লক্ষ্মীরতন শুক্ল। —ফাইল চিত্র।
গত বারের সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে প্রথম দেখা গিয়েছিল ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম। ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় ম্যাচের মাঝে প্লেয়ার বদলে ফেলার সেই নিয়ম গত আইপিএলেও ব্যবহার করা হয়। এ বারের মুস্তাক আলিতেও সেই নিয়ম ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। অনেকেই মনে করছেন এর ফলে অলরাউন্ডারদের গুরুত্ব কমে যাবে। এটা মানলেন না বাংলার ক্রিকেট দলের কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
ভারতের হয়ে তিনটি এক দিনের ম্যাচ খেলা বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক বললেন, “ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার একেবারেই অলরাউন্ডারদের ক্ষতি করবে না। এই নিয়ম ক্রিকেটের উন্নতির জন্য। সব ক্ষেত্রেই এটা হয়। নতুন কিছু এলে মনে করা হয় যে, পুরনো জিনিস আর থাকবে না। সেটা একেবারেই সত্যি নয়। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের ফলে ক্রিকেট আরও উন্নতি করবে, তাতে অলরাউন্ডারদের ক্ষতি হওয়ার কোনও কারণ নেই।”
যে মুস্তাক আলি ট্রফিতে এই নিয়ম প্রথম চালু হয়েছিল, এ বারও সেই প্রতিযোগিতা দিয়েই মরসুম শুরু হবে। ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এ বারের মুস্তাক আলি ট্রফি। গত বার এই প্রতিযোগিতায় ১৪ ওভারের পর ক্রিকেটার পরিবর্তন করার নিয়ম চালু হয়েছিল। আইপিএলের সময় নিয়ম বদল করা হয়। বলা হয়, যে কোনও সময় ক্রিকেটার বদল করা যাবে। যা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন দল এক জন বাড়তি বোলার বা ব্যাটার খেলানোর সুবিধা নিয়েছিল। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রাক্তন অলরাউন্ডার লক্ষ্মী বললেন, “এ বারের আইপিএলে শুভমন গিল সব থেকে বেশি রান করেছে। অনেক ম্যাচেই গুজরাত টাইটান্স শুভমনকে শুধু ব্যাটিং করিয়েছে। ফিল্ডিং করায়নি। এটা তো বড় সুবিধা।’’
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক পন্টিং কিছু দিন আগে বলেছিলেন, ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম চালু হওয়ায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অলরাউন্ডারের গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে। তিনি গত আইপিএলে ফ্যাফ ডুপ্লেসির উদাহরণ দিয়েছিলেন। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ডুপ্লেসিকে বেশ কিছু ম্যাচে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। ডুপ্লেসির চোট থাকায় তিনি ফিল্ডিং করতে পারতেন না। সেই কারণে বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক করে ডুপ্লেসিকে শুধু ব্যাট করার সময় নামাত আরসিবি। অনেক দলই ব্যাটার বা বোলারকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নিজেদের সুবিধা মতো নামাত। সেই কারণেই পন্টিং বলেছিলেন, “ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের কারণে অলরাউন্ডারের প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। ব্যাটার বা বোলারকে পরিবর্ত হিসাবে নামিয়ে দেওয়া যাবে।”
কিন্তু লক্ষ্মী সেটা মনে করেন না। তাঁর যুক্তি, এ বারের আইপিএলে আন্দ্রে রাসেল, হার্দিক পাণ্ড্য, রবীন্দ্র জাডেজা, স্যাম কারেনদের গুরুত্ব একটুও কমেনি। তাঁরা স্বমহিমায় খেলে গিয়েছেন। তিনি বললেন, “অলরাউন্ডারদের গুরুত্ব কমবে না। মুস্তাক আলি ট্রফিতে আগের বারও এই নিয়ম ছিল। এ বারেও থাকছে। এই নিয়মকে মাথায় রেখেই দল গড়া হবে।” বাংলার অলরাউন্ডার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭টি ম্যাচে ৬২১৭ রান করেছেন, ১৭২টি উইকেট নিয়েছেন। লিস্ট এ ক্রিকেটেও ১৪১টি ম্যাচ খেলেছেন লক্ষ্মী। করেছেন ২৯৯৭ রান, নিয়েছেন ১৪৩টি উইকেট।
মুস্তাক আলির জন্য অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে বাংলা। বাংলা দল আপাতত ফিটনেস বাড়ানোর অনুশীলন করছে। আরও কয়েক সপ্তাহ সেই অনুশীলন চলবে। তার পর ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের অনুশীলন করবে। বাংলা দল মরসুম শুরুর আগে ম্যাচ অনুশীলনে জোর দিচ্ছে। সেই কারণে পুদুচেরিতে আটটি দলের একটি প্রতিযোগিতায় খেলতে পারে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় বাংলা এবং পুদুচেরি ছাড়াও খেলতে পারে বিদর্ভ, মহারাষ্ট্রের মতো দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy