম শেখানো হবে নিখরচায়। এর দায়িত্ব নিচ্ছে আয়ুষ মন্ত্রক।’’ আয়ুষের যুগ্মসচিব পি এন রঞ্জিত কুমারের কথায়, ‘‘চল্লিশ বা চল্লিশ পার করা মহিলারা মহিলারা যেমন এক-একটি পরিবারকে ধরে রাখেন তেমনই কর্মক্ষেত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে দেশের প্রশাসন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এঁদের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়া মানে পরিবার ও দেশ দু’জনেরই ক্ষতি।’’
ভারতীয় মহিলাদের মেনোপজের বয়স মোটামুটি ধরা হয়, সাতচল্লিশ থেকে। তখন শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন খুব কমে গিয়ে নানা সমস্যা দেখা যায়। হা়ড় ক্ষয়ে যাওয়া, বাত, ডায়াবিটিস, বেশি মোটা বা বেশি রোগা হয়ে যাওয়া, স্নায়বিক সমস্যা, হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে। সাতচল্লিশের আগেও অনেকের মেনোপজ হয়। তাঁদের শারীরিক সমস্যা আরও বাড়তে পারে। ইন্ডিয়ান মেনোপজ সোসাইটির তরফে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রত্নাবলী চক্রবর্তী ব্যাখ্যা করেন— ‘‘চল্লিশ থেকেই মহিলাদের স্ক্রিনিং শুরু হলে কার কী সমস্যা রয়েছে এবং মেনোপজের পর কোনটা বাড়তে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়া যাবে এবং আগেভাগে চিকিৎসা শুরু করা যাবে। এই সময় কী খাওয়া উচিত, কোন ব্যায়াম করা উচিত সেই পরামর্শ মহিলারা পাবেন।’’
গত ২২ নভেম্বর মেনোপজের দিকে এগিয়ে যাওয়া মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যপ্রকল্প চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েছিল মেনোপজ সোসাইটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব (আরসিএইচ) বন্দনা গুরনানি সোসাইটির সদস্যদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেন ২৯ নভেম্বর। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy