Advertisement
E-Paper

রজার হয়তো ফিরবে, ক্ষতি প্রজ্ঞেশদের

এর আগে এক বার উইম্বলডন সঙ্কটের মুখে পড়েছিল। সেটা ১৯৭৩ সালে। ডেভিস কাপে না খেলতে চাওয়ার জন্য তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার এক নম্বর খেলোয়াড় নিকোলা পিলিচকে সাসপেন্ড করেছিল সে দেশের জাতীয় টেনিস সংস্থা।

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৬
ধাক্কা: উইম্বলডন বাতিল। ফেডেরারের প্রিয় প্রতিযোগিতাই হচ্ছে না।

ধাক্কা: উইম্বলডন বাতিল। ফেডেরারের প্রিয় প্রতিযোগিতাই হচ্ছে না।

এ রকম দিনও যে দেখতে হবে কখনও ভাবিনি। করোনাভাইরাসের জন্য গোটা ক্রীড়াবিশ্বই থমকে গিয়েছে। উইম্বলডনও বাতিল হয়ে গেল। উইম্বলডন কমিটিতে আমার কয়েক জন বন্ধু আছে। দিন দুয়েক আগে তাঁদের কাছে শুনছিলাম, উইম্বলডন বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ঠিক সেটাই হল।

এর আগে এক বার উইম্বলডন সঙ্কটের মুখে পড়েছিল। সেটা ১৯৭৩ সালে। ডেভিস কাপে না খেলতে চাওয়ার জন্য তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার এক নম্বর খেলোয়াড় নিকোলা পিলিচকে সাসপেন্ড করেছিল সে দেশের জাতীয় টেনিস সংস্থা। যা সমর্থন করেছিল আন্তর্জাতিক টেনিস সংস্থা। ফলে পিলিচের উইম্বলডনে নামার উপরেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। তখন সদ্য গঠিত পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের সংস্থা এটিপি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে উইম্বলডন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম ১৬ জন বাছাইয়ের ১২ জনই নাম তুলে নেয়। তবু সে বার রেকর্ড দর্শক হয়েছিল উইম্বলডনে। সেই পরিস্থিতির সঙ্গে এখনকার অবশ্য কোনও তুলনা চলে না। ভয়াবহ অবস্থা। গোটা বিশ্বে বন্ধ টেনিস। এর সব চেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা খেলোয়াড়দের উপরে।

ক্রিকেটে তবু বোর্ড আছে, ফুটবলে আছে ক্লাব। চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা সেখান থেকে একটা বেতন পায়। কিন্তু টেনিসে সেটা নেই। তারকা খেলোয়াড়দেরও সামর্থ্য আছে এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার। কিন্তু গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রথম রাউন্ড বা দ্বিতীয় রাউন্ডে যারা হেরে যায়, ৮০, ৯০, ১০০, ১১০, এ রকম র্যাঙ্কিং যাদের, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা খেলেই খরচ চালাতে হয় তাদের। যেমন আমাদের দেশেরই প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরনের র্যাঙ্কিং ১৩২। সুমিত নাগল রয়েছে ১২৭ নম্বরে। রামকুমার রমানাথন রয়েছে ১৮৬ নম্বরে। এদের মতো খেলোয়াড়দেরই খুব সমস্যা হবে। শুনছি এটিপি এই খেলোয়াড়দের সাহায্য করার জন্য একটা পরিকল্পনা নিচ্ছে। সেটা হলেই ভাল।

ফেডেরারের জন্যও খুব খারাপ হল। আশা করেছিল, এ বছর উইম্বলডন জিততে পারবে। কিন্তু প্রিয় গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামতে পারবে না এ বার। জানি না আরও এক বছর পরে উইম্বলডনে ফেডেরার খেলতে পারবে কি না। তখন ওর বয়স হয়ে যাবে প্রায় ৪০। এটা ঠিক আমাদের লিয়েন্ডারও ৪৬ বছর বয়েসে খেলে যাচ্ছে। কিন্তু ডাবলস আর সিঙ্গলস এক নয়। সিঙ্গলসে শরীরের উপরে প্রচুর ধকল পড়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ধকল সামলানো কঠিন হয়ে যায়। যদি পারে তা হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। গত বারও তো জোকোভিচের সঙ্গে ফাইনালে পাঁচ ঘণ্টা লড়াই করে জেতার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিল প্রায়।

নাদাল, জোকোভিচের জন্যও এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা সোজা হবে না। এখন তো সবাই ঘরবন্দি। ফিটনেস বাড়ানোর অনুশীলন ছাড়া কিছু করতে পারছে না। কিন্তু ফর্মে ফিরতে গেলে ট্রেনিংয়ের সঙ্গে ম্যাচও খেলতে হবে। তাও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। করোনার সংক্রমণ যদি রোখাও যায়, মানুষের মন থেকে আতঙ্ক মুছে যেতে অনেক সময় লাগবে। সহজে কেউই চাইবে না বিদেশে যেতে। আমার তো মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনও বাতিল হয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে যা অবস্থা, অগস্টে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যাবে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন। শুনলাম জুলাইয়ে ফের টেনিস টুর যদি শুরু হয়, তা হলে এটিপি নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত মরসুম টেনে নিয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক ভাবে যে সময়টায় মরসুম শেষ হয়ে যায়।

আমাদের ভারতীয় খেলোয়াড়দেরও সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। লিয়েন্ডারের পরিকল্পনা ছিল এ বার অলিম্পিক্স ও আরও কয়েকটা প্রতিযোগিতায় খেলে অবসর নেওয়ার। কিন্তু অলিম্পিক্সই তো পিছিয়ে গেল। ফলে লিয়েন্ডারকে হয়তো বিদায়ী মরসুম নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে। তবে যাই হোক না কেন, এখন সব চেয়ে জরুরি হল করোনার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকা। এই লড়াইয়ে প্রথম সেটটা হয়তো করোনা জিতেছে। আর কোনও সেট হাতছাড়া করা যাবে না। এই ম্যাচটা আমাদের জিততেই হবে।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Roger Federer Tennis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy