Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
East Bengal

কলকাতাকে লাল-হলুদে রাঙিয়ে, সেই কুমারটুলি থেকে শুরু হল ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপন

১০০ বছর নেহাত কম সময় নয়। ১০০ বছর ধরে পথচলাও খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। ইস্টবেঙ্গলকেও পেরোতে হয়েছে অনেক চড়াই-উতরাই।

কুমোরটুলি পার্কে প্রদীপ জ্বালিয়ে শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু। ছবি: ইস্টবেঙ্গলের ফ্যান ক্লাব রিয়েল পাওয়ারের সৌজন্যে।

কুমোরটুলি পার্কে প্রদীপ জ্বালিয়ে শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু। ছবি: ইস্টবেঙ্গলের ফ্যান ক্লাব রিয়েল পাওয়ারের সৌজন্যে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ১৭:৫৯
Share: Save:

শহরের গলি থেকে রাজপথের রং আজ শুধুই লাল-হলুদ। যে দিকেই দৃষ্টি যাবে, সে দিকেই উজ্জ্বল শুধু লাল আর হলুদ রং। ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষের ঢাকে কাঠি পড়ে গেল যে আজ থেকেই।

১০০ বছর নেহাত কম সময় নয়। ১০০ বছর ধরে পথচলাও খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। ইস্টবেঙ্গলকেও পেরোতে হয়েছে অনেক চড়াই-উতরাই। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষে শতবর্ষ পূর্ণ করতে চলেছে ময়দানের অন্যতম বটবৃক্ষ ক্লাব। সমর্থকদের কাছে এ তো পরম গর্বের ব্যাপার। আবেগ, শ্রদ্ধা, ভালবাসা— সব মিলে মিশে আজ একাকার। কখনও বৃষ্টি, কখনও রোদ্দুরেও ভাঁটা পড়েনি সমর্থকদের আবেগ। গান-শঙ্খধ্বনি-ঢাকের বাদ্যিতে আকাশ বাতাস মুখরিত ছিল।

এ যেন সব অর্থেই এক উৎসব। ইরান থেকে বহু দিন আগেই ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার মজিদ বাসকর বলেছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে পুজোর মতোই মেতে উঠবে কলকাতা।’’ পুজোর কলকাতা মজিদ দেখেছেন তাঁর ফুটবলজীবনে। কল্প চোখে ইরানে বসেই তিনি দেখেছেন, ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানেও কলকাতায় পুজোর মেজাজই দেখা যাবে।

আরও পড়ুন: শতবর্ষে সেরা অধিনায়কের সম্মান সুধীরকে

ভুল কিছু বলেননি ইস্টবেঙ্গলে শতাব্দীর সেরা বিদেশি। আজ যদি তিনি শহরের রাজপথের চেহারা দেখতেন, তা হলে কী বলতেন জানা নেই। তবে রবিবারের সকাল থেকে দুপুরে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ঢল দেখল শহর। কেউ বাইকে চড়ে, হাতে পতাকা নিয়ে উত্তর কলকাতার কুমোরটুলি পার্ক থেকে ময়দানের ক্লাবে পৌঁছন। কেউ আবার ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চেপে ঘুরলেন শহরের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তেই এ দিন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা মিছিল বের করেন।

রবিবার সকাল ন’ টায় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র চৌধুরীর কুমোরটুলির বাড়ির সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। এই কুমোরটুলি থেকেই তো এক দিন পথচলা শুরু হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। কুমোরটুলি পার্কেই তৈরি করা হয়েছিল মঞ্চ। সেখানেই গর্বের মশাল জ্বালানো হয়। ক্লাব-কর্তারা তো হাজির ছিলেনই। সুরেশ চৌধুরীর নাতি অমরেশ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। লন্ডন থেকে চলে এসেছেন অমরেশবাবুর মেয়ে সঞ্জনাও। শতবর্ষের সেরা আবিষ্কার ভাইচুং ভুটিয়া, প্রাক্তন ফুটবলার সুকুমার সমাজপতি, সত্যজিৎ মিত্র, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, এমনকি মোহনবাগানের আইকন গোষ্ঠ পালের ছেলে নীরাংশু পালও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। ভাইচুং বলেন, “১৭ বছর বয়সেই আমি ইস্টবেঙ্গলের জার্সি চাপিয়ে খেলতে নামি। লাল-হলুদ জার্সি পরে খেলেই আমি গোটা দেশে পরিচিতি পাই।’’

শতবর্ষের উদযাপন শুরু।

কুমোরটুলি পার্ক থেকে সেই শোভাযাত্রা হাতিবাগান, কলেজ স্ট্রিট, ওয়েলিংটন হয়ে পৌঁছয় ক্লাবে। লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর মুখেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল গেট। সেখান থেকে ক্লাবের দিকে এগোলেই রাস্তার ধারে লেখা রয়েছে স্লোগান, ছিন্নমূল বাঙালির আকাশ ছোঁয়ার স্পর্ধা। সমর্থকদের মুখে স্লোগান, ‘‘আমরাই ইস্টবেঙ্গল।’’ কারও পরনের লাল-হলুদ জার্সির বুকে লেখা, ‘শ্রদ্ধার শতবর্ষ’। আবার কারও জার্সির পিছনে লেখা, ‘গর্বের শতবর্ষ।’’

আরও পড়ুন: স্মৃতিমগ্ম কৌস্তভ, মনজিৎ

ক্লাব-তাঁবুতে ভিড়ের ঢল। ক্লাবের লনে রাখা মশালের সামনে সমথর্কদের সেলফি নেওয়ার ভিড়। প্রিয় ক্লাবের জয় দেখার পরে এই মশালই তো জ্বলে ওঠে গ্যালারিতে। এ দিনের মশাল র‌্যালির মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গেল শতবর্ষ উদযাপন। ময়দানে এখন সব অর্থেই উৎসবের মেজাজ। কর্তারা দু’ বছর ধরে অনুষ্ঠান করবেন। উৎসবের মেজাজেই সমর্থকদের ক্লাবের কাছে আশা-আকাঙ্খা, আই লিগ জয়ই হোক লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East Bengal East Bengal Centenary Centenary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE