লক্ষ্য: অলিম্পিক্সই পাখির চোখ জিনসন জনসনের। টুইটার
এক জন ক্রীড়াবিদের জীবনে চোট মানে একটা দুঃসহ অভিজ্ঞতা। কোনও, কোনও ক্ষেত্রে চোট আবার অন্ধকারও ডেকে এনেছে ক্রীড়াবিদের জীবনে। কিন্তু গত এশিয়ান গেমসে ১৫০০ মিটারে সোনাজয়ী ভারতীয় অ্যাথলিট জিনসন জনসনের জীবনে এই চোটই ‘আশীর্বাদ’ হয়ে দেখা দিয়েছে! জিনসন নিজেই বলছেন, ‘‘ভাগ্য ভাল চোটটা লেগেছিল। না হলে কী যে হত, কে জানে।’’
কী এমন ঘটনা ঘটল যে, জিনসনের জীবনে চোট এ রকম আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াল? গত বছর বার্লিন মিটে জাতীয় রেকর্ড ভেঙে রুপো পেয়েছিলেন জিনসন। সঙ্গে টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ছাড়পত্রও। তার পরেই চলে গিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোয়। যেখানে বিশেষজ্ঞ দূরপাল্লার দৌড়ের কোচ স্কট সিমন্সের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিলেন তিনি। চোট পেয়ে ফিরে না এলে জিনসনের এখন মার্কিন মুলুকেই থাকার কথা। ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের মধ্যে।
এই মুহূর্তে বেঙ্গালুরু সাইয়ে রয়েছেন জিনসন। সেখান থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘কোনও দিন ভাবিনি এক জন অ্যাথলিটের কাছে চোট একটা আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। আমার অ্যাকিলিস টেন্ডনে চোট লেগেছিল। ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশে ফিরে আসি। ঠিক করেছিলাম, রিহ্যাবের পরে আবার ফিরে যাব। কিন্তু তার পরে এই রকম ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কী হচ্ছে, তা তো সবাই দেখছেন। ভাবতেও ভয় লাগছে, ফিরে না এলে আমি এখন ওখানেই বন্দি থাকতাম।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন আট লক্ষের উপরে। সাই কেন্দ্রে বসে সে সব খবর রাখছেন জিনসন। এবং, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। ফোনে বলছিলেন, ‘‘কলোরাডোর উচ্চতা ছ’হাজার ফুট। প্রচণ্ড ঠান্ডা। ওখানে ফুসফুসের শক্তি এবং সহ্য ক্ষমতা বাড়ানোর ট্রেনিং করতাম। কিন্তু পায়ে চোটটা লেগে গেল। তার পরে ফিরে আসি।’’ ডিসেম্বরে বিয়ের তারিখ পাকা হয়ে গিয়েছিল জিনসনের। ঠিক ছিল, কিছু দিন দেশে থেকেই ফিরে যাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু চোট তাঁকে আটকে দেয়। মুম্বইয়ে চিকিৎসা হওয়ার পরে রিহ্যাব শুরু হয় বেঙ্গালুরুতে।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতা তিনি পেয়ে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এক বছর অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়াটা কি একটা ধাক্কা? জিনসন বলছেন, ‘‘মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি। এই অবস্থায় কোনও খেলাই হওয়া সম্ভব নয়। আমি এই একটা বছর নিজেকে আরও ভাল মতো তৈরি করার জন্য ঝাঁপাব।’’
সাইয়ে কী ভাবে চলছে তাঁর ট্রেনিং? জিনসনের জবাব, ‘‘আমাদের বাইরে যাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যা ট্রেনিং করতে হচ্ছে তা ইন্ডোরেই। বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ফিটনেসের উপরে এখন জোর দিতে। গ্রুপ ট্রেনিং বা জিমে একসঙ্গে যাওয়াও বারণ।’’ আপনাদের কি কোনও বিশেষ ‘গাইডলাইন’ দেওয়া হয়েছে? জিনসনের জবাব, ‘‘হ্যাঁ। সাই ডিরেক্টর এবং ট্রেনার আমার জন্য রুটিন বানিয়ে দিয়েছেন। আমি সেই রুটিন মেনে এখন চলছি।’’
দেশে ফিরে ডিসেম্বরের শেষে বিয়ে করেছিলেন জিনসন। এখন তাঁর পরিবার রয়েছে কেরলের গ্রামে। করোনা-আতঙ্কের বিরুদ্ধে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান এই তরুণ অ্যাথলিট। কিন্তু বাইরে বেরোনোর উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সোশ্যাল মিডিয়া মারফতই লড়াইয়ের বার্তা সবাইকে পৌঁছে দিচ্ছেন জিনসন জনসন।
আরও পড়ুন: দ্রুতই বুঝিয়ে দিল, বিশ্বকে শাসন করতে এসেছে বিস্ময় বালক
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy