ক্যাপ্টেনের সঙ্গে সূর্যর সেলফি
সূর্য কুমার যাদব। নামের আদ্যক্ষর নিয়ে দলে এখন তাঁর ডাক নাম ‘স্কাই’। বুধবার সন্ধ্যায় প্র্যাকটিসের পর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে যা বললেন...
প্রশ্ন: আপনার ডাকনাম তো এখন ‘স্কাই’। দলের সবাই ডাকে। ক্যাপ্টেন স্কাই বলেই ডাকে। এই নামে ডাকলে মনে হয় হয় না, আপনার কাছ থেকে সব সময় ‘স্কাই হাই’ পারফরম্যান্স চাওয়া হচ্ছে?
সূর্য: স্কাই বলে ডাকলে কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়। ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট’ বলে কথাটাই তো আছে। সত্যিই মনে হয় আমাকে যেন একেবারে আকাশে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর ক্যাপ্টেন যখন এই নামে ডাকে, তখন তো শরীরের ভিতরে মনে হয় রক্ত ফুটছে। অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ যেন এক নিমেষে অনেকটা বেড়ে যায়।
প্র: পুণের বিরুদ্ধে যে ইনিংসটা খেললেন, তার পর কি এখন নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে?
সূর্য: ইনিংসটা খেলতে পেরে ভাল লাগছে। তবে খুব ভাল লাগছে না। ম্যাচটা যদি ফিনিশ করে আসতে পারতাম, তা হলে হয়তো খুব ভাল লাগত। সেটা করতে পারিনি। তবে দলের জয়ে আমার অবদান ছিল, এটা ভাল ব্যাপার।
প্র: এ বার নিজের ঘরের মাঠে ম্যাচ। নিজের শহরের দলের বিরুদ্ধে। এটা কি বাড়তি চাপের মনে হচ্ছে?
সূর্য: চাপ ঠিক বলব না। হোম গ্রাউন্ডে চাপের চেয়ে দায়িত্বটা বেশি থাকে। চাপ তো সবসময়ই থাকে। চাপ নিতে নিতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আসল খেলাটা তো চাপের মুখেই বেরিয়ে আসে। কালকের ম্যাচে যেটা হবে, এই চাপের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে একটা বাড়তি দায়িত্ববোধ কাজ করবে।
প্র: ক্রিকেটের বাইরে আপনি বেশ একটা গতিময় জীবন যাপন করেন। যখন তখন নিজের গাড়ি বা বাইক নিয়ে এখানে ওখানে বেরিয়ে পড়েন। আপনার ক্যাপ্টেনও আপনার এই গুণের কথা তাঁর নিজের কলামে লিখেছেন।
সূর্য: দেখুন একজন ক্রিকেটার মাঠে কী করে, সে ডিসিপ্ললিনড কি না, এগুলোই সকলের বিবেচনার বিষয় হওয়া উচিত। একজন ক্রিকেটারের মাঠের বাইরের লাইফস্টাইল জেনে কার কী হবে বলুন তো?
প্র: না, গৌতম এটা আপনার সমালোচনা করার জন্য লেখেননি।
সূর্য: জানি, ও কী লিখেছে। শুনেছি। আমার কিন্তু ক্রিকেটের বাইরের এই লাইফস্টাইলটা ক্রিকেটের জন্যই।
প্র: আর একটু যদি বুঝিয়ে বলেন। মানে এগুলো কি আপনাকে ক্রিকেটজীবনেও সাহায্য করে? আর গাড়ি, বাইক কি আপনার নেশা?
সূর্য: না গাড়ি, বাইক কোনওটাই আমার নেশা নয়। তবে এই গাড়ি নিয়ে বা বাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে যাওয়াটা কিন্তু আমার নেশা। লম্বা সিজনের পর ধরুন ক্রিকেট থেকে একটু ছুটি পেলাম, তখন আমি বন্ধুদের সঙ্গে এ ভাবে ঘুরতে বেরিয়ে যাই। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে কোনও পাহাড়ি অঞ্চলে চলে যাই। এ রকম জায়গায় কয়েকটা দিন কাটিয়ে এসে যখন ক্রিকেট মাঠে ফিরি, তখন নিজেকে চার্জড লাগে। কিন্তু এর জন্য কখনও ক্রিকেটে ফাঁকি দিই না। দুটো জীবনই উপভোগ করি।
প্র: কোন পাহাড়ি জায়গা পছন্দ?
সূর্য: কাছেপিঠের মধ্যে তো অ্যাম্বি ভ্যালি আছে। ওখানেই যাই মাঝে মধ্যে।
প্র: মুম্বইয়ের মাঠে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নামলে কি কোনও বাড়তি মোটিভেশন কাজ করে? মুম্বইয়ের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ?
সূর্য: না, তা থাকবে কেন? নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা সবসময়ই করি। কিন্তু সেটা মুম্বইয়ের কাছে নয়, সারা দুনিয়ার কাছে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আমার কোনও রাগ বা অভিমান নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে তো আমার টিম এখনও মুম্বই। তা ছাড়া মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জন্যই কেকেআরে আসতে পেরেছি। আইপিএলে আমার বেড়ে ওঠা তো মুম্বই ইন্ডিয়ান্সেই। নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশিরভাগ কাজই করেছি ওখানে থাকতেই। শেষ বছরে।
প্র: গতকাল রাতে ডিনার পার্টিতে শাহরুখ খানের সঙ্গে কী কথা হল?
সূর্য: অনেক কথা হয়েছে। উনি খুব ভাল মোটিভেট করতে পারেন। আমাকেও করলেন। উনি নিজে না থাকলেও আমাদের প্রায়ই বিভিন্ন ভিডিও পাঠিয়ে দেন তাতানোর জন্য। গতকাল রাতে আমার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললেন, ‘যেমন খেলছ চালিয়ে যাও। আমি তোমার পাশে আছি।’
প্র: এটা কি স্কাই ডাকনামটার চেয়েও বেশি তাতিয়ে দেওয়ার মতো নয়?
সূর্য: অবশ্যই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy