আগামী দিনে বদলের ইঙ্গিত ভারতীয় ক্রিকেটে। ধকলের কারণে ইংল্যান্ডে তিনটে টেস্ট খেলেছেন জসপ্রীত বুমরাহ। অতীতেও ধকলের কারণে বিশেষ বিশেষ সিরিজ় থেকে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাকে বিশ্রাম নিতে দেখা গিয়েছে। সেই দিন হয়তো এ বার শেষ হতে চলল। তারকা সংস্কৃতি নির্মূল করার লক্ষ্যে কোচ গৌতম গম্ভীর ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর। তাঁদের হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচটা টেস্টই খেলেছেন সিরাজ। তিনি একমাত্র ভারতীয় পেসার যিনি সবগুলো টেস্ট খেলেছেন। সবচেয়ে বেশি ১৮৫.৩ ওভার বল করেছেন। প্রতি স্পেলে সমান উদ্যমে বল করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সিরাজের এই ধকল সামলানোর ক্ষমতা বাকিদের মধ্যেও দেখতে চান গম্ভীরেরা। তাই এর পর কে কোন ম্যাচ খেলবেন, কোন ম্যাচে বিশ্রাম নেবেন, সেই সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারেরা নিজে নিতে পারবেন না। কারও যদি সত্যিই বিশ্রামের প্রয়োজন হয় তা হলে মেডিক্যাল দল ও ফিজিয়োর সঙ্গে কথা বলে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন কোচ ও নির্বাচক প্রধান।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক আধিকারিক বলেছেন, “এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের বার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা তিন ফরম্যাটেই খেলে, তারা কোন ম্যাচ খেলবে, কোন ম্যাচ খেলবে না তার সিদ্ধান্ত নিজে নেয়। সেটা আর নিতে দেওয়া হবে না।”
আরও পড়ুন:
তবে তার মানে এই নয় যে কারও শরীর না দিলেও তাঁকে জোর করে খেলানো হবে। ওই আধিকারিক বলেছেন, “তার মানে এই নয় যে ধকল সামলানো হবে না। অবশ্যই হবে। বিশেষ করে জোরে বোলারদের ধকলের দিকে খেয়াল রাখতেই হবে। কিন্তু ধকলের দোহাই দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিশ্রাম নেওয়া যাবে না। পুরো বিষয়টা কোচ ও প্রধান নির্বাচক দেখবেন।” শুধু সিরাজ নন, কাঁধে চোটের পরেও টানা বল করে গিয়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। সেই বিষয়টাও গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন গম্ভীর।
ইংল্যান্ডে বুমরাহ যে দুটো টেস্ট খেলেননি সেই দুটো ম্যাচই জিতেছে ভারত। সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, আকাশদীপেরা দেখিয়ে দিয়েছেন, বুমরাহকে ছাড়াও তাঁরা জিততে পারেন। সেই কারণেই তারকা নির্ভরতা আরও কমাতে চাইছে ভারত। এর আগে ক্রিকেটারদের একসঙ্গে বাসে করে হোটেল ও মাঠে যাওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন গম্ভীর। আলাদা করে রাঁধুনি নিয়ে যাওয়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এ বার শরীরের ধকলের অজুহাত দিয়ে না খেলার দিকেও নজর দিচ্ছেন তিনি। গম্ভীর এমন একটা সংস্কৃতি আনতে চাইছেন, যেখানে দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন। সেই পথেই এই বদল হতে পারে ভারতীয় ক্রিকেটে।