Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
শেষ বিকল্প সুপার ওভার

বৃষ্টি থেমে গেলেও আজ খলনায়ক হতে পারে ইডেনের আউটফিল্ড

প্লে-অফ পণ্ড হয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ইডেনে গিয়ে যে তিন সম্ভাবনার খোঁজ পাওয়া গেল ইডেন কিউরেটরের কাছে। শুধু তাই নয়, সন্ধান পাওয়া গেল এমন এক ক্রিকেটীয় খলনায়কের, শহরের বৃষ্টিকে বাদ দিলে কেকেআরের ইডেন থেকে সোজাসুজি ফাইনালের মঞ্চে পদার্পণের পথে যা দ্বিতীয় বৃহত্‌ কাঁটা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নন। ডেভিড মিলার নন। বীরেন্দ্র সহবাগ নন। ইডেন পিচও নয়।

ছবি শঙ্কর নাগ দাস।

ছবি শঙ্কর নাগ দাস।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় ও প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৪ ০৩:০৯
Share: Save:

সম্ভাবনা এক: মঙ্গলবার রাতে আর বৃষ্টি হল না, বুধবার কোনও সময়ই নয়। আকাশ পরিষ্কার হয়ে চড়া রোদ উঠল। কেকেআর বনাম কিংস ইলেভেন প্লে-অফ যুদ্ধ সেক্ষেত্রে সম্ভবত হবে। নিশ্চিন্তে বিকেল চারটের ইডেনে তখন হয়তো ঢুকতে পারবেন।

Advertisement

সম্ভাবনা দুই: আর বৃষ্টি হল না। কিন্তু আকাশ পরিষ্কার হয়ে রোদও উঠল না। ইডেন আসার ঝুঁকি সম্পূর্ণ আপনার। কারণ ম্যাচ তখন না-ও হতে পারে!

সম্ভাবনা তিন: মঙ্গলবার রাত থেকে ফের বৃষ্টি চালু হল। বুধবারও যেটা চলল। রোদের চিহ্নমাত্র থাকল না। ইডেনে কেকেআরের প্লে-অফ যুদ্ধ উপভোগের আশা তখন ছেড়ে দিতে পারেন। আরও কয়েক দফা বৃষ্টি মানে, ম্যাচের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ভিত্তিতে যে সম্ভাবনা সবচেয়ে এগিয়ে।

প্লে-অফ পণ্ড হয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ইডেনে গিয়ে যে তিন সম্ভাবনার খোঁজ পাওয়া গেল ইডেন কিউরেটরের কাছে। শুধু তাই নয়, সন্ধান পাওয়া গেল এমন এক ক্রিকেটীয় খলনায়কের, শহরের বৃষ্টিকে বাদ দিলে কেকেআরের ইডেন থেকে সোজাসুজি ফাইনালের মঞ্চে পদার্পণের পথে যা দ্বিতীয় বৃহত্‌ কাঁটা।

Advertisement

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নন। ডেভিড মিলার নন। বীরেন্দ্র সহবাগ নন। ইডেন পিচও নয়।

ইডেন আউটফিল্ড!

শহরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এখনও পশ্চিমবঙ্গে ঢোকেনি। যা বুধ দুপুরের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যাওয়ার কথা। সেটা হলে বুধ সকালেও এ দিনের মতো বৃষ্টি হওয়া যেমন সম্ভব, তেমনই নাকি সম্ভব পরের দিকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সেটা হলেও বিকেল চারটে থেকে পিছিয়ে যাওয়া প্লে-অফ শুরু করা সম্ভব হবে কি না?

শোনা গেল, পিচ নিয়ে নাকি কোনও সমস্যা নেই। বোলিং রান-আপ নিয়েও নেই। সমস্যা শুধু ইডেন আউটফিল্ড নিয়ে। গত দু’দিন ধরে যে আউটফিল্ড ঢেকে রাখা হয়েছে কভারে। ইডেন কিউরেটর প্রবীরবাবু বলছিলেন, নাগাড়ে কভার-চাপা থাকায় ইডেন আউটফিল্ডে একটা স্যাঁতস্যাঁতে, ভ্যাপসা ব্যাপার এসেছে। মাটি নরম হয়ে আছে। কভার সরানো সম্ভব না হলে সেই ভেজা ভাব শুকনোর সম্ভাবনা কম। আর শুধু কভার সরিয়ে দিলেই চলবে না। হয় টানা চার-পাঁচ ঘণ্টা চড়া রোদ লাগবে। নইলে ঝোড়ো হাওয়া লাগবে। সেটাও সম্ভব না হলে আবহাওয়ার আর্দ্রতা কমতে হবে। এই তিনটের মধ্যে একটা হলেও বুধবার ম্যাচ করা হয়তো সম্ভব। কিন্তু শুধু বৃষ্টি থামল আর আকাশ একই রকম মেঘলা থাকল, হাওয়াও দিল না, সেক্ষেত্রে মুশকিল। আরও বলা হল, মঙ্গলবার যে ম্যাচ ভেস্তে গেল, তার কারণ ভেজা আউটফিল্ড। মোটেও পিচ নয়।

আবহাওয়ার উন্নতি না হলে সিএবি কী করবে? কৃত্রিম ভাবে মাঠ শুকিয়ে ফেলা সম্ভব? সিএবি ইতিহাসে হেলিকপ্টার দিয়ে মাঠ শোকানোর দৃষ্টান্ত আছে। কিন্তু একটা প্লে-অফ নিয়ে তেমন কিছু সিএবি ভাবছে বলে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত খবর নেই। বলা হচ্ছে, যদি শুকোয়, প্রকৃতির নিয়মেই শুকোবে। না হলে কিছু করার নেই। কিন্তু দু’বছর আগে এই ইডেনেই দিল্লি ডেয়ারডেভিলস বনাম কেকেআর বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ শুরু হয়েছিল রাত সাড়ে এগারোটায়। ম্যাচ হয়েছিল বারো ওভারের। সে দিন ম্যাচ করা সম্ভব হলে আজ হল না কেন? মাঠকর্মীদের বক্তব্য, দু’বছর আগেরটা কালবৈশাখী ছিল। এটা নিম্নচাপ।

কেকেআর দুপুর তিনটেতেই জেনে গিয়েছিল, ম্যাচ হওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ কভারের তলায় মাঠে গোড়ালি-সমান জল দাঁড়িয়ে। বিকেল চারটে নাগাদ কেকেআর মহাকর্তা সিএবির এক উচ্চপদস্থ কর্তাকে ফোন করে জানতে চান, আদৌ কিছু সম্ভব কি না। তখনই মোটামুটি বোঝা যাচ্ছিল, সম্ভব হবে না। কারণ ভোর ছ’টা থেকে প্রায় একশো জন মাঠকর্মী নামিয়েও কোনও উন্নতি করা যায়নি। বরং যত বার কভার তোলার চেষ্টা হয়েছে, তত বার বৃষ্টি নেমে ব্যাক টু স্কোয়ার ওয়ান। এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ সিএবির পক্ষ থেকে ম্যাচ কমিশনার রোশন মহানামাকে বলা হয়, মাঠের অবস্থা দেখে ম্যাচ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে। তা হলে অন্তত ষাট-পঁয়ষট্টি হাজার ইডেন দর্শকের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে। আইপিএল সিওও সুন্দর রামনের সঙ্গেও কথা বলা হয়। বিকেল পাঁচটা কুড়ি নাগাদ কিউরেটরের সঙ্গে কথা বলে ম্যাচ কমিশনার সিদ্ধান্তে আসেন, ম্যাচ আজ সম্ভব নয়। যার পরপর ময়দান অঞ্চলে ঘোষণা হতে থাকে, টিকিট রেখে দিতে। ওই টিকিটেই বুধবার ম্যাচ দেখা যাবে।

এক কেকেআর কর্তা রাতে বলছিলেন, টিম নাকি চাইছিল ন্যূনতম সম্ভাবনা থাকলেও মঙ্গলবারই ম্যাচটা খেলে ফেলতে। সেটা দশ, সাত, পাঁচ যে ক’ওভারেরই হোক না কেন। কারণ বুধবারও যে ম্যাচ হবে, তারও তো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু সেই ন্যূনতম সম্ভাবনাও এ দিন ছিল না। কিং খানের আসার কথা ছিল। তাঁর জন্য টিম হোটেলে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ম্যাচ হবে না জানার পর তিনি শহরে আসা বাতিল করেন। বুধবার আসবেন কি না, এখনও ঠিক নয়। শোনা গেল, বুধবার ম্যাচের কাট-অফ টাইম রাত ন’টা দশ। যে সময় খেলা শুরু হলে একমাত্র সুপার ওভার হওয়াই সম্ভব। আর সেটাও না হলে? কেকেআরের কোনও কোনও কর্তা বললেন, “সেক্ষেত্রে ধরে নেব দু’নম্বরে ওঠার এটাই অ্যাডভান্টেজ। যে আমরা আরও একটা ম্যাচ পাব। যদি চার নম্বরে থাকতাম আর এ রকম অবস্থায় পড়তাম, তা হলে তো ম্যাচ না খেলেই ছিটকে যেতে হত।”

শুধু পঞ্জাবই যা নিশ্চিন্তে আছে!

টিম হোটেলের লবিতে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরছেন পঞ্জাব মালকিন প্রীতি জিন্টা। কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আবার উদয় হলেন বান্ধবীসমেত। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থতা কাটানোর তুকতাক কি না কে জানে, দাড়িটা কামিয়ে ফেলেছেন ম্যাড ম্যাক্স। বান্ধবীর কোমর জড়িয়ে রিল্যাক্সড ভাবে চলেও গেলেন সুইমিং পুলের দিকে।

যাবেনই। প্রীতি প্রাণ খুলে আড্ডা দেবেনই। আজ ইডেনে এক বলও না পড়লে তাঁরাই ফাইনালে! কেকেআর ওয়াংখেড়েতে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.