জুটি: লাল-হলুদের দুই অস্ত্র বোরখা-কোলাদো (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
রবিবাসরীয় ডার্বিতে মোহনবাগানের সনি নর্দে খেলবেন না জানার পরেও উচ্ছ্বাস নেই লাল-হলুদ শিবিরে! কী করেই বা থাকবে? ভাইচুং ভুটিয়া, আই এম বিজয়ন, চিমা ওকোরি এমনকি দো দং হিউমের মতো কেউ নেই, যিনি একাই ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন। শত্রু শিবিরে বিপর্যয়ের দিনেও তাই স্বস্তি নেই।
পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরায় ছিটকে গিয়েছেন প্রধান স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুয়েদা। রবিবারের ডার্বিতে ভরসা বলতে চলতি আই লিগে ছয় ম্যাচে চার গোল করা একা জবি জাস্টিন। ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস অবশ্য ফরোয়ার্ডে খেলাতে পারেন খাইমে সান্তোস কোলাদোকে। তিনি সদ্য যোগ দিয়েছেন। ডার্বিতেই তাঁর অভিষেকের সম্ভাবনা প্রবল। এ বার মোহনবাগান আক্রমণভাগের দিকে তাকান। দুই স্ট্রাইকার দিপান্দা ডিকা ও হেনরি কিসেক্কা দারুণ ছন্দে রয়েছেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য তৈরি আজহারউদ্দিন মল্লিক, ইউতা কিনোয়াকি এবং ওমর এলহুসেইনি।
এই পরিস্থিতিতে যা হওয়ার কথা, তাই হল শনিবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে। কালো পর্দার আড়ালে লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ সব চেয়ে বেশি জোর দিলেন রক্ষণ মজবুত করার দিকেই। অর্থাৎ, আগে ঘর সামলাও, তার পরে জয়ের কথা ভাবা যাবে। ডিকা-হেনরিদের আটকানোর মহড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ ‘বি’ দলের প্রাক্তন কোচ কখনও বোরখা গোমেস পেরেসের সঙ্গে খেলালেন সালামরঞ্জন সিংহকে। কখনও আবার জনি আকোস্তাকে। আবার দেখা গেল দুই স্টপার, বোরখা ও সালামরঞ্জনের সামনে ডিফেন্সিভ স্ক্রিন হিসেবে ব্যবহার করলেন কোস্টা রিকার হয়ে দু’টো বিশ্বকাপ খেলা আকোস্তাকে। তাঁদের টপকে গোল করার মহড়া দিলেন খাইমে ও জবি।
আরও পড়ুন: হঠাৎ তারকা হারিয়ে এখন দুই কোচের নজরেই রক্ষণ
সাংবাদিক বৈঠকে ইস্টবেঙ্গল কোচ খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘মোহনবাগানের আক্রমণভাগ দারুণ শক্তিশালী। আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।’’ কিন্তু চোট পেয়ে সনি ছিটকে গিয়েছেন। দলে যোগ দিয়েছেন খাইমে। তা হলে তো অ্যাডভ্যান্টেজ ইস্টবেঙ্গল? মেনেন্দেস বলছেন, ‘‘যে নেই তাকে নিয়ে চিন্তিত নই। যারা খেলছে, তাদের নিয়েই ভাবতে চাই আমি।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘এই ম্যাচ কোচ, ফুটবলার ও সমর্থকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সমর্থকদের জন্য ডার্বি জিততে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ডার্বি দু’দলের কাছেই কঠিন লড়াই। এই ম্যাচটার সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে।’’ খাইমে কি শুরু থেকেই খেলবেন? ধোঁয়াশা রেখে মেনেন্দেস বললেন, ‘‘খাইমে কিছু সময়ের জন্য অবশ্যই খেলবে।’’
আরও পড়ুন: সনির বিকল্প তৈরি রেখেছেন শঙ্করলাল
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ডার্বি গ্যালারিতে বসে দেখেছিলেন মেনেন্দেস। তখন লাল-হলুদের দায়িত্বে ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। ডার্বির উন্মাদনা দেখে অভিভূত হন মেনেন্দেস। এ দিন বলছিলেন, ‘‘রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনা বা আতলেতিকো দে মাদ্রিদ ম্যাচের আগে এ রকম উত্তেজনাই থাকে স্পেনে। সমর্থকেরা এক সপ্তাহ আগে থেকেই ডার্বির জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেন। একই ছবি এখানেও দেখছি।’’
পরিস্থিতির চাপে মেনেন্দেসের মানসিকতাও বদলে গিয়েছে। গত মরসুমে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা এফসি থেকে মিডফিল্ডার কাশিম আইদারাকে সই করিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তাঁর খেলায় খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না স্প্যানিশ কোচ। আই লিগে শুরুর দিকে কাশিমকে ছাড়াই প্রথম একাদশ গড়তেন তিনি। শনিবার সকালে তাঁকে নিয়েই সাংবাদিক বৈঠকে এলেন স্প্যানিশ কোচ!
কী ভাবে কোচের আস্থা অর্জন করলেন? কোচের দিকে তাকিয়ে অল্প হেসে কাশিমের জবাব, ‘‘বিষয়টা আস্থা অর্জনের নয়। কোচ সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলান। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এর মধ্যে কোনও বিতর্ক নেই।’’
ডার্বি যে দু’জনের কাছেই অগ্নিপরীক্ষা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy