Advertisement
০৩ মে ২০২৪
IPL

IPL: ছদ্মবেশী ক্রিকেটার, ভুয়ো আম্পায়ার! গুজরাতের ‘নকল’ আইপিএল দেখে চোখ কপালে পুলিশের

গুজরাতের প্রত্যন্ত গ্রামে রমরমিয়ে চলছিল ‘আইপিএল’! সেই দেখেই রাশিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে ক্রিকেট ম্যাচে টাকা লাগাতেন সে দেশের মানুষরা।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২২ ১৮:৫৩
Share: Save:

গুজরাতের প্রত্যন্ত গ্রামে রমরমিয়ে চলছিল ‘আইপিএল’! ছদ্মবেশী ক্রিকেটার, ভুয়ো আম্পায়ার এবং ধারাভাষ্যকার, ভুয়ো দর্শক — সব মিলেজুলে একটি ‘প্যাকেজ’ গড়ে তোলা হয়েছিল। সেই দেখেই রাশিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে ক্রিকেট ম্যাচে টাকা লাগাতেন সে দেশের মানুষরা। অবশেষে খবর পেয়ে গুজরাতের পুলিশ সেই নকল আইপিএল আয়োজকদের গ্রেফতার করেছে। তবে যে পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তাঁরা একটি প্রতিযোগিতা চালাচ্ছিলেন, তা দেখে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশকর্তাদের।

গুজরাতের মেহসানা জেলার মোলিপুর গ্রামের একটি প্রত্যন্ত অংশে চলছিল এই ‘আইপিএল’। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ’। রাশিয়ার ভিয়ের, ভোরোনেঝ, এমনকি মস্কোর মতো শহর থেকেও টাকা লাগানো হত। একটি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে চলত জুয়াখেলা। গত দু’সপ্তাহ ধরে এই কাণ্ড চলার পর পুলিশ মূল চক্রীকে খুঁজে পেয়েছে।

কী ভাবে আয়োজন করা হচ্ছিল এই ভুয়ো প্রতিযোগিতা?

পুলিশ জানিয়েছে, আয়োজক শোয়েব দাবদা আট মাস রাশিয়ার একটি পানশালায় কাজ করেছেন। কাছ থেকে দেখেছেন সেখানে কী ভাবে বিভিন্ন ম্যাচে টাকা লাগানো হয়। সেই সময় আসিফ মহম্মদ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। আসিফই রাশিয়ার কিছু জুয়াড়ির সঙ্গে কথা বলে ক্রিকেট ম্যাচে টাকা লাগানোর টোপ দেন। রাশিয়ার জুয়াড়িরা রাজি হয়ে যান।

তার পর শুরু হয় আসল কাজ। দেশে ফিরে মোলিপুর গ্রামে গিয়ে স্থানীয় ২১ জন চাষি এবং কিছু ছেলেপিলেকে ভাড়া করেন শোয়েব। তাঁদের ম্যাচপিছু ৪০০ টাকা করে দেওয়া হত। বাজার থেকে চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং গুজরাত টাইটান্সের জার্সি কিনে আনেন। স্থানীয় লোককেই আম্পায়ার বানান। তাঁরা আবার ওয়াকি টকিতে কথা বলার অভিনয় করতেন। পাঁচটি উচ্চমানের ক্যামেরা ভাড়া করা হয়, যার সাহায্যে ম্যাচ দেখানো হত ইউটিউব চ্যানেলে। ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা হয়েছিল দর্শকদের আওয়াজ, যা শোনানো হত ম্যাচের সময়।

শুধু তাই নয়, মিরাট থেকে এক ব্যক্তিকে দিয়ে ধারাভাষ্য দেওয়া হত, যিনি ভারতের এক নামী ধারাভাষ্যকারের গলা নকল করতেন। এক আম্পায়ারও ধারাভাষ্য দেওয়ার কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ম্যাচের সময় ওয়াকি টকিতে আম্পায়ারদের নির্দেশ দেওয়া হত পরের বলে চার অথবা ছয় দেওয়ার জন্য। আম্পায়াররা সেই নির্দেশ ব্যাটার এবং বোলারকে দিয়ে দিতেন। অবধারিত ভাবে নির্দেশ পালন করা হত। রাশিয়ার জুয়াড়িরা এতে আরও উৎসাহিত হয়ে পড়তেন। পুলিশের ধারণা, আসল আইপিএল সম্পর্কে রাশিয়ার এই জুয়াড়িদের ধারণা প্রায় ছিলই না। তাই আসল এবং নকল আইপিএলের পার্থক্য তাঁরা ধরতে পারেননি। পুলিশ মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছে। কী ভাবে এই জুয়াড়িদের থেকে টাকা আদায় করা হত, তা খতিয়ে দেখা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL Fake Commentator police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE