সময়ের সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক যে কতটা, তারকারা বোধহয় সবচেয়ে ভাল জানেন। নেইমারকে যার সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। মাত্র কয়েক দিনে কত দ্রুত পাল্টে গেল ব্রাজিলীয়র জীবন।
চরম নিন্দিত থেকে তুমুল বন্দিত।
রিও অলিম্পিক্স কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার সঙ্গে দেখা হওয়ার আগের পর্বকে নেইমার দ্রুত ভুলতে চাইবেন সম্ভবত। জীবনে অভিশাপের সময় আজ পর্যন্ত যে ক’বার এসেছে, তার অন্যতম। ব্রাজিল সমর্থকদের এত আদরের তিনি। অথচ প্রথম কয়েকটা ম্যাচে গোল না পাওয়ায় তাঁরাই তো বলতে শুরু করেছিলেন, এ ক্যাপ্টেন নয়। দশ নম্বর জার্সির যোগ্যও নয়। এমনকী তাঁর জার্সি থেকে নেইমার নামটা কেটে সেখানে ব্রাজিলের মহিলা ফুটবলার মার্তার নাম বসিয়ে দেওয়া হয়। ছবিটা ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু কলম্বিয়া ম্যাচের পরে? নেইমার সম্ভবত এখন সবচেয়ে সুখী ব্রাজিলীয়র নাম। লাতিন আমেরিকায় যে ম্যাচ সম্প্রতি দু’দেশের মর্যাদা যুদ্ধে দাঁড়িয়েছে সেখানে নেইমারের অসাধারণ ফর্ম গোটা ব্রাজিলকে ফের মুগ্ধ করে ছেড়েছে। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে নেইমার গোল করেছেন, করিয়েছেন। কোয়ার্টার-যুদ্ধে এতটাই উজ্জ্বল তিনি ছিলেন যে, বলাবলি শুরু হয়েছে নেইমারের অলিম্পিক্স তবে শুরু হল!
এবং হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে অলিম্পিক্স সেমিফাইনালে নামার আগে নেইমার-মোহে প্রবল আচ্ছন্ন ব্রাজিল টিমও।
গ্যাব্রিয়েল জেসাস। ব্রাজিলের অলিম্পিক্স কোচ রোজারিও মিকায়েল। প্রত্যেকের মুখে, কথাবার্তায় তিনি। প্রাক্-সেমিফাইনাল সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ব্রাজিল কোচ বলছেন, ‘‘নেইমারের বয়স কম। কিন্তু তাই বলে দায়িত্ব নেয় না, এমন নয়। যথেষ্ট নেয়। আর এত কম বয়সে ও তারকা হয়ে গিয়েছে কারণ নেইমার অসম্ভব প্রতিভাবান।’’ সঙ্গে আরও যোগ করেছেন, ‘‘ভুল সবাই করে। কিন্তু সেখান থেকে শেখাটাও আসল। নেইমার ভুল যদি করে থাকে অতীতে, তা থেকে শিখেওছে।’’ জেসাস আবার বলে দিয়েছেন, ‘‘নেইমার আমাদের তারকা। টিমের জন্য প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে অত মার খেয়েও কী খেলল!’’
মিকায়েল মনে করিয়ে দিতে চান নেইমারের দায়িত্ববোধের কথা। বলে দিচ্ছেন, ‘‘কলম্বিয়া ওকে ফাঁদে ফেলার প্রচুর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু একজন প্রকৃত অধিনায়কের মতো নিজেকে ঠান্ডা রেখে ব্যাপারটা সামলেছে। একবার মেজাজ হারিয়ে হলুদ কার্ড দেখেছে ঠিকই, কিন্তু পরে আর কোনও ঝুঁকিতে যায়নি।’’ কোচের এমন তির্যক কথাবার্তার পর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যে, কার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললেন তিনি? একজনকেই পাচ্ছে ফুটবলমহল। যিনি কয়েক দিন আগে নেইমারের মাঠ ও মাঠের বাইরের জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, একজন অধিনায়ককে যে দায়িত্ব দেখাতে হয়, যে ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় নিজেকে, তা দেখাতে পারছেন না নেইমার।
ভদ্রলোকের নাম? জিকো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy