তুরুপের তাস। রিয়াল প্র্যাকটিসে রোনাল্ডো। -এএফপি
লা ডেসিমা। দশ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন! কথা যখন ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্টের হয় তখন রিয়াল মাদ্রিদের ধারে-পাশে কোনও ক্লাব আসে না। সে বার্সেলোনা হোক বা বায়ার্ন মিউনিখ, কিংবা লিভারপুল, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। কোনও দ্বিধা না রেখে রিয়ালকে বলা যেতেই পারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গোলিয়াথ। কিন্তু ইউরোপের গোলিয়াথকে ছিটকে দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে ডেভিড। যে ডেভিডের আসল নাম উল্ফসবার্গ। ছয় দিন আগে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অন্যতম অঘটন ঘটিয়ে জার্মানির মাঝারিমানের ক্লাব জিদান-রোনাল্ডোর স্বপ্নের জুটিকে অবিশ্বাস্য প্রস্থানের চূড়ান্ত দরজা দেখাতে মঙ্গল-রাতে মরিয়া। দ্বিতীয় লেগে।
ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টার আগে অবশ্য রিয়াল শিবিরে হঠাৎ-ই যেন একাত্মতার হাওয়া। যে রিয়াল এ মরসুমে এত দিন ফুটবলারদের ঝামেলা, সমর্থকদের কটাক্ষ নিয়ে জেরবার ছিল, এই মুহূর্তে সে সব বিতর্ক অতীত। যার পিছনে আবার দলের সেই সাত নম্বর। যিনিই কিনা এত দিন ছিলেন বেশির ভাগ রিয়াল-বিতর্কের কেন্দ্রে সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোই দলকে চাঙ্গা করতে আসরে নেমে পড়েছেন মরণবাঁচন যুদ্ধের ঠিক আগে। এবং অভিনব ভাবে সিআর সেভেন প্রতিপক্ষ উল্ফসবার্গের আগে নিজেদের ঘরের মাঠ বের্নাবাওর গ্যালারিকে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। রোনাল্ডোর সোজাসাপ্টা দাবি, ‘‘এটা একটা স্মরণীয় রাত হয়ে থাকতে পারে। যদি আপনাদের সমর্থন পাই।’’ উল্ফসবার্গ এগিয়ে ২-০। তাতেও রোনাল্ডো আত্মবিশ্বা সী। যাঁর মতে রিয়াল সমর্থকরা মঙ্গলবার রাতে স্মরণীয় কিছু দেখবেন স্বচক্ষে। রিয়াল ঠিক বেরিয়ে আসবে কঠিনতম পরিস্থিতি থেকে। ‘‘আমরা ঠিক জিতব। আশি হাজার সমর্থককে দেখলে আরও উদ্দীপ্ত হবো। সমর্থকে ঠাসা গ্যালারি আমাদের আরও আত্মবিশ্বাস জোগাবে। আমি খুবই উৎসুক মাঠে নামতে।’’
সতীর্থদের জন্য রোনাল্ডোর পেপ-টক কী? ‘‘ফুটবলারদের দৌড়তে হবে। লড়াই করতে হবে। পুরো নব্বই মিনিটই চেষ্টা করতে হবে। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। নিজেদের সব কিছু উজাড় করার জন্য তৈরি থাকতে হবে,’’ বলে দিয়েছেন রোনাল্ডো। ২৯ বছরের ইতিহাস যখন রিয়ালের বিরুদ্ধে তখন আবার কোনও জার্মান ক্লাবের সঙ্গে লড়াইয়ে ইতিহাস রিয়ালের পক্ষে। খুব কমই ঘটনা আছে যখন কোনও জার্মান ক্লাব রিয়ালকে খারাপ ভাবে হারিয়েছে। লস ব্ল্যাঙ্কোসের মিডফিল্ড ইঞ্জিন টনি ক্রুজ হয়তো সে কারণেই বলেছেন, ‘‘শুরু থেকেই আক্রমণ করতে হবে। হাফটাইমে ০-০ থাকলে চলবে না। শুরুতেই গোল চাই, গোল।’’ রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলাররা যখন গোল নিয়ে ভাবছেন তখন তাঁদের কোচের চিন্তা নিজের হটসিট। শোনা যাচ্ছে, দশ বারে ট্রফিজয়ীরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটেই ছিটকে গেলে ফের মিউজিক্যাল চেয়ার শুরু হবে কোচের আসন নিয়ে। জিদানকে সরিয়ে আবার হয়তো জোসে মোরিনহো! ম্যাচের আগে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান অবশ্য বলেছেন, ‘‘এই দল যা ইচ্ছে কিছু করতে পারে। হ্যাঁ, মরসুমের অনেক ম্যাচে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। কিন্তু এটাও ঠিক এই দল অনেক কিছু করার ক্ষমতা রাখে।’’ ০-২ পিছিয়েও? উল্ফসবার্গ ডিফেন্স কিন্তু মোটেও ভাঙা সহজ নয়। তার উপরে আবার বিপক্ষে আন্দ্রে শুরলে, রিকার্ডো রদ্রিগেজের মতো ইম্প্যাক্ট ফুটবলাররা। রিয়াল তো প্রচণ্ড চাপে? জিদান বলছেন, ‘‘জানি আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy