দিল্লিতে বসে এই কলাম যখন লিখছি, তার কিছু ঘণ্টা পরেই আমাদের গোয়া টিমের প্রথম পর্বের সেমিফাইনাল ওদের সঙ্গে। ওরা মানে দিল্লি ডায়নামোস। এবং এটাই একেবারে সঠিক সময় আমাদের কাছে যে, এ বারের আইএসএলে আমরা কী করতে পেরেছি খতিয়ে দেখার। সঠিক সময় কারণ, এ মরসুমে আমরা নিজেদের প্রথম টার্গেটে কেবল পৌঁছেছি। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে আমাদের। কিন্তু যেহেতু টুর্নামেন্টের একটা পর্ব, মানে রাউন্ড রবিন লিগ শেষ হয়ে গিয়েছে, সে জন্য এ পর্যন্ত আমাদের পারফরম্যান্সের দিকে ফিরে তাকানোর সুযোগ তো একটা আছেই!
প্রি-সিজন ট্রেনিংয়ে আমার দল যখন দুবাইয়ে জড়ো হয়েছিল, ফোকাসটা ছিল টিমটাকে একটা চেহারা দেওয়া। প্রত্যেকটা ব্যক্তিগত দক্ষতাকে মিলেমিশে একটা দল করে তোলা। এমন এক দল যারা কেবল গোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজির আকাঙ্ক্ষারই যোগ্য হয়ে উঠবে তাই নয়। মাঠের ভেতরের মতো মাঠের বাইরেও একটা দল হয়ে উঠবে।
টিম গোয়া এই মুহূর্তে যে রকম চেহারায় আছে, তার জন্য আমার পুরো কোচিং স্টাফের প্রচুর অবদান। আমাদের বিশ্বাস করার প্রচুর কারণ রয়েছে যে, এ বছর আমরা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হতেই পারি। লিগ পর্বে যখনই দরকার পড়েছে আমাদের সিনিয়র প্লেয়াররা দলের সামনে উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আর যে উদাহরণ সিনিয়ররা খাড়া করেছে, তার যোগ্য অনুসরণ করার দায়বদ্ধতা আর ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছে দলের জুনিয়ররা। এফ সি গোয়া-র সেমিফাইনালে খেলতে পারাটা পুরোপুরি দলবদ্ধ প্রচেষ্টার রেজাল্ট। এবং আইএসএল টুর্নামেন্টের সূচি এতটাই টাইট যে, প্রত্যেকটা টুকরোটাকরা ব্যাপারও গুরুত্বপূর্ণ।
এ মরসুমে আমাদের জন্য যেমন কিছু দারুণ মুহূর্ত এসেছে, তেমনই কিছু কঠিন সময়ও। একগাদা চোটআঘাত, গোটা কয়েক হারের মুহূর্তটুহূর্তকে সামলে আমাদের দল সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিজেদের বিশ্বাস থেকে আমরা কোনও সময়ই নড়িনি। কখনই আমাদের প্রথম টার্গেট থেকে সরিনি।
এই সুযোগে আমি আমাদের দলের মালিক, ম্যানেজমেন্টকে কৃতিত্ব দিতে চাই, তাঁরা আমার আর আমার টেকনিক্যাল টিমের উপর আস্থা রেখেছেন বলে। সেই প্লেয়ারদের অকশন থেকে শুরু করে প্রি-সিজন ট্রেনিংয়ে সমুম্বই স্কোয়াডটা যখন একটা দল হিসেবে গড়ে উঠেছে, আগাগোড়া ম্যানেজমেন্ট আন্তরিক ভাবেই আমাদের পিছনে থেকেছেন।
সবশেষে আমাদের দলের হৃদপিণ্ড— আমাদের সমর্থকেরা! ট্রেনিং থেকে শুরু করে, ম্যাচের সময় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে, টিমের নানা প্রচারমূলক এবং সোশ্যাল অনুষ্ঠানে গোয়া সমর্থকদের যে উন্মাদনা দেখেছি বলার নয়। অসাধারণ! আশা করি নক আউটেও সেই সমর্থনই থাকবে আমাদের পিছনে। গোয়ায় আইএসএল ট্রফি নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের একটা অংশ গোয়া সমর্থকেরাও।
আমাদের সেমিফাইনালের পরের দিনই অন্য সেমিফাইনালের একটা দল আবার আইএসএলের সবচেয়ে ধারাবাহিক। আটলেটিকে দে কলকাতা— একটা টিম যারা লিগের শেষের দিকে এসে আরও দুর্দান্ত ছুটছে। যে জন্য লিগের শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে মুম্বইয়ের কাছে ওদের হার সত্ত্বেও গত বারের চ্যাম্পিয়নদের এতটুকু খাটো করে দেখা সম্ভব নয়। কলকাতার সবচেয়ে বড় শক্তি ওদের কোচ হাবাস। হাবাস ভারতীয় কন্ডিশনকে দারুণ ভাবে ধরেছেন। আর নিজের টিমের ভারতীয় ফুটবলারদের থেকে অনেক কিছু বার করে নিতে পেরেছেন। শনিবারের সেমিফাইনালে খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকব যে, মার্কো মাতেরাজ্জির জমাট ডিফেন্স, সঙ্গে আমার দেশের অ্যাটাকিং মিডিও ইলানো মিলেমিশে ইয়ান হিউম আর তার সতীর্থদের স্কিলকে সাইডলাইনের বাইরে করে দিতে পারে কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy