জাতীয় দলে এখন তিনি ব্রাত্য। তবে প্রত্যাবর্তনের খিদে এখনও রয়েছে। তার মাঝেই নিজের সংগ্রামের কাহিনি জানিয়েছেন অজিঙ্ক রাহানে। ভারতীয় দলে অভিষেকের পরেও তাঁকে কিনতে হয়েছিল পুরনো গাড়ি। অন্য দিকে, হার্দিক পাণ্ড্য কী ভাবে ম্যাগি খেয়ে তিন বছর কাটিয়েছেন সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালিক নীতা অম্বানী।
একটি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে রাহানে জানিয়েছেন, ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলার জন্য অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাঁক। আট বছর থেকেই তিনি একা একা ট্রেনে যাতায়াত করতেন। কারণ বাবা এবং মা দু’জনেই চাকরি করার জন্য কেউই ছেলেকে সঙ্গ দিতে পারতেন না।
রাহানে বলেছেন, “আমি ডোম্বিভলির ছেলে। ট্রেনযাত্রা সবচেয়ে কঠিন ছিল আমার কাছে। আট বছর থেকেই একা একা ট্রেনে যাই। আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছি। বাবার উপার্জন যথেষ্ট ছিল না বলে মাকেও রোজগার করতে হল। তাই জন্যই সব সময় পা মাটিতে রাখার চেষ্টা করি।”
রাহানের সংযোজন, “পরিবারের মূল্যবোধ রয়েছে আমার মধ্যে। ওরা বলেন, খরচ করো। তবে দরকারি হলে তবেই। আমি অনেক পরে গাড়ি কিনেছি। তার আগে নীলেশ কুলকার্নি, আবিষ্কার সালভিদের গাড়িতে যাতায়াত করতাম। ভারতের হয়ে খেলার পরে পুরনো একটা গাড়ি কিনলাম। অনেকে বলেছিল নতুন বড় গাড়ি নিতে। তবে গাড়ি আমার কাছে স্রেফ আরামে যাতায়াতের জায়গা ছিল।”
এ দিকে, আইপিএলে হার্দিক উঠে এসেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স থেকে। মাঝে দু’বছর গুজরাতে কাটিয়ে আবার গত বছর থেকে মুম্বইয়ে খেলছেন। সেই ক্রিকেটারের কষ্টের কাহিনি তুলে ধরেছেন নীতা। একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আইপিএলে সব দলের একটা বাজেট থাকত। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাই খরচ করা যেত। তাই প্রতিভা তুলে আনতে অন্য রাস্তা নিয়েছিলাম আমরা। আমি এবং আমার স্কাউটেরা চেষ্টা করতাম যত বেশি সম্ভব রঞ্জি ম্যাচে হাজির থাকার। এক দিন আমাদের স্কাউট দুটো লম্বা, রোগাসোগা ছেলেকে আমার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছিল।”
নীতার সংযোজন, “ওদের সঙ্গে কথা বলার সময়েই বলল, তিন বছর ধরে ম্যাগি খেয়ে কাটিয়েছে। কারণ ওদের হাতে কোনও অর্থ ছিল না। ওদের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস, আবেগ এবং সাফল্যের খিদে দেখতে পেয়েছিলাম। সেই দুটো ছেলেই হল হার্দিক এবং ক্রুণাল পাণ্ড্য। ২০১৫ সালে হার্দিককে ১০ হাজার ডলারে কিনেছিলাম। আজ ও-ই মুম্বইয়ের অধিনায়ক।”
আরও পড়ুন:
হার্দিকদের মতোই জসপ্রীত বুমরাহকে খুঁজে পাওয়ার কথাও শোনা গিয়েছে নীতার মুখে। ২০১৬ সালে বুমরাহকে খুঁজে পেয়েছিল মুম্বই। সেই প্রসঙ্গে নীতার মন্তব্য, “একটা তরুণ ক্রিকেটারের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, যার শরীরীভাষা বাকিদের থেকে আলাদা ছিল। ওর বোলিং দেখে বুঝেছিলাম বলকে কথা বলাতে পারে। সেটাই ছিল বুমরাহ। বাকি তো ইতিহাস। গত বছর আমাদের দল থেকে উঠে এসে তিলক বর্মা। এখন ভারতীয় দলেও সুযোগ পেয়ে গিয়েছে। তাই আমার মনে হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সই ভারতীয় ক্রিকেটের উঠতি প্রতিভা তুলে আনার কারখানা।”