পুরো দিন প্রায় উত্তেজনাহীন ক্রিকেটের পরে শেষ ওভারে এসে সময় নষ্ট করা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল লর্ডস। উত্তেজনা এতটাই বেড়ে যায় যে, আঙুল উঁচিয়ে ইংল্যান্ডের ওপেনার জ়াক ক্রলির দিকে তেড়ে যান ভারত অধিনায়ক শুভমন গিল। ক্রলিকেও দেখা যায়, পাল্টা আঙুল দেখিয়ে শুভমনকেকিছু বলছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে। ইংল্যান্ডের ওপেনাররা যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন মিনিট আটেক খেলা বাকি ছিল। টেনেটুনে দু’টো ওভার হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু শুরু থেকেই সময় নষ্টের খেলায় মেতে ওঠেন ক্রলি। যা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। গিল, সিরাজরা ছুটে যান ক্রলির দিকে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে দেখা যায় দু’তরফে।আম্পায়াররা এসে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। মিনিট দু’য়েক সময় নষ্ট হওয়ার পরে বুমরা পঞ্চম বলটি করেন। সে বল লাগে ক্রলির গ্লাভসে। সঙ্গে সঙ্গে ফিজ়িয়োকে ডেকে পাঠান ক্রলি। বুমরা, গিলরা এগিয়ে এসে হাততালি দিতে থাকেন। আরও মিনিট খানেক সময় নষ্ট হওয়ার পরে শেষ বলটি করেন বুমরা। বল উইকেটকিপারের হাতে যাওয়া মাত্র প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটতে শুরু করেন ক্রলি।
দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কে এল রাহুল বলেন, ‘‘এটা খেলারই অঙ্গ। আমি নিজেও এক জন ওপেনার। তাই বুঝতে সমস্যা হয়নি যে শেষ পাঁচ মিনিট কী চলেছে মাঠে।’’ রাহুলের ইঙ্গিত, শেষবেলায় একটার বেশি ওভার খেলতে চাননি ইংল্যান্ডের ওপেনাররা। তবে ইংল্যান্ড শিবির থেকে পাল্টা বলা হয়েছে, ভারতীয় দলও আগের দিন সময় নষ্ট করেছে। ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ টিম সাউদি সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেন, ‘‘আমি জানি না, ভারতীয়রা কী নিয়ে অভিযোগ করছিল। শুভমন তো প্রায়ই মাঠে শুয়ে পড়েশুশ্রুষার জন্য।’’
ক্রলি চোট পাওয়ার পরে দেখা যায়, শুভমন ইংল্যান্ড ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে ‘ইমপ্যাক্ট সাব’-এর ইশারা করছেন। ভারত অধিনায়ক সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছিলেন, ক্রলি আহত হয়ে মাঠ থেকে উঠে যেতে চাইছেন। ক্রলির আঙুলের চোট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাউদি বলেন, ‘‘চোট কতটা গুরুতর, তা দেখা হচ্ছে।’’ মাঠ থেকে বেরোনোর সময় ক্রলির সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন মহম্মদ সিরাজ। অন্য ওপেনার বেন ডাকেট এসে সিরাজকে সরিয়ে নেন।
এ দিন লর্ডসে নিজের দ্বিতীয় শতরান করেন রাহুল। দিলীপ বেঙ্গসরকরের পরে দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে লর্ডসে একাধিক শতরান করলেন তিনি। রাহুল বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। এতে ক্ষিপ্রতা অনেকটাই বেড়েছে। ফর্মূলা ওয়ানের কোচেদেরও সাহায্য নিয়েছি। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং উপভোগ করি। পুরো কেরিয়ার জুড়ে ধারাবহিকতার সন্ধান করেছি। সৌভাগ্যক্রমে সেই ধারবাহিকতা এখন পেয়েছি।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)