দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক এডেন মার্করাম। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে তাঁর ১৩৬ রানের ইনিংসেই শেষ হয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার আশা। দেশকে ২৭ বছর পর আইসিসি ট্রফি দেওয়ার পর মার্করামের আশা, দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।
টেস্ট বিশ্বকাপ জয়ের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মার্করাম বলেছেন, ‘‘ক্রিকেটের এই ফরম্যাট বরাবরই আমার সবচেয়ে প্রিয়। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কখন কোন ধরনের ক্রিকেট খেলব, এটা আমাদের হাতে থাকে না। যখন যে ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলতে বলা হয়, তখন সেটাই খেলতে হয়। আমার মতে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট ক্রিকেটকেই প্রথমে রাখা উচিত। ক্রিকেট দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে জানি। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ ক্রিকেটারদের তুলে আনার জন্য টেস্টই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের হয়ে টেস্ট খেলার লক্ষ্য নিয়েই এগোনো উচিত ওদের।’’ মার্করাম আরও বলেছেন, ‘‘কে কত দিন খেলবে, সেটা সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের উপর নির্ভর করে। এটা আলাদা বিষয়। টেস্ট খেলাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত সেরা খেলোয়াড়দের। আমি এটাই বিশ্বাস করে এসেছি প্রথম থেকে।’’
বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে জিততে পারে না দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর একের পর এক ফাইনালে উঠেও হেরে গিয়েছেন প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে সেঁটে গিয়েছিল ‘চোকার্স’ তকমা। টেস্ট বিশ্বকাপ জয় শাপমুক্তি ঘটিয়েছে। মার্করাম বলেছেন, ‘‘অতীতে আমাদের যে সব প্রশ্ন করা হয়েছে, আশা করি সব প্রশ্নের উত্তর আমরা দিতে পেরেছি। আমার মতে, টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতাই সবচেয়ে কঠিন। কারণ, দীর্ঘ দিন ধারাবাহিক ভাবে ভাল ক্রিকেট খেললে তবেই এটা জেতা যায়।’’ সরাসরি না বলেও মার্করাম বুঝিয়ে দিয়েছেন, লাল বলের ক্রিকেটেই তাঁরাই এখন সেরা।
ঐতিহাসিক জয়ের মুহূর্তে মাঠে না থাকতে পারার আক্ষেপ রয়েছে মার্করামের। তিনি বলেছেন, ‘‘থাকতে পারলে ভালই হত। কিন্তু আমি তো আমার মতো। আউট হওয়ার পর নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছিল। তবে কিছু স্মৃতি তো থাকবেই।’’ নিজের শতরানের ইনিংস নিয়ে বলেছেন, ‘‘এত মূল্যবান রান কখনও করিনি। বিষয়টা একটু অদ্ভুত। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর সব ঠিকঠাক হল। কিছুটা ভাগ্যও দরকার হয় আসলে। লর্ডস এমন একটা মাঠ, যেখানে সকলে খেলতে চায়। শুধু আমাদের জন্য নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকদের জন্যও বিশেষ একটা দিন।’’
২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ছিলেন মার্করাম। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে মার্করামকে বলা হয়েছিল, তিনটি শব্দে নিজেকে ব্যাখ্যা করতে। মার্করামের উত্তর ছিল, ‘‘ইতিবাচক, আত্মবিশ্বাসী এবং দায়িত্ববান।’’ সে বারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন মার্করামেরা। ১১ বছর পর লর্ডসের ফাইনালেও হুবহু একই মার্করামের দেখা পেয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। এ বার ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার তিনি।