নাথান লায়নের সঙ্গে উইকেট নেওয়ার পর উচ্ছ্বাস টড মারফির। ছবি: পিটিআই
নাগপুর টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলে দু’জন নাথান লায়ন খেলছেন বলা হচ্ছিল। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা টড মারফির বল করার ধরন মিলে যায় লায়নের সঙ্গে। কিন্তু নাথান লায়ন মাত্র একটি উইকেট নেন। তাঁর মতো বল করা মারফি অভিষেক ম্যাচেই নিলেন ৭ উইকেট। ডানহাতি অফ স্পিনার প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়ে নিয়েছেন। চোখে চশমা আঁটা মারফির ভরসাতেই দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে দিল্লি যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
চশমা পরে ক্রিকেট খেলতে নামেন মারফি। তাঁর ডাকনামই হয়ে যায় ‘গগলস’। মাঠের বাইরে তাঁকে দেখলে মনে হতেই পারে যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তাঁর বলেই প্রথম ইনিংসে ভারতের সাত ব্যাটার আউট হন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে মারফির প্রথম শিকার লোকেশ রাহুল। নিজের বলেই ক্যাচ নিয়ে রাহুলকে ফেরান মারফি। বিরাট কোহলিকে যে বলে আউট করলেন, সেটা হয়তো তাঁর করা সব থেকে খারাপ বল ছিল। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে নিজের উইকেট উপহার দিয়ে আসেন বিরাট। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, চেতেশ্বর পুজারা, রবীন্দ্র জাডেজা, শ্রীকর ভরত এবং মহম্মদ শামির উইকেটও নেন মারফি।
এক সময় মনে হচ্ছিল তিনি হয়তো অভিষেক ম্যাচে নরেন্দ্র হিরওয়ানির এক ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ভেঙে দেবেন। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ৭ উইকেটে থেমে যান মারফি। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে (তখন মারফি ৫ উইকেট নিয়েছিলেন) তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট খেলব এটাই আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। সেই ম্যাচে ৫ উইকেট নেব ভাবিনি।” লায়নের পর মারফিই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় স্পিনার যিনি, অভিষেক ম্যাচে ৫ উইকেট নেন। মারফির মেন্টর লায়নই। ১২ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে যিনি ১১৬টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন। ঝুলিতে রয়েছে ৪৬১টি উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম একাদশে বেশির ভাগ সময় এক জন স্পিনারই থাকে। সেই কারণে লায়নকে সরিয়ে জায়গা করে নেওয়া কঠিন হচ্ছিল মারফির পক্ষে। ভারতে দুই স্পিনার নিয়ে নামায় সুযোগ পান মারফি। সেই ম্যাচে লায়নকেই ছাপিয়ে গেলেন তিনি। লায়ন যে ম্যাচে মাত্র একটি উইকেট নেন, সেই ম্যাচে ৭ উইকেট তুলে নিলেন মারফি।
ভারতীয় দলে একাধিক ডানহাতি ব্যাটার না থাকলে নাগপুর টেস্টেও হয়তো সুযোগ পেতেন না মারফি। ভিক্টোরিয়ার হয়ে খেলার সময় ডানহাতি ব্যাটারদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নাগপুর টেস্টেও তাঁর সাত শিকারের মধ্যে পাঁচ জন ডানহাতি। সেই পাঁচ ডানহাতির মিলিত টেস্ট শতরানের সংখ্যা ৫৮। সাধারণত অস্ট্রেলিয়া অ্যাশটন আগরকে বেছে নেয় লায়নের সঙ্গী হিসাবে। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনারকে বাদ দিয়ে মারফিকে বেছে নেওয়ার কারণ ডানহাতিদের বিরুদ্ধে তাঁর সাফল্য।
দ্বিতীয় টেস্ট দিল্লিতে। ফিরোজ় শাহ কোটলার মাঠে মারফিই ভরসা অস্ট্রেলিয়ার। ইতিমধ্যেই ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে তারা। আড়াই দিনে টেস্ট হারের লজ্জা মাথায় নিয়ে এ বার লড়াই দিল্লিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy