আই লিগ ‘ডাবল’ করার স্বপ্ন নিয়ে ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়। বেঙ্গালুরু বিজয় সেরে শহরে পা দিয়ে সেই সোনালি রেখার হদিশ যেন পেয়ে গিয়েছেন মোহনবাগানের হার্টথ্রব সনি নর্ডি।
সনি-অঙ্কের হিসেব— সোনালি রেখার শেষ বিন্দু ৩৩ পয়েন্ট।
মোহনবাগানের উইঙ্গার সোমবার প্র্যাকটিসের পর বলে দিলেন, ‘‘মনে হয় এ বার আই লিগের ম্যাজিক পয়েন্ট তেত্রিশ। তাতেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়নশিপ।’’ তবে টানা দ্বিতীয় বার দেশের সেরা ফুটবল ট্রফি বাগানে সাজিয়ে রাখতে সনির প্রেসক্রিপশন, ‘‘এখনও দশটা ম্যাচ বাকি আমাদের। তার মধ্যে অন্তত সাতটা জিততেই হবে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে।’’ সঙ্গে তিনি এও বলতে ভুলছেন না, ‘‘সামনের এক মাস মোহনবাগানের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে আই লিগ আর এএফসি কাপ মিলিয়ে আমাদের আটটা ম্যাচ খেলতে হবে। জেতার পাশাপাশি যেখানে চোট-আঘাতও এড়াতে হবে আমাদের টিমকে।’’
এ মরসুমের দল তৈরি করতে নেমে বাগান কর্তারা মাথায় রেখেছিলেন, গত কয়েক বছরের একটা পরিসংখ্যান। যেটা বলছে, এএফসি কাপে অংশ নেওয়া ক্লাব কখনও আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। অতীতে ইস্টবেঙ্গল আর বেঙ্গালুরু এফসি এই সমস্যায় ভুগেছে। আই লিগ আর এএফসি টুর্নামেন্ট দেশ-বিদেশ ঘুরে গায়ে-গায়ে খেলার বাড়তি চাপ সামলাতে গিয়ে। মোহনবাগানকেও সামনের এক মাস আই লিগে খেলার পাশাপাশি গুয়াহাটি এবং চিনে গিয়ে খেলে আসতে হবে এএফসি কাপের ম্যাচ। দীর্ঘ বিমানযাত্রা আর ক্লান্তি-ফ্যাক্টর ছাড়াও মার্চ-এপ্রিলের গরমকেও মোকাবিলা করতে হবে সঞ্জয় সেনের দলকে।
সেই সমস্যা যতটা পারা যায় এড়াতে চলতি মরসুমে দলের রিজার্ভ বেঞ্চকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছেন বাগান কর্তারা। তাও স্পনসরহীন অবস্থায়। শিল্টন, লেনি, বিক্রমজিৎ, কেন লুইস, প্রবীর দাস, লালকমল ভৌমিক, বলবন্তদের মতো একঝাঁক ভাল বিকল্প হাতে থাকায় আই লিগ এবং এএফসি কাপ দু’টোকেই সমান গুরুত্ব দিতে পারছে বাগান শিবির।
আই লিগে সনি-জেজেদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ লাজং এফসি। শিলংয়ের দলের বিরুদ্ধে বাগানের ম্যাচ বুধবার বারাসতে। তার তিন দিন পরেই ওই মাঠেই সবুজ-মেরুন নামবে ওডাফার স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার বিপক্ষে। বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে এ দিন সকালে ক্লাব মাঠে অনুশীলন করেছেন কাতসুমিরা। তবে শনিবার যাঁরা পুরো নব্বই মিনিট খেলেছিলেন তাঁদের ফিজিক্যাল ট্রেনার গার্সিয়ার কাছে রিকভারি সেশন ছিল। বাকিদের নিয়ে সিচ্যুয়েশন প্র্যাকটিস করান সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। রবিবার বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে প্রয়াত আত্মীয়ের শেষকৃত্যে হাজির থাকা বাগান কোচ সঞ্জয় এ দিন প্র্যাকটিস দেখেন মাঠের বাইরে বসে।
বাড়ি ফেরার আগে তিনি বলে যান, ‘‘সামনের দু’টো ম্যাচ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গত বার ভাল অবস্থায় থাকার সময় ঘরের মাঠে লাজংয়ের সঙ্গে ড্র করেছিলাম। আর স্পোর্টিং তো এখন বেশ গুছিয়ে নিয়েছে। সুতরাং গা ঢিলে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’ সঙ্গে এও বললেন, ‘‘শুরুর দিকের ম্যাচগুলোয় গোল করেও গোল হজম করতে হচ্ছিল। তবে শেষ তিন ম্যাচে গোল খাইনি আমরা। এটা ভাল লক্ষণ। এখন দরকার পাসিং আরও উন্নতি করা।’’
এ দিকে, বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে বাগান শিবির চনমনে থাকলেও এ দিন মুখ চুন করে ঘুরছিলেন সেই ম্যাচের সেরা কেন লুইস। কারণ, পুরস্কারঅর্থ এখনও হাতে পাননি। আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর ফোনে যার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘‘মোহনবাগান থেকে এ ব্যাপারে অভিযোগ পাইনি। যদি কেন লুইস পুরস্কারঅর্থ না পেয়ে থাকে, তা হলে খবর নিচ্ছি।’’