মলিনার বড় ভরসা ‘সুপারসাব’ হিউম। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
সেমিফাইনালের টিকিট জোগাড় করতে সামনের দু’ম্যাচ থেকে চাই মাত্র এক পয়েন্ট। কিন্তু হাবাসের পুণের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচের আগেই সেমিফাইনালে ওঠার কাজটা করে ফেলতে মরিয়া আটলেটিকো দে কলকাতা।
মঙ্গলবার রবীন্দ্র সরোবরে জোসে মলিনার দলের প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স। আর সেই ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগেই আটলেটিকো শিবিরের রিংটোন—কোনও আত্মতুষ্টি বা এক পয়েন্টের চিন্তা নয়। মঙ্গলবার মাঠে নেমে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই শেষ করে ফেলতে হবে সেমিফাইনালের যাবতীয় টেনশন। এটিকের সহকারী কোচ বাস্তব রায় যেমন বলছেন, ‘‘এক পয়েন্ট পেলে কাগজে কলমে সেমিফাইনালের জন্য অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না। কেরলের বিরুদ্ধে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই সেমিফাইনালে চলে যেতে চাই আমরা।’’
১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে লিগ টেবলে তিন নম্বরে রয়েছে মলিনার টিম। গোল পার্থক্যে অর্ণব মণ্ডলদের এক ধাপ পিছনেই রয়েছে কেরল। রবিবার বিকেলে বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্কে অনুশীলন ডেকেছিলেন আটলেটিকো কোচ। সেখানে মলিনাকেও শুরুর দিকের হাসিখুশি মেজাজের বদলে বেশ গম্ভীর মুখেই দেখা গিয়েছে। টিম সূত্রে খবর, এ দিন প্র্যাকটিসের পর শেষ কয়েকটি ম্যাচে কেন দ্বিতীয়ার্ধে টিম গোল হজম করছে তা নিয়েও বেশ কয়েক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে আটলেটিকো থিঙ্ক ট্যাঙ্কের। শেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই শেষ তিরিশ মিনিটে গোল হজম করেছে মলিনার টিম। তার উপর কেরল এ বারের আইএসএলে ১২ ম্যাচে কেরল যে ১১ গোল করেছে তার ন’টাই আবার এই দ্বিতীয়ার্ধে। তাই শুরুতে এগিয়ে গিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে গোল হজমের মতো পরিস্থিতি দূর করতে এ দিন টিমের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে মলিনার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘শেষের মিনিট কুড়ি-পঁচিশ টিমটায় একটা সমস্যা হচ্ছে। সেটা ঠিক। তবে তা দূরারোগ্য কোনও সমস্যা নয়। নিজেদের ফোকাসড রাখা ছাড়াও টিমের শেপ ধরে রাখতে কোচ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো দরেই বাকি টুর্নামেন্টে এগোতে চাইছি আমরা। মোদ্দা কথা, দ্বিতীয়ার্ধে কেরল কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করে যায়। সেটা হতে দেওয়া চলবে না।’’
আসলে শেষ দুই ম্যাচে পস্টিগারা পয়েন্ট না হারালেও যে ফ্যাক্টরগুলো আটলেটিকো শিবিরে আলোচনা হচ্ছে তা হল—এক) এগিয়ে গিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে অতিরিক্ত ডিফেন্সিভ হয়ে পড়ার মাশুল দিতে হচ্ছে। দুই) পস্টিগা ফিট হয়ে উঠলেও নব্বই মিনিট পর্যন্ত একই গতিতে অপারেট করতে পারছেন না। ফলে বল পা থেকে বেরিয়ে গেলে তাড়া করছেন না। গত মরসুমের ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও বলছেন, ‘‘বিরতির পরে পস্টিগাকে তুলে আক্রমণে আরো ঝাঁজ বাড়াতে হবে কলকাতাকে। হিউম, দ্যুতিকে নামিয়ে কেরলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধেই পাল্টা চাপ দিক এটিকে। যদিও কেরল ডিফেন্সে অ্যারন হিউজ সেট হয়ে যাওয়ায় টিমটার ডিফেন্স কিন্তু বেশ পোক্ত।’’
প্রথম পর্বে কোচিতে গিয়ে স্টিভ কপেলের টিমকে কলকাতা হারিয়ে এসেছিল জাভি লারার দুরপাল্লার গোলে। যদিও সেই ধাক্কা কাটিয়ে করলও এখন ছন্দে। আর কেরল-কলকাতা দ্বৈরথে অর্ণবদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ঘরের ছেলেরাই। রফিক, মেহতাব, সন্দীপ নন্দীদের সঙ্গে কেরলের জার্সিতে ফুল ফোটাচ্ছেন কলকাতায় খেলে যাওয়া সিকে বিনীতও। এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে কেরলের রফিকও প্রায় একই কথা বললেন, ‘‘অর্ণব, অবিনাশ, ডিকাদের সঙ্গে কেলার সুবাদে আমরা দু’পক্ষই একে অপকে চিনি। সেটাই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আমাদের ডিফেন্সটাও এখন বেশ ভাল খেলছে।’’
রফিকের কথা শুনে কলকাতা টিমের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘জোড়া স্ট্রাইকারে খেলে কেরল। ওদের কাউন্টার দ্বিতীয়ার্ধে ওদের কাউন্টার অ্যাটাকগুলো বেশ বিপজ্জনক। সেগুলোকেই থামাতে হবে আমাদের। তবে দ্বিতীয়ার্ধে টিম গোল হজম করছে বলে যারা হইচই করছেন, তাঁদের এটাও দেখতে হবে আমাদের করা ১৫ গোলের মধ্যে ১১ টাই কিন্তু হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy