Advertisement
E-Paper

সেরা হয়েও র‌্যান্টির অভিমান, গ্লেনের তোপে নিজের দল

গোল করলেন, ম্যাচের সেরাও হলেন। তবু একরাশ অভিমান তাঁর গলায়। এবং সেই ক্ষোভ ছড়াতে ছড়াতেই শনিবার যুবভারতী ছাড়লেন র‌্যান্টি মার্টিন্স! আবার র‌্যান্টির চ্যালেঞ্জার কর্নেল গ্লেন দলকে বাঁচিয়েও সতীর্থদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন!

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫০
বিরক্তি। শনিবারের গ্লেন।

বিরক্তি। শনিবারের গ্লেন।

গোল করলেন, ম্যাচের সেরাও হলেন। তবু একরাশ অভিমান তাঁর গলায়। এবং সেই ক্ষোভ ছড়াতে ছড়াতেই শনিবার যুবভারতী ছাড়লেন র‌্যান্টি মার্টিন্স!

আবার র‌্যান্টির চ্যালেঞ্জার কর্নেল গ্লেন দলকে বাঁচিয়েও সতীর্থদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন!

নিজের দলের মাঝমাঠের প্লেয়ারদের পারফরম্যান্সে রীতিমতো বিরক্ত বাগানের বিশ্বকাপার ফুটবলার সাফ বলে দিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ আজ আমাদের থেকে অনেক ভাল খেলেছে।’’

বিকাশ জাইরু আবার ভাইচুং ভুটিয়ার বাহবা পেয়েছেন। লাল-হলুদ কোচ, কর্তা থেকে শুরু করে সতীর্থ ফুটবলাররা তাঁর পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। যার জোরে আগামী ম্যাচগুলোয় আরও ভাল খেলার স্বপ্ন দেখছেন জাইরু।

শনিবার আই লিগ ডার্বির তিন নায়কের অভিব্যক্তি যেন তিন রকমের। অভিমান, ক্ষোভ আর উচ্ছ্বাস।

কলকাতা লিগ থেকে বাংলাদেশ সফর— র‌্যান্টিকে নিয়ে সমালোচনা চলছিলই ইস্টবেঙ্গলের অন্দরে। কর্তারাও নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের অফ ফর্ম নিয়ে একটা সময় সরব ছিলেন। যে দলে ছিলেন কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও। তাই বোধহয় নিষ্ফলা ডার্বিতে ম্যাচের সেরা হওয়ার পরেও র‌্যান্টির গলায় ছিল একরাশ অভিমান। প্রশ্ন করতেই সেটা আগ্নেয়গিরির মতো বেরিয়ে এল। ‘‘আজ আমি কোনও কথাই বলব না। আপনারাই তো আমার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন কয়েক দিন আগেও। যা আমাকে খুব দুঃখ দিয়েছিল।’’ র‌্যান্টি মনে মনে যে কতটা আঘাত পেয়েছেন তা আরও বোঝা গেল, যখন তিনি বললেন, ‘‘একটা সময় তো ক্লাবকর্তা, যাঁরা আমার সমালোচনা করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম আমি।’’

আই লিগে নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার আবার নিজের ছন্দে। তিন ম্যাচে হয়ে গেল তিন গোল। সমালোচনার জবাব দিতে বেছে নিয়েছেন দেশের সেরা টুর্নামেন্টকে। তার ডার্বিতেও গোল করার পর বলছিলেন, ‘‘জানতাম আমি কী করতে পারি! ডার্বিতে গোল আমার কাছে কোনও আলাদা অনুভূতির নয়। আমি পেশাদার। তাই নিজের কাজটুকু করেছি। করে যাবও।’’

একই কাজ করছেন কর্নেল গ্লেন-ও। এ দিনের ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে তিনিই তো সবুজ-মেরুনের মানরক্ষা করেছেন। তবে নিজে গোল পেলেও নিজের দলের খেলায় অখুশি ত্রিনিদাদ টোবাগোর বিশ্বকাপার। রাখঢাক না করে ম্যাচের পর বলে দিলেন, ‘‘আমরা প্রথমার্ধে ভাল খেলতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে বরং উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। তবে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন টিম হিসেবে এ দিন আমাদের ম্যাচটা জেতা উচিত ছিল।’’

সনি-গ্লেন জুটিকে ঘিরেই বাগান সদস্য-সমর্থকরা যতই আবার আই লিগ জয়ের স্বপ্ন দেখুন, ডার্বির পর গ্লেন অবশ্য সনিকে নিয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বাস দেখালেন না। উল্টে বলে দিলেন, ‘‘আমার আর সনির জুটি কতটা সফল হবে, তা এখনই বলতে পারছি না। বলার সময়ও আসেনি।’’

ম্যাচের পর ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা করতে লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমে এসেছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। সেখানেই বিকাশ জাইরুকে শুভেচ্ছা জানান। নিজের রাজ্য সিকিমের ফুটবলারকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বলে দিলেন, ‘‘জাইরু আজ অসাধারণ খেলেছে। আমাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ বাছতে দেওয়া হলে র‌্যান্টির সঙ্গে জাইরুকেও সেরা বাছতাম।’’ ভাইচুংয়ের প্রশংসা শুনে উজ্জীবিত জাইরুও। বললেন, ‘‘টিমকে সাফল্য এনে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। ভাইচুংয়ের মতো ফুটবলার আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, এটা বড় প্রাপ্তি।’’ শুধু ভাইচুং একা নন, র‌্যান্টি থেকে বিপক্ষ টিমের কোচ সঞ্জয় সেন— প্রত্যেকেই এ দিন জাইরুর খেলায় মুগ্ধ।

তিন পয়েন্ট না আসায় গ্লেন বিরক্ত হলেও বাগান শিবির কিন্তু এক পয়েন্ট পেয়েই খুশি। কারণ আগের দু’টো ম্যাচই তারা জিতেছিল। স্বভাবতই ডার্বির মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট খারাপ নয়, বলছেন প্রণয়-ধনচন্দ্ররা। চার ম্যাচে বাগানের পয়েন্ট এখন সাত। লিগ টপার। ডার্বি ড্রয়ের এটাই যেন সান্ত্বনা বাগানে।

লাল-হলুদ শিবিরের দাবি, ম্যাচ ড্র হলেও, নৈতিক জয় তাদেরই। র‌্যান্টির কথায়, ‘‘ভুলবেন না, ওরা চার জন বিদেশি নিয়ে খেলেছে। কিন্তু আমাদের টিমে বিদেশির সংখ্যা ছিল একটা কম।’’ বেশির ভাগ প্রাক্তন ফুটবলারও এই ম্যাচের আগে মোহনবাগানকে এগিয়ে রেখেছিলেন। সেখানে এক পয়েন্টই যেন র‌্যান্টিদের কাছে অক্সিজেন।

ranti martins cornel glen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy