মাঠে আসার আগে হোটেলেই কি ইস্টবেঙ্গলের ট্রফি জয়ের আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল?
সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরুর কাছে ফাইনালে বিশ্রী হারের পর সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে লাল হলুদ শিবিরে। হারের যন্ত্রণায় আল আমনা, ইউসা কাতসুমিরা মাথা নিচু করে হোটলে ফিরলেও সেখানে বসেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক। ফোনে বলে দিলেন, ‘‘মাঠে যাওয়ার আগে হোটেলে দলের সভায় বিপক্ষের রণনীতি, আমাদের কীভাবে খেলা উচিত তা নিয়ে কিছু বলব বলেছিলাম। বসেও ছিলাম। কিন্তু খালিদ কিছু বলতেই দেয়নি। নিজে বলার পর সভা শেষ করে সবাইকে চলে যেতে বলে খালিদ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।’’ যাঁর বিরুদ্ধে সুভাষের তোপ সেই কোচ খালিদ জামিল অবশ্য হোটেলে ফিরেই নিজের ঘরে চলে গিয়েছেন। বন্ধ রেখেছেন ফোনও। তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সেমিফাইনালের পর থেকেই সুভাষ এবং খালিদের মধ্যে গত তিন দিন কথাবার্তা নেই। দলের ম্যানেজারের মাধ্যমেই সুভাষ যোগাযোগ রাখছিলেন খালিদের সঙ্গে। সুভাষ এ দিনের টিম লিখে পাঠান খালিদের কাছে। রিজার্ভ বেঞ্চেও কাকে বদলাতে হবে সুভাষ তা বলে পাঠিয়েছেন ম্যানেজারের মাধ্যমে। খালিদ সব পরামর্শ শোনেননি। এক ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘দেখলাম তো কোচ একাই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। টিডির কথা শুনছেন না।’’ জানা গেল, ম্যাচ চলার সময় দু’জন ফুটবলারকে পরিবর্তন করতে বললেও সুভাষের কথা শোনেনি খালিদ। উল্টে নামিয়ে দেন ডুডুকে। সুভাষ একবারের জন্যও ওঠেননি চেয়ার ছেড়ে। উল্টে বেঙ্গালুরু চার নম্বর গোল করার পর সুভাষের বাঁ ‘চোখ টেপা’র একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দলের হাল কেমন ছিল, সেটা বোঝাতে টিভি থেকে তুলে নিয়ে তা মুহূর্তে ছড়িয়ে দিয়েছেন কিছু ক্ষিপ্ত সমর্থক। শোনা যাচ্ছে, ভুবনেশ্বরে প্রচন্ড গরমে ঘামতে থাকা সুভাষের চোখে কপাল থেকে জল গড়িয়ে পড়ায় নাকি চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। টিভির ক্যামেরা তাক করেছিল রিজার্ভ বেঞ্চে লাল হলুদ টিডির দিকে। তখনই দেখা যায় এক সেকেন্ডের ওই ‘ছবি’।
ঘটনা যাই হোক, সুপার কাপের খেতাবও হাতছাড়া হওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল হোটেলে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। খালিদের সমালোচনায় মুখর তাঁর দলের টিডি।
হারের যন্ত্রণায় গুরবিন্দর সিংহ, কেভিন লোবোরা কথা বলতে চাননি। তবে ক্ষিপ্ত সুভাষ বলে দিলেন, ‘‘খালিদের সঙ্গে আমি আর কাজ করব না। ওকে নিয়ে চলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। পরের মরসুমে ও থাকলে আমি নেই।’’ সুভাষের বিস্ফোরক মন্তব্যে স্পষ্ট পরের মরসুমে খালিদের চাকরি থাকা কঠিন। কারণ ইতিমধ্যেই পুরো মরসুমের জন্য সুভাষকে দায়িত্বে রাখা হবে জানিয়ে দিয়েছেন কর্তারা। খালিদ অবশ্য নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলেননি। বলে দেন, ‘‘কে থাকবেন, কে যাবেন সেটা পরে ভাবা যাবে। ওসব নিয়ে ভাবিনি।’’
গত এক মাসের সুভাষ-খালিদের বিরামহীন ঝামেলার মধ্যেও ফাইনালের রেফারি শ্রীকৃষ্ণের সমালোচনায় এককাট্টা ইস্টবেঙ্গল শিবির। কেন বেঙ্গালুরুর গোলকিপার গুরপ্রীত সিংহ শুরুর দিকে গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে ফাউল করলেও রেফারি লালকার্ড দেখলেন না? বা আনসুমানা ক্রোমার নিশ্চিত গোল কেন অফসাইডের জন্য বাতিল হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লাল হলুদ কর্তারা। ইস্টবেঙ্গল কোচ অবশ্য বলেছেন, ‘‘গুরপ্রীতকে হয়তো লালকার্ড দেখানো যেত। তবে রেফারিও মানুষ। ইস্টবেঙ্গলের দশ জন হয়ে যাওয়া ও পেনাল্টিই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছে।’’ আর সুভাষের মন্তব্য, ‘‘দশ জনে এই বেঙ্গালুরুকে রোখা কঠিন। ছেলেরা লড়াই করেছে। সেমিফাইনালের পর থেকে খালিদ আবার নিজের মূর্তি না ধরলে হয়তো কিছু করা যেত। কী আর করা যাবে। কষ্ট হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy