এজবাস্টনে ম্যাচ জেতানো বোলিংয়ের পর বোলার আকাশদীপের গলায় শোনা গিয়েছিল তাঁর দিদির ক্যানসারের কথা। জানিয়েছিলেন, প্রত্যেক বার বল করার সময় দিদির মুখ তাঁর চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এ বার জানা গেল, সেই দিদি, অর্থাৎ অখণ্ড জ্যোতি সিংহের চিকিৎসা করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। সঙ্গে রয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যানেজমেন্ট এবং বাংলা রাজ্য দলও।
এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন আকাশদীপের ছোটবেলার বন্ধু বৈভব কুমার। সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’-কে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “প্রথম পর্যায়ে ক্যানসার ধরা পড়েছিল। লখনউ দল খুব সাহায্য করেছে। বাইরে থেকে চিকিৎসক আনা হয়েছে। লখনউয়ে ভাল চিকিৎসা পেয়েছে। মুম্বইয়েও বাইরে থেকে চিকিৎসকেরা এসেছিলেন। বিসিসিআই, লখনউ দল পরিচালন সমিতি, এমনকি যে রাজ্যের হয়ে আকাশ খেলে সেই বাংলাও সাহায্য করেছে। এখন দিদি ঠিক আছেন। কোনও সমস্যা নেই।”
এজবাস্টনে খেলা শেষের পর মাঠেই ভারতের টেস্ট ক্রিকেটার (এই সিরিজ়ে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় রয়েছেন) চেতেশ্বর পুজারার সঙ্গে কথা বলেন আকাশ। সেখানেই উঠে আসে তাঁর পরিবারের কথা। পুজারা আকাশকে জিজ্ঞাসা করেন, “খেলা শেষে স্মারক হিসাবে স্টাম্প আর বল নিয়েছ। এটা নিশ্চয়ই বাড়ি ফিরে সকলকে দেখাবে।” জবাবে আকাশ বলেন, “একটা কথা আমি কাউকে বলিনি। আমার বড় দিদি আজ দু’মাস ধরে ক্যানসারে ভুগছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি ওর মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। প্রত্যেকটা বলের সময় আমার চোখের সামনে ওর মুখটা ভেসে উঠছিল। আমি ওর জন্য উইকেট পেতে চেয়েছিলাম। ওর কথা ভাবছিলাম। ওর মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এই জয়টা ওর জন্য।” আকাশ যখন এই কথা বলছিলেন, তখন তাঁর চোখে জল। সেই সঙ্গে মুখে হাসি। তাঁকে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন পুজারাও। তিনি প্রার্থনা করেন, যাতে আকাশের দিদি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুন:
পরের দিনই ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জ্যোতি নিজে জানান, ভাইয়ের এই পারফরম্যান্সে তিনি কতটা গর্বিত। তিনি বলেন, “দেশকে ও গর্বিত করেছে। ১০ উইকেট নিয়েছে। আমি ভাইকে নিয়ে গর্বিত। ওকে একটা কথাই বলেছি। আমি ঠিক আছি। আমার জন্য চিন্তা করতে হবে না। শুধু এ ভাবেই দেশকে জেতা।” জ্যোতি জানিয়েছেন, তাঁর ক্যানসার এখন তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এখনও অন্তত ছ’মাস তাঁর চিকিৎসা চলবে।