চলছে নমাজ পাঠ। নিজস্ব চিত্র।
শুরু হয়েছিল মাত্র জনা তিরিশেক মহিলাদের নিয়ে। দশ বছর পরে সেই সংখ্যা বাড়তে বাড়তে একশ ছাড়িয়ে এ বার একশ দশ!
২০০৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বীরভূমের মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার মসজিদে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে ইদের নমাজে অংশগ্রহণ করে এলাকার মহিলাদের বাড়ির বাইরে নমাজ পড়তে উৎসাহ দিয়েছিলেন পেশায় চিকিৎসক বেগম সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরী। স্বামী প্রাক্তন বিচারপতি এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীর স্ত্রী সংঘমিত্রা ২০১৪ সালে বর্ধমান জেলা থেকে তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। স্বামী মন্ত্রী থাকাকালীন কিংবা নিজে সাংসদ হওয়ার পরেও তিনি এখনও মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার মসজিদে প্রতিবেশী মহিলাদের সঙ্গে নমাজ পড়েন। সংখ্যায় পুরুষদের থেকে কম হলেও বাড়ির বাইরে গিয়ে নমাজ পরার সংখ্যাটা কিন্তু বাড়ছে। প্রথমবার মসজিদ চত্ত্বরে মহিলাদের জন্য নমাজের আলাদা জায়গা হয়েছিল। এবারও সেই জায়গায় নমাজে যোগ দিল মহিলারা। তখন সংখ্যাটা ছিল হাতে গোনা। এবার উপস্থিতি শতাধিক।
দেখে খুশি সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে পড়শি আত্মীয় মহিলাদের সঙ্গে নমাজ শেষে নিজের গোদামপাড়ার বাড়িতে বসে বললেন, ‘‘ইদ হচ্ছে খুশির ও মিলনের উৎসব। চিরকাল মহিলারা উৎসবের দিন বাড়ির এবং প্রতিবেশিদের জন্য ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে সেটা মেনে নিতে পারিনি। প্রথম দিকে অল্প সাড়া পেয়েছিলাম। পরে তা বৃদ্ধি পেয়েছে।’’
দশ বছর ধরে মহিলাদের পৃথক নমাজে যোগ দিচ্ছেন বোলপুরের বধূ কোহিনুর বেগম। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘শ্বশুর বাড়িতে মহিলাদের বাড়ির বাইরে গিয়ে নমাজ পড়তে দেওয়া হয় না। সেই জন্য যখন থেকে বাপের বাড়িতে মহিলাদের একাংশ বাড়ির বাইরে মসজিদ চত্বরে নমাজে যোগ দিচ্ছে জানতে পারি তখন থেকেই আমি ইদের নমাজে মাড়গ্রামে চলে আসি।” কোহিনুর বেগমের মতো মাড় গ্রামের গোদামপাড়ার নুরজাহান বিবি, কেনিজা বেগম রাও মহিলাদের পৃথক নমাজে যোগদান করে আসছেন। তাঁরা জানালেন, তাঁরা নমাজে যোগদান করেন, তাতে কারও আপত্তি করার কোনও কারণ নেই।
বৃহস্পতিবার মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার মসজিদে ইদের নমাজ পড়ান মসজিদের ইমাম গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘‘আজকাল মহিলারাও অনেকে মসজিদে, আলাদা করে বাড়ির বাইরে এসে নমাজে যোগ দান করছেন। এখানেও তাই হচ্ছে। এতে আপত্তির কী আছে।’’ প্রাক্তন বিচারপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘মহিলারা দিনের পর দিন নমাজে যোগদান করতে বাড়ির বাইরে আসছেন এটা ভালো লক্ষণ। আরও বেশি বেশি সচেতনতা বাড়ালে মহিলাদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy