Advertisement
E-Paper

নরসিংহের সততা নিয়েই প্রশ্ন তুলল লুসানের আদালত

অলিম্পিক্সে নিজের ইভেন্টে নামার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ডোপিংয়ের দায়ে নির্বাসনের লজ্জা তো ছিলই। এ বার লুসানের কোর্ট অব আর্বিট্রেশনের (ক্যাস) রায়ের সম্পূর্ণ বয়ানে আরও বিপর্যস্ত কুস্তিগির নরসিংহ যাদব। ক্যাস নাকি নরসিংহের সততা নিয়েই এক রকম প্রশ্ন তুলেছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪৩

অলিম্পিক্সে নিজের ইভেন্টে নামার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ডোপিংয়ের দায়ে নির্বাসনের লজ্জা তো ছিলই। এ বার লুসানের কোর্ট অব আর্বিট্রেশনের (ক্যাস) রায়ের সম্পূর্ণ বয়ানে আরও বিপর্যস্ত কুস্তিগির নরসিংহ যাদব।

ক্যাস নাকি নরসিংহের সততা নিয়েই এক রকম প্রশ্ন তুলেছে। পালোয়ান নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বললেও ক্যাসের বক্তব্য, ‘‘নরসিংহের মূত্রে নিষিদ্ধ মেথানডিয়েনোন যে মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে, সেটা একমাত্র সরাসরি ট্যাবলেট খেলেই সম্ভব। ট্যাবলেট গুঁড়ো করে পানীয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয়ে থাকলে মূত্রে স্টেরয়েডের পরিমাণ এত বেশি হত না।’’

তাঁকে ফাঁসানোয় প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে সুশীল কুমারের ঘনিষ্ঠ, জীতেশ নামে এক উঠতি কুস্তিগিরের বিরুদ্ধে সোনপত থানায় আফআইআর করেছেন নরসিংহ। ভারতীয় ডোপ বিরোধী সংস্থা নাডা-র শুনানিতে তিন জন সাক্ষী বয়ানও দেন যে, জীতেশকে তাঁরা নরসিংহের খাবারে গুঁড়ো মেশাতে দেখেছিলেন।

ক্যাস কিন্তু সাফ জানিয়েছে তাদের মতে, এর সবটাই অনুমান, পরোক্ষ প্রমাণ। নরসিংহের আইনজীবীরা বা ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন অকাট্য তথ্যের ভিত্তিতে ষড়যন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। বরং ক্যাস গুরুত্ব দিয়েছে কানাডার ডোপ বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান আয়োটের বিশ্লেষণে।

আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স সংস্থার ডোপিং কমিশনের সদস্য এবং মন্ট্রিয়লের ওয়াডা গবেষণাগারের ডিরেক্টর আয়োটে জানিয়েছেন, মেথানডিয়েনোন খাওয়ার দু-তিন দিনের মধ্যে মূত্রে তার মেটাবলাইটের ঘনত্ব বাড়তে পারে। কিন্তু তার পর ক্রমশ কমে যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘পঁচিশ জুনের মূত্র নমুনায় নরসিংহের শরীরে যে পরিমাণ মেথানডিয়েনোন ছিল, পাঁচ জুলাইয়ের নমুনায় সেটা পাঁচ গুণ বাড়ে। এটা তখনই সম্ভব যদি সরাসরি ট্যাবলেট খাওয়া হয়। এবং এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট এক বারের বেশি ট্যাবলেট খাওয়া হয়েছে।’’

আরও বলা হয়, নরসিংহের রুমমেট সন্দীপ যাদবের মূত্রে ডোপের যে মাত্রা মিলেছে তা থেকে পরিষ্কার দুই কুস্তিগির একই দিনে নিষিদ্ধ ওষুধ খাননি। ট্রেনিংয়ের সময় পানীয়ে ওষুধ মেশানোর তত্ত্ব তাই খাটে না।

জীতেশ ২৩-২৪ জুন তাঁর পানীয়ে ওষুধ মেশান বলে নরসিংহের দাবি। আয়োটের বিশ্লেষণ, তার প্রভাব পঁচিশ জুনের মূত্র নমুনায় থাকলেও জুলাইয়ের নমুনায় মাত্রা কমা উচিত ছিল। বদলে বহুগুণ বেড়েছে। যার মানে, ওষুধ দ্বিতীয়বার খাওয়া হয়। নরসিংহের আইনজীবী বলেছিলেন, হয়তো পানীয়ে একাধিক বার ওষুধ মেশানো হয়েছিল। ক্যাস প্যানেল যে যুক্তি মানেনি। নাডা জানিয়েছিল, ওয়াডার কাছে আপিল করার জন্য তাদের একুশ দিন পাওয়া উচিত। তার আগে ক্যাস হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু তাও গ্রাহ্য হয়নি। ক্যাস প্যানেল বলে, ‘‘নরসিংহের দাবি কেউ ২৩-২৪ জুন পানীয়ে ওষুধ মেশায়। যার কোনও প্রমাণ নেই। শুধু এক ব্যক্তি তারও দিন কুড়ি আগে ওঁর খাবারে কিছু মেশানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানা গিয়েছে। তাই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অসম্ভব না হলেও আমাদের কাছে যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি।’’ সঙ্গে বলা হয়, ‘‘অধ্যাপিকা আয়োটের বিশ্লেষণের পাল্টা যুক্তি থাকতে পারে। কিন্তু আমরা ওঁর যুক্তি মানছি। আমাদের মনে হয় কুস্তিগির নিজে সব জেনেশুনেই নিষিদ্ধ ট্যাবলেট খেয়েছিলেন।’’

এই অবস্থায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের রাস্তা আরও কঠিন হয়েছে নরসিংহের। ভারতীয় কুস্তির কর্তারা ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন। লুসানের আদালতও বলেছে, জীতেশ বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে নরসিংহ শাস্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারেন। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত অলিম্পিক্সের হতাশা, চার বছরের নির্বাসন এবং তাঁর সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হবে নরসিংহকে।

Narsingh Yadav Rio Olympics Court Of Arbitration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy