নায়ক: এজবাস্টন টেস্টে ম্যান অব দ্য ম্যাচ স্যাম কারেন। ছবি: গেটি ইমেজেস।
শনিবার এজবাস্টন টেস্টের চতুর্থ দিনে ইংল্যান্ডের কাছে সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল বিরাট কোহালির উইকেট। জো রুটদের যা এনে দেন বেন স্টোকস।
তাঁর ইনসুইঙ্গার প্যাডে আছড়ে পড়ে কোহালি এলবিডব্লিউ হওয়া মাত্র ঠিক হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। স্টোকস এবং ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের উল্লাসই বলে দিচ্ছিল যে, কতটা উন্মুখ হয়ে এই উইকেটটির দিকে তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। মরিয়া শেষ চেষ্টা হিসেবে রিভিউ নিয়েছিলেন কোহালি। লাভ হয়নি।
ভারত অধিনায়ককে আউট করা নিয়ে স্টোকস ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে অসাধারণ ব্যাটিং করে কোহালি। বল সুইং করছিল বলে ও আড়াআড়ি ‘মুভ’ করছিল। যে বলটায় আউট হল, তার আগে আউটসুইং করাচ্ছিলাম। সেটাই উইকেটের মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল। কোহালি একটু ঝুঁকে খেলতে গিয়ে ভুলটা করে। এ রকম হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে এমন একটা মুহূর্তই ম্যাচের রং পুরো বদলে দিয়ে যেতে পারে।’’
রাস্তায় মারামারি করে নির্বাসিত হওয়ার পরে খুব একটা ভাল সময় যায়নি স্টোকসের। এ বার আইপিএলেও খুব সফল হননি। কিন্তু এজবাস্টনে প্রত্যাবর্তন ঘটালেন। এ দিন বল হাতে তিনিই নিশ্চিত করে দেন ইংল্যান্ডের জয়। কোহালির উইকেট ছাড়াও শেষ উইকেটটিও তাঁর। হার্দিক পাণ্ড্য তাঁর বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হতেই ৩১ রানে জিতে যায় ইংল্যান্ড। সব মিলিয়ে স্টোকস দ্বিতীয় ইনিংসে নেন চার উইকেট। তাঁর পারফরম্যান্স ইংল্যান্ডের সর্বকালের দুই সেরা অলরাউন্ডারের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। ১৯৮১-তে ইয়ান বোথাম এবং ২০০৫-এর অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। যদিও স্টোকসের মুখে ইংল্যান্ডের নতুন এক অলরাউন্ডারের কথা। তাঁর নাম স্যাম কারেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে জীবনের দ্বিতীয় টেস্টেই যিনি ম্যাচের সেরা হলেন। ‘‘দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময়ে আমাদের মনে হচ্ছিল, আমরা বেশ পিছিয়ে পড়ছি। কিন্তু স্যাম কারেন দুর্ধর্ষ ব্যাট করে ম্যাচ থেকে ওদের বের করে দিল।’’ প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে ভাঙেন কারেনই। তার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ঘোর সঙ্কটের মধ্যে ব্যাট হাতে দু’টো বড় জুটি তৈরি করেন তিনি। ইংল্যান্ড ৮৭-৭ হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁর জন্যই ভারতের সামনে ১৯৪ রানের কঠিন টার্গেট দিতে পারে ইংল্যান্ড। প্রথমে আদিল রশিদকে নিয়ে যোগ করেন ৪৮ রান। তার পরে নবম উইকেটে ৪১ রান যোগ করেন স্টুয়ার্ট ব্রডকে সঙ্গে নিয়ে। ব্যাট হাতে ২৪ ও ৬২, বোলিংয়ে দু’ইনিংস মিলিয়ে পাঁচ উইকেট। কোহালির ১৪৯ এবং ৫১-কেও ছাপিয়ে তাঁকে বাছা হল ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
‘‘আমি এখনও ধাতস্থ হতে পারছি না। মনে হচ্ছে যেন ঘোরের মধ্যে রয়েছি,’’ যখন বলছেন ম্যাচের সেরা, জয়ের আনন্দে আত্মহারা দেখাচ্ছিল তাঁকে। জানালেন, শুক্রবার রাতে উদ্বেগে ঘুমই হয়নি তাঁর। ‘‘গত কাল রাতে ঘুমোতে পারিনি। আশা করি, আজ ভাল করে ঘুমোতে পারব,’’ বললেন ২০ বছরের নতুন তারকা। জানালেন, প্রতিপক্ষ অধিনায়ক তাঁর কাছে উদাহরণ হয়ে উঠেছিলেন। ‘‘প্রথম ইনিংসে টেল এন্ডারদের নিয়ে বিরাট যে ভাবে ব্যাটিং করল, তা থেকেই আমি ইনিংসটা খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’’
কারেন ধন্যবাদ দিচ্ছেন উপমহাদেশের এক কিংবদন্তিকেও। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সঙ্গকারা। বললেন, ‘‘হোটেলে কুমার সঙ্গকারার সঙ্গে দেখা হয়। উনি আমাকে বোঝান, শেষের দিকে ব্যাট করতে এলে ঠিক কী ভাবে এগোনো উচিত। এই দর্শকদের সামনে আর যাদের খেলা দেখে বড় হয়েছি, তাদের সঙ্গে টেস্ট খেলাটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। প্রত্যেক দিন শিখতে চাই আমি।’’
ইশান্তের জরিমানা: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন দাউয়িদ মালানকে আউট করে মুখ বিকৃত করে জয়োৎসব করেছিলেন ইশান্ত শর্মা। যে জন্য ইশান্তের ১৫ শতাংশ ‘ম্যাচ ফি’ কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিল আইসিসি। একই সঙ্গে তাঁর নামের পাশে যোগ হল একটি ডিমেরিট পয়েন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy