Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ব্র্যান্ড যুদ্ধ

ব্র্যান্ডের দৌড়ে ধোনিকে সরিয়ে সিংহাসনে কোহালি

মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সময়টা বিশেষ ভাল যাচ্ছে না। মাঠে সিরিজ হারছেন। ক্রিকেট-বিশেষজ্ঞরা দাবি তুলছেন, অনেক হয়েছে। এ বার সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটেও বিরাট কোহালিকে অধিনায়ক করো। মাঠের বাইরের পৃথিবী— সেটাও ভাল যাচ্ছে না। সেখানেও এমএসডি-কে লড়তে হচ্ছে কোনও এক বিরাট কোহালিরই সঙ্গে!

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৪৭
Share: Save:

মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সময়টা বিশেষ ভাল যাচ্ছে না। মাঠে সিরিজ হারছেন। ক্রিকেট-বিশেষজ্ঞরা দাবি তুলছেন, অনেক হয়েছে। এ বার সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটেও বিরাট কোহালিকে অধিনায়ক করো। মাঠের বাইরের পৃথিবী— সেটাও ভাল যাচ্ছে না। সেখানেও এমএসডি-কে লড়তে হচ্ছে কোনও এক বিরাট কোহালিরই সঙ্গে!

পেপসিকো-র ঘটনাটা যেমন। দীর্ঘ এগারো বছর গাঁটছড়া অক্ষুণ্ণ থাকার তারা এমএস ধোনির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলল। নতুন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর নিবার্চন— তাও সমাপ্ত। এবং সেটা অন্য কেউ নন, বিরাট কোহালি! যে পরিবর্তন দেখার পর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, ক্রিকেটার ধোনির মতো ব্র্যান্ড ধোনিও কি স্লগ ওভারে ঢুকে পড়লেন? বিজ্ঞাপন বাজারে এমএসডি-র চাহিদার গ্রাফ কি এ বার নিম্নমুখী হবে দিনে দিনে?

কেউ বলছেন, এটাই স্বাভাবিক। টেস্ট ক্রিকেট আর খেলেন না ধোনি। মানে, বছরের বেশ কিছুটা অংশ তাঁকে ভারতের জার্সিতে আর দেখতে পান না দেশবাসী। চাহিদার বাজার তো আর এক থাকতে পারে না। কেউ কেউ আবার বলছেন, একটা পেপসিকো চলে গেল মানে হইচই ফেলে দেওয়ার কোনও মানে নেই। সংশ্লিষ্ট সংস্থা বরাবর তারুণ্যের উপর জোর দিয়ে এসেছে। বরাবর যুবসমাজকে টার্গেট করে এসেছে। তারা যে ক্রিকেট-ফর্মের শৃঙ্গে থাকা তরুণ কোহালিকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করবে, এতে আর আশ্চর্য কী? কিন্তু তাই বলে যে ব্র্যান্ড ধোনি চুরমার হয়ে গেল, ভাবার কোনও কারণ নেই। তাঁকে শুধু টার্গেট অডিয়েন্স পাল্টাতে হবে। পরিণতদের দুনিয়ায় ঢুকতে হবে।

ব্র্যান্ড এমএসডি কী হবে না হবে, সময় বলবে। কিন্তু একটা জিনিস এখনই বলে দেওয়া যায় যে, ধোনির ঘনিষ্ঠমহল পেপসিকো-র এমন সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নয়। কেউ কেউ দাবি করলেন যে, চুক্তি নিয়ে দু’পক্ষে মতনৈক্য হয়েছে বলেই পেপসিকো-র সঙ্গে ধোনি আলাদা হয়ে গিয়েছেন। বলা হচ্ছে, মাস দেড়েক আগে লঞ্চ হওয়া ব্র্যান্ড ‘সেভেন’ নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী হওয়া যায়। ধোনির ম্যানেজার অরুণ পাণ্ডেকে যোগাযোগ করা হলে বললেন, ‘‘ধোনির ব্র্যান্ড ভ্যালু প়ড়ছে বলে আমরা মনে করি না। এটা নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। বরং ধোনির সঙ্গে যে পার্টনারশিপে সেভেন নামে যে ব্র্যান্ড এসেছে, তা ভাল করবে বলেই আমরা মনে করি।’’

বিজ্ঞাপন-গুরু রাম রায়েরও মনে হচ্ছে যে, পেপসিকো চলে গেল বলে ধোনির ব্র্যান্ড ভ্যালু পড়ে যাবে, ভাবাটা ঠিক হবে না। ‘‘এটা একটা সিগন্যাল অবশ্যই। কিন্তু ধোনির ব্র্যান্ড ভ্যালু শেষ কোনও ভাবে বলা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে ব্র্যান্ডরা হয়তো ওকে নিয়ে আবার নতুন করে চিন্তাভাবনা করবে। কিন্তু ব্র্যান্ড ভ্যালু শেষ হয়ে যাবে না।’’ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ‘বেসলাইন’-এর ডিরেক্টর রামকৃষ্ণন আবার বললেন, স্বাভাবিক কারণেই কোহালিকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করেছে পেপসিকো। বললেন, ‘‘পেপসি এমন একটা ব্র্যান্ড যা সব সময় অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় যুবসমাজকে টার্গেট করে। সচিনও কম বয়সে পেপসির বিজ্ঞাপন করেছেন। ধোনির বয়স হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা তরুণ তারকা বিরাটকে বেছে নিয়েছে।’’

তবে বিপরীতধর্মী ধারণা আছে। বিজ্ঞাপন বাজারের একটা অংশের মনে হচ্ছে, মাঠের পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়ছে ধোনির বিজ্ঞাপনী জীবনে। বিজ্ঞাপন-বিশেষজ্ঞ শৌভিক মিশ্র যেমন বলে দিলেন, ‘‘ফ্যান বেস তৈরি হয় পারফরম্যান্সে। তাই পারফরম্যান্স পড়লে ফ্যান বেসেও প্রভাব পড়ে। ব্র্যান্ডের গ্রহণযোগ্যতাও কমে যায়। ধোনির কেরিয়ারর শেষের দিকে এখন। বিরাট তো অটোমেটিক চয়েস হবেই।’’ ধোনি, সচিন দু’জনের সঙ্গেই বিজ্ঞাপনী ছবি পরিচালনা করেছেন যিনি, সেই নরেন মুলতানির বক্তব্য খুব সহজ। সচিন তেন্ডুলকর, অমিতাভ বচ্চনরা ব্যতিক্রম। যাঁদের বয়স বাড়ে কিন্তু ভক্তদের কাছে চাহিদা পড়ে না। ব্র্যান্ড ভ্যালুও তাই থেকে যায় অটুট। কিন্তু সবাই তা নয়। সবার তা হয় না। মুলতানি শেষে যা বললেন, শুনলে ধোনি সমর্থকদের দুঃখ লাগবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোথাও যেন খুব প্রাসঙ্গিক। যুবরাজ সিংহকে নিয়ে এক বিখ্যাত বিজ্ঞাপনের বিখ্যাত উক্তি।

যব তক বল্লা চল রহা হ্যায়, ঠাঠ হ্যায়। যব বল্লা নহি চলেগা তো...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahendra Singh Dhoni Virat Kohli Brand war
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE