Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

লিটনদের উঠে আসার পিছনে ঢাকার অ্যাকাডেমি

এ বারের এশিয়া কাপে সে ভাবে নজর কাড়তে না পারলেও জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত রান পেয়ে আসছেন লিটন।

সফল: বাংলাদেশের হয়ে দুরন্ত সেঞ্চুরি লিটন দাসের। ছবি: এএফপি।

সফল: বাংলাদেশের হয়ে দুরন্ত সেঞ্চুরি লিটন দাসের। ছবি: এএফপি।

কৌশিক দাশ
দুবাই শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

শুক্রবার, এশিয়া কাপ ফাইনালের পরে লিটন দাস নামটা অনেকেই জেনে যাবেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানবেন না ‘বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’-এর নাম। যে ‘বিকেএসপি’ অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসেছেন লিটন।

এ বারের এশিয়া কাপে সে ভাবে নজর কাড়তে না পারলেও জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত রান পেয়ে আসছেন লিটন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও ‘এ’ ক্যাটেগরি ক্রিকেটারের তালিকায় ছিলেন তিনি। যা ‘আইকন’ ক্রিকেটারদের পরের ধাপ। অন সাইডে রীতিমতো শক্তিশালী এই ব্যাটসম্যানকে তাই খেলিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরফি মর্তুজা। যার ফল পাওয়া গেল ফাইনালে।

দিনাজপুরের ছেলে লিটন ছোট থেকেই ক্রিকেট নিয়ে মেতেছিলেন। তাঁর দাদাও ক্লাব ক্রিকেট খেলতেন। সেখান থেকেই ক্রিকেটে আগ্রহ লিটনের। ছোটবেলাতেই সুযোগ পেয়ে যান ঢাকার কাছেই বিকেএসপি অ্যাকাডেমিতে। এটি আবাসিক অ্যাকাডেমি। বাংলাদেশের সরকারের এই অ্যাকাডেমিতে শুধু যে ক্রিকেটই শেখানো হয়, এমন নয়। আরও অনেক খেলারই কোচিং দেওয়া হয় এখানে। এই অ্যাকাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন শাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, মহম্মদ মিঠুনের মতো ক্রিকেটারেরা। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, এই অ্যাকাডেমিই দেশের ক্রিকেটের ‘পাইপ লাইন’। যে পদ্ধতির মাধ্যমে তুলে আনা হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এখানে শুধু খেলা নয়, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনাও করতে হয়। যে অ্যাকাডেমিরই বছর চব্বিশের একটি ছেলের সামনে এ দিন একটা সময় দিশাহারা দেখাচ্ছিল ভারতীয় বোলিংকে।

শুক্রবারের দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়াম পুরোপুরি ভরে গিয়েছিল। মাঠে হাজির দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে যে ধারণাটা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দর্শক অনুপাতটা মোটামুটি এ রকম: সত্তর শতাংশ ভারতীয়, তিরিশ শতাংশ বাংলাদেশি। বাংলাদেশ ক্রিকেট ভক্তদের সংখ্যা এত কম কেন? জানা যাচ্ছে, ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হবে ধরে নিয়ে এখানকার মানুষ টিকিট কেটেছিলেন। হঠাৎ মাশরফি মর্তুজারা ফাইনালে উঠে যাওয়ায় বাংলাদেশের সমর্থকদের মধ্যে টিকিটের চাহিদা বেড়ে যায়। পাকিস্তানিদের থেকে টিকিট কিনেও অবশ্য মোটামুটি তিরিশ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের মানুষ মাঠে আসতে পারেননি। কিন্তু তাতেও গ্যালারি উপচে পড়ছে। মাঠে ছিলেন দুবাইয়ে চাকুরিরত কলকাতার ছেলে জয় দাশগুপ্ত। তিনি বলছিলেন, ‘‘গ্যালারির সিঁড়িতেও লোক বসে আছে। যা আগে কখনও দেখিনি।’’

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য তিরিশ শতাংশ দর্শকের সামনেই চাপা পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় দর্শকদের আওয়াজ। তখন মাঠ দাপিয়ে খেলছেন লিটন। বাংলাদেশের পতাকা আর গায়ে বাঘ আঁকা দর্শকেরা হুঙ্কার তুলছেন গ্যালারির নানা জায়গা থেকে। পর পর কয়েকটা উইকেট পড়লেও সেই আওয়াজের ডেসিবল মাত্রা কমেনি। কিন্তু হঠাৎই একটা ঘটনায় মাঠের ছবিটা বদলে গেল।

একচল্লিশতম ওভারে যখন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে স্টাম্প ভেঙে দিলেন লিটনের। সঙ্গে সঙ্গে বেজে উঠল ঢাক। শোনা যেতে থাকল সেই গর্জন, ‘‘জিতেগা ভাই জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE