Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেয়েদের কাছে ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক’ নিজেদের ঘরই! বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট

২০১৭ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে অন্তত ৮৭ হাজার মহিলাকে এই বছরে মেরে ফেলা হয়েছে নানা কারণে। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি (৫০ হাজার) মহিলা নিজের সঙ্গী (স্বামী বা প্রেমিক) অথবা নিকটাত্মীয়ের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। 

জনের হাতে প্রাণ গিয়েছে ২০ হাজার মহিলার। প্রতীকী ছবি।

জনের হাতে প্রাণ গিয়েছে ২০ হাজার মহিলার। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ভিয়েনা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

নিরাপদ নয় নিজের ঘরই।

বিশ্ব জুড়ে পরিবার অথবা নিজের সঙ্গীর হাতে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১৩৭ জন করে মহিলা খুন হন— রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম’ এই তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, ‘এটা থেকে স্পষ্ট, ঘরেই মহিলাদের খুন হওয়ার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি।’ ২০১৭ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে অন্তত ৮৭ হাজার মহিলাকে এই বছরে মেরে ফেলা হয়েছে নানা কারণে। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি (৫০ হাজার) মহিলা নিজের সঙ্গী (স্বামী বা প্রেমিক) অথবা নিকটাত্মীয়ের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন।

এই ৫০ হাজারের মধ্যে ৩০ হাজার মহিলাকে মরতে হয়েছে সঙ্গীর হাতে। আর স্বজনের হাতে প্রাণ গিয়েছে ২০ হাজার মহিলার। যার অর্থ প্রতি ঘণ্টায় অত্যন্ত পরিচিত কারও হাতে খুন হতে হচ্ছে অন্তত ছ’জন মহিলাকে। সরকারি সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০১৭ সালের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে।

মহিলা ও মেয়েদের লিঙ্গ সংক্রান্ত খুন অর্থাৎ ‘ফেমিসাইড’ সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করার সময়ে ব্রিটেনের একটি খবরের সাইটও এ বছরের ১ অক্টোবর দিনটিকে ধরে সারা বিশ্বে সমীক্ষা করে। খবরের কাগজ, রেডিয়ো, টিভি, অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য জোগাড় করে তারা। তাতে দেখা যায়, ৪৭ জন মহিলা খুন হয়েছেন শুধু ওই একটি দিনে। বিশ্বের ২১ দেশে লিঙ্গ সংক্রান্ত কারণে এই হত্যার ঘটনাগুলি ঘটেছে বলে আপাত ভাবে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বেশ কিছু খুনের ঘটনা এখনও তদন্তসাপেক্ষ।

এমন বেশ কিছু হত্যার কথা তুলে ধরেছে ব্রিটেনের সাইটটি। ১ অক্টোবর কেনিয়ার তরুণী জুডিথ চেসাং চাষ করতে খেতের দিকে গিয়েছিলেন। তিন সন্তানের মা জুডিথ সদ্য স্বামীকে ছেড়ে চলে এসেছিলেন বাবা-মায়ের গ্রামে। সে দিনই হঠাৎ খেতে হাজির হয়ে স্বামী খুন করে জুডিথকে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা বদলা নিতে আবার সেই স্বামীকে মেরে ফেলেন। স্বজনের হাতে মহিলাদের খুন হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি আমেরিকা ও আফ্রিকায়, বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট।

তবে ২০১৭ সালে পরিবার বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর হাতে মহিলাদের খুন হওয়ার ঘটনা সব চেয়ে বেশি ঘটেছে এশিয়ায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, মোট ২০ হাজার। এই সূত্রে ব্রিটেনের সাইট জানিয়েছে, নেহা চৌধুরি নামে বছর ১৮-র একটি মেয়ের কথা, যাঁকে ১৮ তম জন্মদিনেই পরিবারের তথাকথিত সম্মান রক্ষার্থে পরিবার খুন করে বলে সন্দেহ। পরিবার সে অভিযোগ মানতে নারাজ। সাইটে দাবি, সম্মান রক্ষার্থে এই ধরনের হত্যার ঘটনা সব সময় নজরে আসে না কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নথিভুক্ত হয় না।

এর পরে ইরান, ব্রাজিল, ফ্রান্সেরও বেশ কয়েক জন মহিলার কথা বলা রয়েছে সাইটে যাঁরা পরিবার বা সঙ্গীর হাতে খুন হয়েছেন।

মহিলাদের উপরে হিংসা রোখার আন্তর্জাতিক দিবস ছিল গত কাল। রাষ্ট্রপুঞ্জ কালই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে। ‘অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম’-এর প্রধান ইউরি ফেদোতোভ বলেছেন, ‘‘এখনও লিঙ্গ-বৈষম্যের নিদারুণ মূল্য দিতে হচ্ছে মহিলাদের।’’ মহিলাদের উপরে হিংসা রুখতে বেশ কয়েকটি পরামর্শের পরে ‘অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম’ বলেছে, এ সমস্যার সমাধানে পুরুষদেরও শামিল করতে হবে, শৈশব থেকে এ বিষয়ে সচেতন করা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

United Nations UN Femicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE