Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভারতকে সোনা দিয়ে ঐহিকার চোখ টোকিয়োয়

সোমবার বিকেলে কটকে সিনিয়র বিভাগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিনিয়র বিভাগে জীবনের প্রথম সোনা জেতার পরে নৈহাটির মেয়ে ফোনে বললেন, ‘‘আমার লক্ষ্য অলিম্পিক্সে নামা। টোকিয়োর দল গঠন এখনও হয়নি। দেখা যাক সুযোগ পাই কি না।’’

 দুরন্ত: ফাইনালে মাধুরিকাকে হারালেন ঐহিকা। টুইটার

দুরন্ত: ফাইনালে মাধুরিকাকে হারালেন ঐহিকা। টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০৪:০৬
Share: Save:

কমনওয়েলথ টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের সিঙ্গলসে প্রথম সোনা জিতে ইতিহাস গড়লেন নৈহাটির মেয়ে ঐহিকা মুখোপাধ্যায়। এ বার তাঁর লক্ষ্য ২০২০ টোকিয়ো অলিম্পিক্স দলে সুযোগ পাওয়া।

সোমবার বিকেলে কটকে সিনিয়র বিভাগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিনিয়র বিভাগে জীবনের প্রথম সোনা জেতার পরে নৈহাটির মেয়ে ফোনে বললেন, ‘‘আমার লক্ষ্য অলিম্পিক্সে নামা। টোকিয়োর দল গঠন এখনও হয়নি। দেখা যাক সুযোগ পাই কি না।’’

বাংলার তারকা খেলায়াড় সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, কৃত্তিকা সিংহ রায়, মৌসুমি পালদের সঙ্গে অর্চনা কামাথ, পুজা সহস্রবুদ্ধি-র মতো দেশের সেরা খেলোয়াড়রা নেমেছিলেন এ বারের কমনওয়েলথ টেবল টেনিস প্রতিযোগিতায়। তাঁদের টপকে সোনা জয় তাই স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে মিহির ঘোষ, শৌভিক রায়ের ছাত্রীর।

রাজ্য সিনিয়র বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ঐহিকা এ দিন ফাইনালে মহারাষ্ট্রের মাধুরিকা পাটকরকে কার্যত দাঁড়াতেই দেননি। সহজেই ৪-০ তে হারিয়ে দেন। ঐহিকার পক্ষে ফল ১১-৬, ১১-৪, ১১-৯, ১৯-১৭। গতবার এই কটকেই জাতীয় প্রতিযোগিতায় অল্পের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি তিনি। বাইশ বছরের ঐহিকা হেরেছিলেন বাংলারই কৃত্তিকা সিংহ রায়ের কাছে। সেই যন্ত্রণা নিয়েই নেমেছিলেন এ দিন।

মেয়েদের ডাবলসে দুপুরে সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন ঐহিকা। তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। বিকেলে সোনা জিতে উচ্ছ্বসিত বাইশ বছরের মেয়ে বলছিলেন, ‘‘মাধুরিকার সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে লড়াই বরাবর পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। তবুও আমি ভাবিনি এমন একতরফা হবে ম্যাচ। দারুণ লাগছে।’’ আসলে রাজ্য সেরা হয়েও জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া অধরা ছিল ঐহিকার। তাঁর সঙ্গে বেড়ে ওঠা সুতীর্থা, কৃত্তিকা-রা এগিয়ে যাচ্ছেন, তা মেনে নিতে পারছিলেন না। সেই যন্ত্রণা জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল সদ্য ব্যাঙ্কে চাকরি পাওয়া ঐহিকাকে।

বাবা গৌতম মুখোপাধ্যায় বিএসএফের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। চাইতেন মেয়েও খেলাধুলায় আসুক। সেই ইচ্ছা থেকেই ছয় বছর বয়সে বাবার সঙ্গে এসে ঐহিকা ভর্তি হন রাজ্যের নামী কোচ মিহির ঘোযের টিটি কোচিং সেন্টারে। এর পরে সাব-জুনিয়র, জুনিয়র ও সিনিয়র বিভাগে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হন ঐহিকা। এখনও তিনি রাজ্য সিনিয়র বিভাগের চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু চমকপ্রদ ব্যপার হল, জাতীয় স্তরে কখনও সোনা জেতেননি রবীন্দ্র ভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। মিহিরবাবু বলছিলেন, ‘‘ঐহিকা কখনও জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়নি। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও বরাবর সফল। স্লোভাকিয়া, পোলান্ড এবং বেলজিয়াম ওপেনে জুনিয়র বিভাগে পদক জিতেছে। ইংল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড় হেরে যাওয়ার পরে আমি জানতাম ও চ্যাম্পিয়ন হবেই।’’

ঐহিকার সোনা ছাড়াও ভারত এ দিন আরও দুটি সোনা জিতল ছেলে ও মেয়েদের ডাবলসে। মেয়েদের ডাবলসে পূজা সহস্রবুদ্ধি এবং কৃত্তিকা সিংহ রায় ৩-১ ফলে হারান শ্রীজা আকুলা এবং মৌসুমি পাল জুটিকে। ছেলেদের ডাবলসে এ অমলরাজ এবং মানব ঠক্কর ৮-১১, ১১-৬, ১৩-১১, ১২-১০ পয়েন্টে হারান শরৎ কমল এবং জি সাথিয়ান জুটিকে। সব মিলিয়ে সাতটি সোনা, পাঁচটি রুপো এবং তিনটি ব্রোঞ্জ নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE