Advertisement
E-Paper

বিশ দিনে কালাপাহাড়ের ভোল বদলালো নীল-সবুজের ম্যাচ

গত মাসের ১১ তারিখ বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি জাভাগাল শ্রীনাথ স্টেডিয়াম দেখতে আসেন। তার পরেই টি-২০ ম্যাচের জন্য বর্ষাপাড়াকে বাছা হয়। কিন্তু তখনও আশপাশের অবস্থা শোচনীয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:০৩
বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম। ছবি: পীতাম্বর নেয়ার

বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম। ছবি: পীতাম্বর নেয়ার

ভাঙাচোরা রাস্তা, ধুলোয় ঢাকা ঘরবাড়ি, মরা ভরলু খালের দুর্গন্ধ, বেপরোয়া ট্রেকারের দৌরাত্ম্য। এই ছিল কালাপাহাড়-লাল গণেশ এলাকার চিত্র। তার মধ্যেই গত এক দশক ধরে একটা আশা বুকে নিয়ে বসেছিলেন এলাকার মানুষ, বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম তৈরি হলেই ভোল বদলাবে এলাকার। দরকার শুধু একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের। সেই আশা শেষ পর্যন্ত পূরণ হতে চলেছে মঙ্গলবার। ভারত-অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ ম্যাচের হাত ধরেই বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ‘আনুষ্ঠানিক’ উদ্বোধন হবে। উদ্ধোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।

আরও পড়ুন: কুলদীপদের ভয় পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

আরও পড়ুন: জন্মদিনে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে নজির গড়লেন প্রশান্ত

কালাপাহাড়-লুটুমা-ওদালবাক্রা-লাল গণেশ এলাকা মিশ্র ভাষাভাষীর বাস হলেও মূলত বাঙালির সংখ্যাধিক্য। ২০১০ সালে শেষ বার গুয়াহাটির নেহরু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়। ২০০৪ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামের এলাকা তখনও জঙ্গলে ঢাকা। ২০০৬ সালে স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হয়। ২০০৭ সালে ফের তদনীন্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামের ক্লাব হাউস ও স্ট্যান্ডের শিলান্যাস করেন। ২০১০ সালে স্টেডিয়ামের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০১২ সালে পূর্বাঞ্চলের আন্তরাজ্য মহিলা ক্রিকেটে অসম বনাম ওড়িশার খেলা দিয়েই বর্ষাপাড়ার যাত্রা শুরু। ২০১৩-১৪ সালে রঞ্জি ট্রফির চারটি খেলা হয়েছিল এখানে। কিন্তু স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। আইপিএল বর্ষাপাড়ায় টানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এসিএ।

ভাঙাচোরা সড়ক, আবর্জনা, খালের দুর্গন্ধ নিয়ে নেতাদের কাছে হাজারো অভিযোগ জানিয়ে হতাশ এলাকাবাসীর একটাই আশা ছিল, স্টেডিয়ামে খেলা হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। বাস্তবেও সেটাই দেখা গেল। এসিএর সহ সভাপতি দেবজিৎ শইকিয়া জানান, ২০১৬ সালে বিসিসিআই প্রতিনিধিরা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসে ২৪টি ত্রুটি সারাতে বলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের টাকা এসিএ এখনও হাতে পায়নি।ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়ে ও বিভিন্ন উপায়ে টাকা জোগাড় করে স্টেডিয়ামের সিঁড়ি, মাঠে আসার রাস্তা, জায়ান্ট স্ক্রিন, ঘোষণা ব্যবস্থা, ফ্লাড লাইট-সহ ৫০টি জিনিস তৈরি করা ও বসানো হয়। ৪০০টি আধুনিকতম ৩৬০ ডিগ্রি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

গত মাসের ১১ তারিখ বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি জাভাগাল শ্রীনাথ স্টেডিয়াম দেখতে আসেন। তার পরেই টি-২০ ম্যাচের জন্য বর্ষাপাড়াকে বাছা হয়। কিন্তু তখনও আশপাশের অবস্থা শোচনীয়। ভরলু খালের দিক থেকে স্টেডিয়ামে ঢোকার রাস্তা নেই। রাস্তাঘাট ভাঙা, নোংরা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়। যার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন এলাকাবাসী। সরকারের বিভিন্ন দফতর কোমর কষে নামে। পিচ পড়ে গোটা রাস্তা জুড়ে। ভরলুর আবর্জনা ও দুর্গন্ধ দূর হয়। এমনকী রাতারাতি খালের উপরে দু’টি নতুন সেতুও তৈরি হয়। তৈরি হয় নতুন অ্যাপ্রোচ রোড। দেবজিৎবাবু জানান, যে কাজ গত বিশ বছরে হয়নি, একটা ম্যাচের সৌজন্য মাত্র বিশ দিনে সেই কাজ করা হয়েছে।

৫৯ বিঘা জমিতে ১০০ কোটির স্টেডিয়ামের দর্শকাসন ৩৭ হাজার ৫০০। ২০১০ সালে এসিএ-র তখনকার কমিটি স্টেডিয়ামের নাম ভূপেন হাজরিকার নামে দেয়। কিন্তু আজ এসিএর বর্তমান কমিটির তরফে শইকিয়া ঘোষণা করেন, স্টেডিয়ামের কোনও নামকরণ হয়নি। স্টেডিয়াম, স্ট্যান্ড ও প্রবেশ পথগুলির নামকরণের জন্য কমিটি গড়া হয়েছে মাত্র। তিনি বলেন, “যে কোনও উপায়ে এই আন্তর্জাতিক ম্যাচ সফল ভাবে করতে পারলে আমরা আইপিএলও এখানে টানতে পারব। তখন এলাকার আরও উন্নতি হবে।”

Guwahati Barsapara Stadium Cricket গুয়াহাটি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy