উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি: রয়টার্স।
কাউন্ট ডাউন শেষ। শেষ চার বছরের প্রতীক্ষারও।
আর কয়েক মিনিট পরেই মস্কোয় শুরু হতে চলেছে ফুটবলের মহাযজ্ঞ। প্রস্তুতি শেষ। শেষ প্রতীক্ষার পালাও।
আর কয়েক মিনিট। তারপর একটা বলকে নিয়েই মেতে উঠবে পড়ুয়া থেকে প্রবীণ। মুছে যাবে সমাজের হাজারো তুচ্ছ ফারাক, ঘুচে যাবে নানা বৈষম্য। আগামী এক মাস একটা খেলা ভুলিয়ে রাখবে সবাইকে। ওই বলটাই হয়ে উঠবে স্বপ্ন দেখার সঙ্গী।
মুহূর্তের কোনও ড্রিবল, চকিত রক্ষণচেরা থ্রু, স্কিলের ঝলকানি মন-ক্যানভাসে হয়ে যাবে বন্দি। মারাদোনার শতাব্দী সেরা গোলের মতোই মেসি, নেমার, রোনাল্ডোদের দিকে নজর থাকবে, তেমনই কোনও মুহূর্ত তাঁরা তৈরি করতে পারেন কি না দেখতে। ভক্তদের আকাশছোঁয়া প্রত্যাশার চাপও রয়েছে তাঁদের ওপর। পারবেন কি তাঁরা সব প্রতিকূলতা টপকে, অনন্ত চাপ সামলে চিরন্তন কোনও ফ্রেম উপহার দিতে?
থাকবে প্রার্থনাও। সবুজ ঘাসে হলদে ব্রাজিলের সাম্বার জন্য। নীল-সাদা জার্সিতে মেসির জন্য। রোনাল্ডোর পর্তুগালের জন্য। গত বারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, তিকিতাকা-ইনিয়েস্তার স্পেন, পোগবার ফ্রান্স, সুয়ারেজের ঊরুগুয়ে— লড়াই জমজমাট। কেউ হাসবেন, কেউ কাঁদবেন, কেউ ফুটবলকে বিদায় জানাবেন চিরতরে। জীবনেরই এক টুকরো জলছবি হয়ে উঠবে কাপ-যুদ্ধ। হাসি-কান্না চলবে হাত ধরাধরি করে। অংশ নেওয়া ৩২ দেশের মধ্যে একটির অধিনায়কের হাতেই তো উঠবে কাপ।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকাপ জ্বরে কাঁপছে ফুটবলনগরী
ভারতীয় সময় রাত সাড়ে আটটায় শুরু কাপ-যুদ্ধ। ওই সময় উদ্বোধনী ম্যাচে আয়োজক দেশ রাশিয়া মুখোমুখি হবে সৌদি আরবের। ভারতীয় সময়ের থেকে আড়াই ঘণ্টা পিছিয়ে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে তখন বাজবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা। তবে শুরুরও তো একটা শুরু থাকে। প্রদীপ জ্বলার আগে থাকে সলতে পাকানোর পর্ব। উদ্বোধনী ম্যাচের আগে সে ভাবেই থাকছে উদ্বোধন। যা হবে ম্যাচ শুরুর আধ ঘণ্টা আগে। অন্যান্য বার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ম্যাচের এক ঘণ্টা আগে হয়। মস্কোয় তা হচ্ছে না।
জমকালো অনুষ্ঠানে থাকবেন ইংল্যান্ডের রক মিউজিকের তারকা রবি উইলিয়ামস। থাকবেন রাশিয়ার সোপ্রানো আইডা গারিফুলিনা, স্পেনের কিংবদন্তি প্লাসিডো ডোমিনগো, পেরুর জুয়ান দিয়েগো ফ্লোরেজ। ৮০ হাজার দর্শকের সামনে দেখা দেবেন দু’বারের বিশ্বজয়ী ব্রাজিলের রোনাল্ডোও। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে, উদ্বোধনী ম্যাচের সাক্ষী হতে গ্যালারিতে ঢুকতে শুরু করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। যাঁদের সেই সৌভাগ্য় হয়নি, তাঁরা চোখ রাখবেন স্টেডিয়ামের বাইরের জায়ান্ট স্ক্রিনে। এশিয়া-ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়ায় কোটি কোটি ফুটবলপাগল আবার বসে পড়বেন টিভির সামনে। এই একমাস সিরিয়াল নয়, সিনেমা নয়, রিমোটে শুধুই ফুটবলের চ্যানেল। তাতে ঘরে ঘরে গৃহযুদ্ধ হলেই বা!
চার বছর অন্তর আসে এই ইভেন্ট। ফুটবলজ্বর সর্বগ্রাসী তো হবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy