Advertisement
E-Paper

বোয়াতেংরা ভুলতে পারছেন না সেই আতঙ্কের রাতকে

এ বার আর ফ্রাইডে দ্য থার্টিন্থ নয়। ইংরেজি মতে দিনটা শুক্রবার পড়ে গেলেও তারিখটা সতেরো। কিন্তু তাতেও যে আতঙ্ক কাটছে না জার্মান ডিফেন্ডার জেরোম বোয়াতেংয়ের।

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৯:৫৬
আবার স্তাদ দ্য ফ্রান্সে পা জার্মানির। ১৩ নভেম্বরের সেই রাতের পরে। ছবি টুইটার

আবার স্তাদ দ্য ফ্রান্সে পা জার্মানির। ১৩ নভেম্বরের সেই রাতের পরে। ছবি টুইটার

এ বার আর ফ্রাইডে দ্য থার্টিন্থ নয়। ইংরেজি মতে দিনটা শুক্রবার পড়ে গেলেও তারিখটা সতেরো।

কিন্তু তাতেও যে আতঙ্ক কাটছে না জার্মান ডিফেন্ডার জেরোম বোয়াতেংয়ের। পাশের দেশে ইউরো চলছে। তাই যমজ মেয়ে সোলে ও লামিয়াকে নিয়ে ফ্রান্সে স্বামীর খেলা দেখার জন্য আসতে চেয়েছিলেন বোয়াতেং পত্নী শেরিন। কিন্তু পত্রপাঠ তা নাকচ করে দিয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখের এই ফুটবলার। বলেছেন, ‘‘টিভিতেই খেলা দেখো। কারণ ফ্রান্সে এ বার যাওয়াটাই রিস্কের।’’

কী হয়েছিল সে দিন? সাত মাস আগে এই স্তাদ দ্য ফ্রান্সেই তো জার্মানি-ফ্রান্স ফ্রেন্ডলি চলাকালীন স্টেডিয়ামের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল মানববোমা। আর তার পরেই বাতা ক্লঁ প্রেক্ষাগৃহে সন্ত্রাসবাদীদের সেই নরমেধ যজ্ঞ এবং প্যারিসে সিরিয়াল ব্লাস্ট। ম্যাচ সাময়িক বন্ধ হলেও শেষ পর্যন্ত ০-২ হেরে কাঁপতে কাঁপতে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন জার্মানরা। বোয়াতেং-এর কথায় যে আতঙ্ক সহজে কাটেনি। পুরো এক মাস লেগেছিল ওই ভয়াবহ স্মৃতি মন থেকে মুছে ফেলতে। যদিও ঘানাজাত জার্মান বোয়াতেং সেই প্রশ্ন উঠলেই বলছেন, ‘‘ওটা আমাদের ভাবার বিষয় নয়। নিরাপদেই আছি। ম্যাচে মনোনিবেশ করছি।’’ কিন্তু মন থেকে সেই স্মৃতি কি সহজে উপড়ানো যায়!

সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

বরং এ বার ইউরোতে যেখানে বাঘের ভয়, ঠিক সেখানেই সন্ধ্যা হয় গোছের পরিস্থিতি। আবার সেই স্তাদ দ্য ফ্রান্স! আর সামনে লেভানডস্কির পোল্যান্ড জার্মানদের সামনে। আর ফুটবল মাঠে জার্মানি আর পোল্যান্ড মানেই তো অন্য যুদ্ধ। ভেসে ওঠে সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, অওশউইৎজ্-এর স্মৃতি। যা আজও জার্মানদের সামনে মুখোমুখি হলে চাগিয়ে দেয় পোলিশদের।

কী রকম? ঠিক দু’বছর আগের নভেম্বরে জার্মানিকে ২-০ হারিয়েছিল পোল্যান্ড। যে ম্যাচে অনবদ্য খেলেছিলেন জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখে খেলা লেভানডস্কি। যার দাদু আবার হিটলারের জমানায় বন্দি ছিলেন অওশউইৎজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। ম্যাচের পর মিক্সড জোনে সাংবাদিকদের বলে যান, ‘‘এই জয় দাদুকেই উৎসর্গ করলাম। বেঁচে থাকলে খুশি হতেন।’’

নতুন সহস্রাব্দে এই জার্মান-পোলিশ আকচাআকচি-ই যদিও একটু অন্য রকম। জার্মানিতে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে পোল্যান্ডের লোকই বেশি। আবার পোল্যান্ডের লোকের মজুরি কম বলে বহু জার্মান কোম্পানিই দেশ থেকে কারখানা সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পোল্যান্ডে। ফলে ছোট হচ্ছে জার্মানদের চাকরির বাজার। সেই রাগও যে রয়েছে জার্মানদের। এ বার আবার সন্ত্রাসের বাষ্প মাখা প্যারিসে ফের মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ।

যে ম্যাচের আগে পোল্যান্ডের লেভানডস্কি বলছেন, ‘‘জার্মানি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেটা জানি। একই সঙ্গে জানি যে ওরা অপ্রতিরোধ্য নয়। আর বায়ার্নে খেলার ফলে জানি কোথায় ওদের চেপে ধরতে হবে।’’ এ পর্যন্ত ইউরোতে সতেরো বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। যার মধ্যে জার্মানি আট বার জিতলে পোল্যান্ডও জিতেছে চার বার। দু’দলের শেষ সাক্ষাতে গত সেপ্টেম্বরে যদিও ৩-১ জিতেছিল ন্যয়ার, মুলারদের জার্মানিই।

এ বার কী হবে? গ্রুপ লিগে দু’দলই প্রথম ম্যাচ জিতেছে। জার্মানরা হারিয়েছে ইউক্রেনকে। আর পোলিশরা হারিয়েছে নর্দান আয়ার্ল্যান্ডকে। জোয়াকিম লো-র টিম অবশ্য শুক্রবারের ম্যাচের আগে লেভানডস্কির মতো গরমাগরম মন্তব্য করেনি। জার্মান কোচ ব্যস্ত স্টপারে বোয়াতেং-র সঙ্গে কাকে রাখবেন হুমেলস না গত ম্যাচে গোল করা মুস্তাফি— তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই। বরং বায়ার্ন মিউনিখে পোলিশ স্ট্রাইকারের সতীর্থ বোয়াতেং বলছেন, ‘‘লেভানডস্কি দুর্দান্ত স্ট্রাইকার। ওর জন্য সতর্ক থাকতে হবে। জানি পোল্যান্ড ম্যাচ জেতা খুব সহজ নয়। তবে আমাদের প্রথম ম্যাচে যা পারফরম্যান্স, তার ভিত্তিতে দ্বিতীয় ম্যাচটাতেও জয়ের আশা করতেই পারি।’’

জোয়াকিম লো-র এই জার্মান টিমে রয়েছেন পোডোলস্কি। যিনি আদতে পোলিশ। এখনও বছরে দু’তিন বার করে যান পোল্যান্ডে। রয়েছে পরিবারও। এই ম্যাচের আগে তাঁর কাছে জার্মানির এক ফুটবল পত্রিকা জানতে চেয়েছিল আপনি পোলিশ না জার্মান? পোডোলস্কি বলে দেন, ‘‘আমি ফুটবলার।’’ গালাতাসারের পোডোলস্কি আশাবাদী, শেষ ষোলোয় দু’দলই যাবে। জার্মানির জার্সি গায়ে ১২৮ ম্যাচ খেলা ফুটবলার বলছেন, ‘‘এই ম্যাচটা আমার কাছে কতটা আবেগের তা সবাই জানেন। আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব সব ও দেশে। মনে হচ্ছে গ্রুপে আমরা প্রথমে থাকব। আর সঙ্গে শেষ ষোলোয় যাবে পোল্যান্ডও।’’

Boateng Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy