আইপিএল শুরুর আগে ক্রিকেটারদের আপত্তিতে ধারাভাষ্যকারদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন ইরফান পাঠান। এ বার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) রোষে হর্ষ ভোগলে এবং সাইমন ডুল। আইপিএলে তাঁরা ইডেন গার্ডেন্সের বাকি ম্যাচগুলিতে আর ধারাভাষ্য দিতে পারবেন না। পিচ প্রস্তুতকারক (কিউরেটর) সুজন মুখোপাধ্যায়ের সমালোচনা করায় তাঁদের ইডেনে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানায় ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি) ।
সমস্যার সূত্রপাত শুরু হয় আইপিএলের প্রথম ম্যাচের পর। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে হারের পর কেকেআর অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে পিচ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। প্রত্যাশামতো স্পিন সহায়ক পিচ না পাওয়ার কথা বলেছিলেন। যা শুনে সুজন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ইডেনের পিচ সম্পূর্ণ ঘূর্ণি করা সম্ভব নয়। অন্তত যত দিন তিনি দায়িত্বে থাকবেন, তত দিন সম্ভব নয়।
তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোগলে এবং ডুল। এক সাক্ষাৎকারে ডুল বলেছিলেন, ‘‘স্টেডিয়ামের জন্য টাকা দেওয়ার পরও পছন্দমতো পিচ না পেলে ঘরের মাঠ বদল করে ফেলুক দল। খেলা নিয়ে মতামত দেওয়া কিউরেটরের কাজ নয়। তার জন্য তিনি টাকা পান না।’’ ভোগলে বলেছিলেন, ‘‘একটা দল ঘরের মাঠে খেললে, তাদের ঘরের মাঠের সুবিধা পাওয়া উচিত। কেকেআর বোলারদের জন্য পিচের কথা বলছে। ওদের সেই ধরনের পিচ পাওয়া উচিত। ইডেনের কিউরেটর পিচ পরিবর্তন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’
তাঁদের এই বক্তব্য ভাল ভাবে নেননি সিএবি কর্তারা। কারণ, বোর্ডের নির্দেশ মেনেই পিচ তৈরি করা হয় ইডেনে। নির্দিষ্ট বিধি মেনে চলা হয়। আইপিএল শুরুর আগে বিসিসিআই পিচ প্রস্তুতকারীদের নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল। দলগুলির পছন্দমতো পিচ তৈরির কথা সেখানে লেখা ছিল না। ঘূর্ণি পিচ তৈরির নির্দেশও ছিল না। সুজনের পাশে দাঁড়িয়ে বিসিসিআইয়ের কাছে ভোগলে এবং ডুলকে ইডেনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায় সিএবি। চিঠি দিয়ে বলা হয়, পিচ প্রস্তুতকারীর সমালোচনা করে সংস্থাকেই অপমান করেছেন দুই ধারাভাষ্যকার। তাঁদের যেন আর ইডেনের ম্যাচগুলিতে ধারাভাষ্য দিতে দেওয়া না হয়।
আরও পড়ুন:
সিএবির অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিসিসিআই কর্তারা। ভোগলে এবং ডুলকে ইডেনে আর ধারাভাষ্য করতে না দেওয়ার দাবিতে নীতিগত সমর্থন রয়েছে বোর্ড কর্তাদের একাংশের। এপ্রিলের শেষ দিকে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে। কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম গুজরাত টাইটান্সের ম্যাচের জন্য ধারাভাষ্যকারেরা কলকাতায় চলে এসেছেন রবিবারই। সেই দলে জায়গা হয়নি ভোগলে এবং ডুলের। মনে করা হচ্ছে, বার্তা গিয়েছে আইপিএলের সম্প্রচারকারী টেলিভিশন চ্যানেলের কাছেও। ফলে ইডেনে আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলিতে ভোগলে এবং ডুলকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। সেই তালিকায় থাকছে আইপিএল ফাইনালও।