২২ গজে ভারত-পাকিস্তান লড়াই মানেই বাড়তি উত্তেজনা। কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনাল হলে তো কথাই নেই। আগামী রবিবার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি দু’দেশ। প্রতিযোগিতায় আগের দু’টি ম্যাচে ভারত জিতলেও ফাইনালে পাকিস্তানকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। নিজেদের দিনে যে কোনও দল জিততে পারে। দলগত লড়াইয়ের পাশাপাশি দু’দলের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত দক্ষতার লড়াইও থাকে এই ম্যাচে। ব্যাট বা বল হাতে প্রতিপক্ষের ম্যাচ উইনারদের নির্বিষ করে দেওয়ার লড়াই। রবিবার ফাইনালের এমন সেরা পাঁচ লড়াই বেছে নিল আনন্দবাজার ডট কম।
১) জসপ্রীত বুমরাহ বনাম সাহিবজ়াদা ফারহান
এশিয়া কাপে ভাল ফর্মে আছেন পাকিস্তানের ওপেনার ফারহান। সুপার ফোর পর্বের ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। বড় শট নিতে পারেন। মাঠের চার দিকে শট মারতে পারেন। প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর চাপ তৈরির মূল দায়িত্ব থাকে তাঁর উপর। তাঁকে থামানোর দায়িত্ব থাকবে বুমরাহের। এশিয়া কাপে বুমরাহের মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাব দেখা যাচ্ছে খানিকটা। মার খেয়ে যাচ্ছেন অনেক সময়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচেই ৪৫ রান দিয়ে উইকেট পাননি। এশিয়া কাপে ভারতের প্রথম একাদশে একমাত্র বিশেষজ্ঞ জোরে বোলার হিসাবে বুমরাহকেই রাখছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। নতুন বলে ফারহান-বুমরাহ লড়াই নিয়ে আগ্রহ থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
২) কুলদীপ যাদব বনাম ফখর জ়ামান
এশিয়া কাপ খেলতে আসা পাকিস্তান দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটার জ়ামান। রান পাচ্ছেন। ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বর থেকে তাঁকে ওপেনিংয়ে নিয়ে এসেছেন সলমন আঘারা। ইনিংস তৈরির দায়িত্ব থাকছে তাঁর উপর। ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে রাখেন জ়ামান। দলের ইনিংস নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁর সঙ্গে মূল লড়াই কুলদীপের। এশিয়া কাপে ভারতের স্পিন আক্রমণের প্রধান মুখ। ভাল ফর্মে রয়েছেন। নিয়মিত উইকেট পাচ্ছেন। সূর্যকুমার যাদব তাঁকে পাওয়ার প্লে-তে বল করিয়েছেন একাধিক ম্যাচে। জ়ামানের সঙ্গে কুলদীপের ব্যাট-বলের লড়াই জমে যেতে পরে ফাইনালে।
৩) অভিষেক শর্মা বনাম শাহিন আফ্রিদি
ভারতীয় ওপেনারের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধান স্ট্রাইক বোলারের লড়াই দেখা যেতে পারে। এশিয়া কাপে এখনও পর্যন্ত অভিষেকের বিরুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ফর্মে থাকা শাহিন। দু’টি ম্যাচেই শাহিনের প্রথম বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন ভারতের তরুণ ওপেনার। আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। স্বভাবতই ফাইনালে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন শাহিন। অভিষেককে সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করবেন। অন্য দিকে, অভিষেক নিশ্চিত ভাবেই চাইবেন গত দু’টি ম্যাচের মতো ফাইনালেও শুরু থেকে শাহিনের লাইন-লেংথ নষ্ট করে দিতে।
৪) সূর্যকুমার যাদব বনাম হ্যারিস রউফ
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা রউফ। তাঁকে কিছু পরে আক্রমণে আনছেন পাক অধিনায়ক সলমন। প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডার ভাঙতে রউফকে ব্যবহার করছে পাকিস্তান। তাঁকে সামলাতে হবে সূর্যকুমারকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার সূর্যকুমার। এশিয়া কাপে অবশ্য তাঁকে সেরা ফর্মে দেখা যাচ্ছে না। ফাইনালে ভারতীয় ইনিংসের মাঝের ওভারগুলিতে রউফকে সামলানোর মূল দায়িত্ব থাকবে সূর্যকুমারের উপর। আগের ম্যাচগুলির মতো অভিষেক এবং শুভমন গিলের ওপেনিং জুটি প্রথম সাত-আট ওভার খেলে দিতে পারলে সূর্য-রউফ দ্বৈরথ দেখা যেতে পারে।
৫) শিবম দুবে বনাম আবরার আহমেদ
বাঁ হাতি শিবম স্পিন বল খেলায় দক্ষ। তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে খেলানোর পরিকল্পনা করেছে ভারতীয় শিবির। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন নম্বরে নেমেছিলেন শিবম। লেগ স্পিনার আবরারকে প্রথম পরিবর্ত বোলার হিসাবে ব্যবহার করছেন সলমন। তাঁর লেগ স্পিন নির্বিষ করার দায়িত্ব শিবমকে দেওয়া হতে পারে। তিনি বাঁ হাতি ব্যাটার হওয়ায় আবরার তাঁর ক্ষেত্রে অফ স্পিনার। স্পিন বল ভাল খেলার পাশাপাশি বড় শট নিতে পারেন শিবম। ইনিংসের শুরুর দিকে সেই সুবিধাও কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারে ভারতীয় শিবির। এশিয়া কাপ ফাইনালে শিবম-আবরার লড়াইও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।