পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হওয়ার পরেই নিয়েছিলেন হাতেখড়ি। জানিয়েছিলেন, তিনি গড়গড়িয়ে বাংলা বলতে এবং লিখতে শিখবেন। নামেও রয়েছে বাঙালি ছোঁয়া। সেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, যিনি রাজ্যের প্রথম নাগরিক, তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার হতে চান না। এমনটাই বলছে নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র।
রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজ চলছে। ভোটারদের নামে নামে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করা হয়েছে। ভোটারেরা সংশ্লিষ্ট ফর্মে তথ্য পূরণ করে তা ফেরত দিচ্ছেন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের নামে পশ্চিমবঙ্গে কোনও এনুমারেশন ফর্ম আসেনি। কারণ অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছে, তিনি এ রাজ্যের নাগরিক নন। কমিশনের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তা থেকে জানা যায়, কেউ রাজ্যের নাগরিক কি না! সেই তথ্য ঘেঁটেই দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার আগে থেকে তিনি কেরলের ভোটার। সেখানকার কোট্টায়াম জেলার ভোটার হয়েই থাকতে চান তিনি। এমনটাই বলছে কমিশনের সূত্র।
রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের প্রথম নাগরিক। কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল পদে যিনি বসেন, তিনি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ভোটার হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রাজভবনের তরফে কমিশনকে আবেদন জানালেই চলে। কমিশন কোনও তথ্য যাচাই করে না। আবেদন পেলেই রাজ্যপালের নাম সেই রাজ্যের ভোটার তালিকায় যুক্ত করে। পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এ রাজ্যের নাগরিক হয়েছিলেন। তিনি ভোটও দিয়েছিলেন। কিন্তু বোস রাজ্যের নাগরিক হতে চাননি, বলছে রাজভবনের সূত্র। সে কারণে তাঁর নামে কোনও এনুমারেশন ফর্মও আসেনি। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় নাম থাকলে তবেই তিনি এ রাজ্যে এনুমারেশন ফর্ম পেতেন।
আরও পড়ুন:
২০২২ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হন বোস। কেরলের কোট্টামের বাসিন্দা হলেও তাঁর পদবিতে রয়েছে বাঙালি-ছোঁয়া। কেরল, তামিলনাড়ুতে সুভাষচন্দ্র বোসের নামে নাম রাখার রেওয়াজ রয়েছে। অনেকেরই অভিমত, সে কারণে রাজ্যপালের নামেও রয়েছে বোস। তিনি নিজেও জানিয়েছিলেন, নেতাজি তাঁর ‘নায়ক’। সেই বোস রাজ্যপাল হয়েই জানিয়েছিলেন, তিনি বাংলা শিখতে চান। সেই মতো রাজভবনের ‘ইস্ট লন’-এ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সরস্বতীপুজোর দিন বসেছিল রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’র পাঠশালা। এক খুদে তাঁকে বাংলা বর্ণ লেখা শিখিয়েছিলে। তার পরেই রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘আমি বাংলা শিখব। বাংলা সুন্দর ভাষা। আমি বাংলাকে ভালবাসি। আমি বাংলার মানুষকে ভালবাসি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আমার নায়ক। জয় বাংলা, জয় হিন্দ।’’ তার পরে প্রায় তিন বছর হতে চলল। কমিশনের তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল এ রাজ্যের ভোটার নন। রাজভবনের সূত্র বলছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার হতে চাননি।