Advertisement
E-Paper

অশ্বিন কার্যত বাইরে, কাজ শুরু মায়াঙ্কের

তিন ঘণ্টার প্র্যাক্টিস সেশনে অশ্বিন বল-ব্যাট কিছুই করেননি। শুধু অধিনায়ক কোহালি নেটে নকিং করার সময়ে এক পা হেঁটে তাঁকে কয়েকটা বল করতে দেখা গেল।

সুমিত ঘোষ 

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৯
মহড়া: ভারতের নেটে মায়াঙ্ক আগরওয়াল। রবিবার মেলবোর্নে। টুইটার

মহড়া: ভারতের নেটে মায়াঙ্ক আগরওয়াল। রবিবার মেলবোর্নে। টুইটার

রাতারাতি আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ নিয়ে কেউ উপস্থিত না হলে মেলবোর্ন টেস্টেও খেলা হচ্ছে না আর অশ্বিনের। তিন দিন পরে রবিবারেই প্র্যাক্টিসে ফিরল ভারতীয় দল। আর সেখানে বিরাট কোহালিদের প্রধান স্পিনারকে সারাক্ষণ প্রায় বসেই থাকতে দেখা গেল। আর দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলতে দেখা গেল দলের ফিজিয়ো এবং ট্রেনারের সঙ্গে।

তিন ঘণ্টার প্র্যাক্টিস সেশনে অশ্বিন বল-ব্যাট কিছুই করেননি। শুধু অধিনায়ক কোহালি নেটে নকিং করার সময়ে এক পা হেঁটে তাঁকে কয়েকটা বল করতে দেখা গেল। কথা ছিল, ফিটনেস পরীক্ষা নেওয়া হবে অশ্বিনের। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হল, পরীক্ষা নেওয়ার অবস্থাটুকুও নেই।

গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের তিনটি টেস্টের মধ্যে যদি দু’টিতে চোট পেয়ে বসে থাকেন প্রধান স্পিনার, তা হলে তাঁর ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। এমনিতেই সব চেয়ে ফিট ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি পড়েন না। সীমিত ওভারের দল থেকে তাঁর ব্রাত্য হয়ে পড়ার অন্যতম কারণ দুর্বল ফিটনেস এবং ফিল্ডিং। নেথান লায়নের উদাহরণ এসে পড়তে বাধ্য। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংকে দারুণ ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে লায়ন। অসম্ভব ভাল ফিটনেস! চলতি সিরিজের অন্যতম সেরা দ্বৈরথ ছিল লায়ন বনাম অশ্বিন। বিশ্বের সেরা অফস্পিনার কে? কিন্তু লায়ন যেখানে অস্ট্রেলিয়াকে জেতাচ্ছেন, তখন অশ্বিন ফিট হওয়ার জন্য লড়ছেন।

আরও পড়ুন: সমালোচকরা অনেক দূরে বসে আছে, তোপ শাস্ত্রীর

এক দিকে, অশ্বিনকে নিষ্প্রভ দেখাল। অন্য দিকে, দীর্ঘক্ষণ বল করে গেলেন রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁকে ব্যাটও করানো হল। পরিষ্কার ইঙ্গিত যে, অশ্বিন পারবেন না ধরে নিয়ে বাঁ হাতি অলরাউন্ডারকে তৈরি রাখা হচ্ছে। ভারতীয় শিবিরের দিক থেকে যা ইঙ্গিত, জাডেজাই খেলবেন। ইংল্যান্ডে চতুর্থ টেস্টে সাউদাম্পটনে সম্পূর্ণ ফিট না থাকলেও অশ্বিনকে খেলিয়ে ভুগতে হয়েছিল দলকে। মইন আলি পিচের ক্ষতকে ব্যবহার করে শেষ করে দেন কোহালিদের। কিন্তু অশ্বিন কোনও প্রভাবই সৃষ্টি করতে পারেননি। সাউদাম্পটন থেকে শিক্ষা নিয়েছেন কোহালিরা। তাই আধা-ফিট কোনও ক্রিকেটারকে আর তাঁরা খেলাতে চাইছেন না।

অশ্বিনকে নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট নেতিবাচক। সম্ভবত রবিবারেই তাঁর তলপেটের মাংসপেশিতে চোটের আর এক প্রস্ত স্ক্যান রিপোর্ট আসবে। তাতে তাঁর অবস্থা আরওই পরিষ্কার হয়ে যাবে। শাস্ত্রী এ দিন বলে গেলেন, ‘‘আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টা আমরা অশ্বিনের ফিটনেসের দিকে লক্ষ রেখে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব।’’ তবে তাঁর কথাতেও স্পষ্ট ইঙ্গিত, নেথান লায়ন বনাম আর অশ্বিন, এই দ্বৈরথ মেলবোর্নেও দেখতে পাওয়ার আশা ক্ষীণ।

অশ্বিনকে নিয়ে ডামাডোলের মধ্যেই প্রথম বার কোহালিদের নেটে ঢুকলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। শুরুতে পর-পর তিনটি নেটে ব্যাট করতে পাঠানো হল তিন ওপেনারকে। মুরলী বিজয়, কে এল রাহুল এবং মায়াঙ্ক। উইকেটের পিছন থেকে সতর্ক দৃষ্টিতে জরিপ করতে থাকলেন হেড কোচ শাস্ত্রী। প্রথম দিনের নেট প্র্যাক্টিসের যা রিপোর্ট, তাতে সসম্মানেই উত্তীর্ণ হয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়ের বেঙ্গালুরু থেকে উঠে আসা ২৭ বছরের তরুণ।

আরও পড়ুন: বিরাট-মন্ত্র, অস্ট্রেলিয়ায় সব সময়েই সেরাটা চাই

গত মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে দু’হাজারের উপরে রান করেছেন ডান-হাতি ওপেনার মায়াঙ্ক। ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে ডাবল সেঞ্চুরি আছে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট অন্তত আরও এক দিন নেটে তাঁকে দেখে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইবে। আপাতত বলে রাখা যায়, মেলবোর্নে কে এল রাহুলের সঙ্গী ওপেনার হিসেবে অভিষেকের ভালই সম্ভাবনা রয়েছে মায়াঙ্কের। তাঁর আগমনে বিদায় আসন্ন দেখাচ্ছে মুরলী বিজয়ের। গত দু’বছর ধরে বড় রান না থাকা সত্ত্বেও যাঁকে কার্যত বয়ে বেড়ানো হচ্ছে। রাহুল আপাতত বেঁচে গেলেও পৃথ্বী শ ফিরে এলে তাঁর জন্যও পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

শাস্ত্রীর মুখে এ দিন মায়াঙ্কের প্রশংসা শোনা গেল। ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করে এসেছে। নিশ্চয়ই সেই যোগ্যতা ওর মধ্যে রয়েছে,’’ বললেন হেড কোচ। একই সঙ্গে স্বীকার করে নিলেন, ওপেনিংয়ে ব্যর্থতা অবশ্যই চিন্তার কারণ। ‘‘অবশ্যই ওপেনিং নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। উপরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রান করতেই হবে। ওদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি নিশ্চিত, সেটাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুতই ওরা ফর্মে ফিরবে।’’

শাস্ত্রী-সহ ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে খুবই প্রভাবিত দেখাচ্ছে, আর এক তরুণকে নিয়ে। তিনি হনুমা বিহারী। ইংল্যান্ডে ওভালে এবং অস্ট্রেলিয়ায় এসে পার্‌থে তিনি যে রকম শৃঙ্খলা দেখিয়েছেন ব্যাট হাতে, তাতে মেলবোর্নেও ছয় নম্বরে নামার ব্যাপারে তিনি এগিয়ে। রোহিত শর্মা চোট সারিয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, এ দিন নেটে ব্যাটিংও করলেন। তবু ইঙ্গিত, রোহিত সুস্থ থাকলেও পার্‌থে লড়াকু ইনিংস খেলা বিহারীকে হারিয়ে তাঁর প্রথম একাদশে জায়গা করে নেওয়া কঠিন।

যত সময় যাচ্ছে, মনে হচ্ছে, এই অস্ট্রেলিয়া সফর ভারতীয় ক্রিকেটে প্রজন্ম বদলের মঞ্চও তৈরি করে দিচ্ছে। পৃথ্বী শ চোট না পেলে খেলতেন। মায়াঙ্ক আগরওয়াল এসে গেলেন। হনুমা বিহারী মন জয় করে নিয়েছেন। কুলদীপ যাদব তৈরি হচ্ছেন। কোহালির নেতৃত্বে গড়ে উঠছে নতুন ভারতীয় টেস্ট দল!

Cricket Test Border Gavaskar Trophy 2018 India Australia Ravichandran Ashwin Mayank Agarwal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy