মহড়া: প্রস্তুতি ম্যাচে অশ্বিন। তৈরি হচ্ছেন টেস্টের জন্য। এএএফপি
ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই দু’দলের দুই অফস্পিনারের তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছে সংবাদমাধ্যমে। নেথান লায়ন বনাম আর অশ্বিন।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কে জ্বলে উঠবেন, তা নিয়ে চড়তে শুরু করেছে উত্তেজনার পারদ। শুক্রবার প্রস্তুতি ম্যাচের তৃতীয় দিনের শেষে অশ্বিন জানিয়ে দিয়েছেন, আর যাই হোক লায়নের ডেলিভারি নকল করার মতো বোকামো অন্তত তিনি করবেন না। বরং কোন জায়গায় লায়ন বল ফেলছেন, সেটা দেখে শেখার চেষ্টা করতে পারেন।
টেস্ট সিরিজের আগেই লায়নের সঙ্গে তাঁর এই প্রতিযোগিতাকে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব দিয়েই দেখছেন অশ্বিন। ডেলিভারি নকল না করলেও লায়নের ভিডিয়ো নিয়মিত দেখেন ভারতীয় অফস্পিনার। ‘‘আমাদের টেস্ট জীবন প্রায় এক সঙ্গেই শুরু হয়েছিল। তাই ওর ভিডিয়ো আমি মাঝে মধ্যেই দেখি। গত দু’বছরে দারুণ উন্নতি করেছে লায়ন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু ডেলিভারি নকল করার মতো বোকামো কেন করব? ইশান্ত শর্মাকে কি কখনও (ভার্নন) ফিল্যান্ডাররের অ্যাকশন নকল করতে বলা হবে?’’ তবে অশ্বিন জানিয়েছেন, লায়নের বোলিং দেখে ইতিবাচক শিক্ষা তিনি পেয়েছেন। অশ্বিনের কথায়, ‘‘কী ভাবে ঠিক জায়গায় বল ফেলা যায়, তা অবশ্যই শিখতে পারি লায়নের বোলিং দেখে। আশা করি, সিরিজ যত এগোবে, আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও তত বাড়তে শুরু করবে।’’
অশ্বিন মনে করেন, শুধুমাত্র ব্যাটিংয়েই নয়, বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও জুটি বাঁধা জরুরি। কারণ, যে কোনও এক জনের চেষ্টায় অস্ট্রেলিয়ার মতো ব্যাটিং শক্তিকে বারবার ধ্বংস করা কঠিন। তাই সে দায়িত্ব নিতে হবে জুটি বেঁধেই। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচের তৃতীয় দিনের শেষে এ কথাই জানিয়ে গেলেন ভারতীয় অফস্পিনার।
অশ্বিন বলেন, ‘‘বোলিংয়ের সময়েও ভাল জুটি গড়া খুব জরুরি। ম্যাচে একজন বোলারের ভূমিকা ঠিক কী, সেটা আগে থেকেই বুঝে নিতে হবে। বোলিং গ্রুপ হয়ে উঠতে পারলে বিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়া সহজ হয়ে যাবে। এক, দু’জন বোলারের প্রচেষ্টায় বিপক্ষকে প্রত্যেক বার উড়িয়ে দেওযা তো সম্ভব নয়। তাই গোষ্ঠী হিসেবে আমাদের সেই কাজ করতে হবে।’’
২০১৪-১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট সিরিজে তিন ম্যাচে ১২ উইকেট পেয়েছিলেন ভারতীয় অফস্পিনার। সে বার যে রণনীতিতে বোলিং করে সফল হয়েছেন, এ বারও সে ভাবেই বল করবেন, জানিয়ে দিলেন অশ্বিন। ‘‘টেস্টের প্রথম ইনিংসে পিচ থেকে স্পিনারেরা সে ভাবে সাহায্য পায় না। তাই রান আটকানোর জন্য এক জায়গায় বল করে যেতে হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে পিচ থেকে সুবিধা পেতেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে হয়। ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় উইকেটের জন্য। গত বারও এ ভাবেই সাফল্য পেয়েছিলাম। আমার ক্রিকেট জীবনের উত্থানের অন্যতম কারণ গত বারের অস্ট্রেলিয়া সফর,’’ প্রতিক্রিয়া অশ্বিনের। কিন্তু গত বার ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন লায়ন। তার পাশে অশ্বিনের এই পারফরম্যান্স বেশ ফিকে।
কিন্তু পারফরম্যান্স যাই হোক, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোনও সময়েই গা ছাড়া মনোভাব দেখালে চলবে না। অশ্বিনের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, যে কোনও মুহূর্তে ম্যাচের রং পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে দু’দলের ব্যাটসম্যানদের। বলছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সব সময়ে বিপক্ষের থেকে মানসিক ভাবে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হবে। সাফল্যের গন্ধ পেতে হবে প্রত্যেক মুহূর্তে। কারণ, যে কোনও সময়ে বদলে যেতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। গা-ছাড়া মনোভাব থাকলে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আশা কঠিন হয়ে উঠবে।’’
প্রস্তুতি ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৪ ওভার বল করেছেন অশ্বিন। ৬৩ রান দিয়ে তাঁর প্রাপ্তি এক উইকেট। কিন্তু তাতে উদ্বেগের কোনও কারণ দেখছেন না ভারতীয় অফস্পিনার। বরং এত দিন পরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার স্বাদ পেয়ে তিনি স্বস্তিবোধ করছেন। বলছেন, ‘‘অনেক দিন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ম্যাচ খেলা হয়নি। প্রস্তুতি ম্যাচে তার স্বাদ পেয়ে ভালই লাগল। এক উইকেট পেলেও আমি যে ভাবে প্রস্তুতি চেয়েছিলাম, তা পেয়েছি। টেস্টের আগে এখনও পাঁচ দিন সময় পাব। তখন আরও পোক্ত হয়ে ওঠার সময় থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy