ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস।
তিনি চেষ্টা করছেন নিজেকে স্বাভাবিক রাখার। দাবি করছেন, খেতাবের কাছে পৌঁছেও শূন্য হাতে ফেরায় হতাশ হলেও ভেঙে পড়েননি। সেটা বোঝাতেই হয়তো আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন স্বাভাবিক মেজাজে সাংবাদিক বৈঠক করার। হাসির মাধ্যমে লিগ না পাওয়ার যন্ত্রণা আড়াল করছিলেন। সেটা আরও স্পষ্ট, চেন্নাই সিটি এফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রসঙ্গ ওঠায়।
সাংবাদিক বৈঠকে আলেসান্দ্রোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল চেন্নাইয়ের দুর্দান্ত সাফল্যের রহস্য কী? লাল-হলুদ কোচ বলে দিলেন, ‘‘কোনও মন্তব্য করব না।’’ চেন্নাই ২০ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ৪২ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের। মুখে না বললেও মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে খেতাব হাতছাড়া করার যন্ত্রণা কিছুতেই যেন ভুলতে পারছেন না স্প্যানিশ কোচ।
কর্তা থেকে সমর্থক, অধিকাংশের মতে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার অন্যতম কারণ শুরুর দিকে সমস্ত বিদেশিকে একসঙ্গে না পাওয়া। যা নিয়ে লাল-হলুদ কোচের সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘হয়তো।’’
স্বপ্নভঙ্গের রাতেও কোচ উচ্ছ্বসিত ফুটবলারদের নিয়ে। বললেন, ‘‘ওদের জন্য গর্বিত। এই মরসুমে অসাধারণ খেলেছে সকলে।’’ আরও যোগ করেন, ‘‘চোট-আঘাত বারবার সমস্যায় ফেলেছে আমাদের। সেগুলো কাটিয়ে উঠেই লড়াই করেছি।’’ ম্যাচ জিতলেও আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এই জয় কতটা যন্ত্রণার? লাল-হলুদ কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘ফুটবলে এ রকম হতেই পারে। তবে চ্যাম্পিয়ন হলে দারুণ আনন্দ পেতাম।’’ যোগ করলেন, ‘‘আই লিগ না পেলেও সে ভাবে ভেঙে পড়িনি আমি।’’
কলকাতা লিগ চলাকালীন ইস্টবেঙ্গল যোগ দেন আলেসান্দ্রো। তখন তিনি গ্যালারিতে বসে দেখতেন কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে। কলকাতা লিগের পরে সরকারি ভাবে কোচিং শুরু করেন তিনি। আই লিগের প্রস্তুতি নিতে মালয়েশিয়া যান। ফিরে এসে দুর্দান্ত শুরু করেন আই লিগে। টানা দু’ম্যাচে জয়। কিন্তু তার পরেই বিপর্যয়। হারের হ্যাটট্রিক ইস্টবেঙ্গলকে যখন খেতাবি দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে, তখনই নাটকীয় প্রত্যাবর্তন জবি জাস্টিনদের। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দু’টো ডার্বিতেই দুরন্ত জয়ের পরে ফের লাল-হলুদ সমর্থকেরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। যদিও শেষরক্ষা হল না। তবে এ দিন ম্যাচের পরে হোটেেল ডাকা হয়েছিল কলকাতা থেকে খেলা দেখতে যাওয়া ভক্তদের। সেখানে ক্লাবের তরফে তাঁদের মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে।
ফুটবল বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দু’টো ম্যাচে হার। আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে হার। ঘরের মাঠে ড্র-ই ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ জিততে না পারার প্রধান কারণ। আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘‘খেতাব হাতছাড়া হওয়ার কারণ কোনও এক ম্যাচে হার নয়। যে দল আমাদের চেয়ে বেশি পয়েন্ট পেয়েছে, তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমরাও এ বার আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্য ছিলাম।’’
সুপার কাপের ভাবনাও শুরু করে দিয়েছেন আলেসান্দ্রো। বললেন, ‘‘সোমবার অনুশীলনের পরে দিন দশেক বিশ্রাম নেব। তার পরে সুপার কাপের প্রস্তুতি শুরু করব।’’
এ দিকে টুইটারে মিনার্ভাকে আক্রমণ করেছেন কাশিম আইদারা। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছিলাম। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল কোনও দিন উন্নত হবে না সেই দলগুলিকে নিয়ে যারা ফুটবলকে ভালবাসে না। মিনার্ভা এ দিন দ্বিতীয়ার্ধে তিন বিদেশিকে তুলে নিল। ওরা ফুটবলের সৌন্দর্য ধ্বংস করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy