Advertisement
E-Paper

আই লিগের স্বপ্ন শেষ ইস্টবেঙ্গলে

এএফসি কাপের গুরুত্ব তাঁর কাছে নেই। ফুটবলারের বিরুদ্ধে অক্লেশে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ এনে তার পর দুনিয়া-খ্যাত ফুটবলারের নাম তুলে ডিগবাজি খেতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কলকাতায় তাঁর কথাবার্তা, বডি-ল্যাঙ্গোয়েজ দেখে মনে হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ এনে দেওয়ার জন্য তিনি ধনুকভাঙা পণ করেছেন। তাই বেঙ্গালুরুতে সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট আনার কোনও বিশেষ পরিকল্পনা তাঁর মাথায় গিজগিজ করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:০৩

এএফসি কাপের গুরুত্ব তাঁর কাছে নেই। ফুটবলারের বিরুদ্ধে অক্লেশে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ এনে তার পর দুনিয়া-খ্যাত ফুটবলারের নাম তুলে ডিগবাজি খেতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কলকাতায় তাঁর কথাবার্তা, বডি-ল্যাঙ্গোয়েজ দেখে মনে হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গলকে আই লিগ এনে দেওয়ার জন্য তিনি ধনুকভাঙা পণ করেছেন। তাই বেঙ্গালুরুতে সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট আনার কোনও বিশেষ পরিকল্পনা তাঁর মাথায় গিজগিজ করছে। কিন্তু রবিবাসরীয় সন্ধেয় কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল কোচ এলকো সতৌরির রণকৌশল দেখে ফোনে এক আদ্যন্ত লাল-হলুদ সমর্থক মনে করিয়ে দিলেন ডায়মন্ড কোচ অমল দত্তের একটি মন্তব্য। ‘‘ও একটা কাঁচকলা কোচ। এখনও পাকেনি’’, প্রিয় দল ৩-০ হারায় রাগে গজগজ করছিলেন সেই সমর্থক।

এই সেই কান্তিরাভা! যে স্টেডিয়াম র‌্যান্টি মার্টিন্সের কাছে এগারো বছরেও পয়া হয়ে উঠল না। এখানেই তো তাঁর প্রিয় বন্ধু ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়রের ছটফট করতে করতে চিরতরে স্থির হয়ে যাওয়া। সেই মাঠেই র‌্যান্টি এ দিন দেখলেন, গোটা বিশ্বের লাল-হলুদ সমর্থকদের হৃদয় রক্তাক্ত করে আই লিগ খেতাবের রাস্তা থেকে এ বারের মতো ছিটকে গেল ইস্টবেঙ্গল।

সমর্থক আবেগের বশে কোচকে ‘কাঁচকলা’ বলে বিদ্রুপ করতেই পারেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ডাচ কোচ এ দিন অ্যাশলে ওয়েস্টউডের বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে এমন সব স্ট্র্যাটেজি-ট্যাকটিক্স নিলেন যা অদ্ভুতুড়ে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাই ম্যাচ শেষে সমর্থকদের প্রশ্ন—স্ট্রাইকার যদি নীচে না নামায় গোল খেলে অন্তর্ঘাত হয়, তা হলে আজ এলকো কেন ছাড় পাবে?

সত্যিই এ দিন ম্যাচ দেখে বোঝা গেল না, যে ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলে আনতে হবে সেই ম্যাচে দেশের সেরা গেমমেকার কেভিন লোবো কেন প্রথমার্ধটা রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাটিয়ে দিলেন? রাইট ব্যাক দীপক মণ্ডল এখন অতীতের ছায়া। বিপক্ষের ম্যাচ ফিট স্ট্রাইকারের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে পারেন না বলে আগের ম্যাচগুলোতে এলকো আগে অভিষেক দাসকে খেলিয়ে পরে তাঁকে নামাতেন। টিমে খাবরা থাকতে কেন দীপক এ দিন পুরো ম্যাচ খেললেন তা বোঝা গেল না? বাঙালি এই ডিফেন্ডারের সামনেই ফ্রিকিক থেকে হেডে ২-০ করে গেলেন সুনীল। আর দীপক দাঁড়িয়ে যেন গাইলেন, ‘‘আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারাদিন...।’’

‘মাস্ট উইন’ ম্যাচে কেন শুরু থেকেই লেফট ব্যাকে অবিনাশকে খেলিয়ে লেফট উইংয়ে জোয়াকিম নয় কেন, তাও ধোঁয়াশা। ওয়ার্কলোড নিয়ে ওঠানামা করা ও বক্সে নিখুঁত সেন্টার রাখতে জোয়াকিম এই ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম ভরসা। এলকো তাঁকে নামালেনই না। উল্টে যে একটু চেষ্টা করছিল, সেই অবিনাশকেই তিনি তুলে নামালেন রফিককে। রুনির গোলের পিছনে অভিজিতের ভুলভ্রান্তি রয়েছে। প্রশ্ন, অভ্র মণ্ডল কি এখনও ইস্টবেঙ্গলে খেলেন? নাকি কোচ তাঁর নামই শোনেননি।

জন জনসন আর ওসানো—বেঙ্গালুরুর দুই ডিফেন্ডার এরিয়াল বলে দুর্দান্ত। এলকো ডুডু-র‌্যান্টিকে সামনে রেখে সেই আদ্দিকালের লং বল খেলে গেলেন গোটা প্রথমার্ধ। কোনও প্ল্যান ‘বি’ নেই। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে।

ভারতীয় ফুটবলে আত্মপ্রকাশের পর দু’বছরে পাঁচ ম্যাচের পর এই প্রথম ইস্টবেঙ্গল বিজয় বেঙ্গালুরু কোচ ওয়েস্টউডের। ১৬ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা আপাতত নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করল চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে থাকা মোহনবাগানের ঘাড়ে।

আর সে দিনেই এ বারের মতো আই লিগের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল লাল-হলুদের।

ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, দীপক, গুরবিন্দর, রাজু, ধনরাজন( লোবো), তুলুঙ্গা (রফিক), খাবরা, মেহতাব, অবিনাশ (বলদীপ), র‌্যান্টি, ডুডু।

bengaluru fc vs east bengal i league 2015 latest news east bengal lost east bengal defeat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy