Advertisement
E-Paper

‘দেশের হয়ে কথা বলা তো অপরাধ নয়!’ এশিয়া কাপে করমর্দন বিতর্কে আবার মুখ খুললেন সূর্য

প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক সূর্যকুমার যাদবের? কেকেআর না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, কোন দল তাঁর হৃদয়ের কাছে। তাঁর জীবনে স্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও মুখ খুললেন সূর্য।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:১৯
cricket

সূর্যকুমার যাদব। —ফাইল চিত্র।

গত মাসেই অধিনায়ক হিসাবে প্রথম বড় ট্রফি জিতেছেন। যদিও সেই ট্রফি এখনও হাতে পাননি সূর্যকুমার যাদব। এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেলেও করমর্দন বিতর্ক চলছেই। সেই বিতর্কে আরও এক বার মুখ খুললেন সূর্য। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর অনুষ্ঠান ‘এক্সপ্রেস আড্ডা’-য় প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীররে সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও জানিয়েছেন সূর্য। খেলার বাইরে ব্যক্তিগত জীবনের কথাও উঠে এসেছে। সূর্যের জীবনে তাঁর স্ত্রী দেবিশা শেট্টির কী ভূমিকা তা-ও জানিয়েছেন ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। অনুষ্ঠানে সূর্য যা যা বলেছেন, তা তাঁর বয়ানেই লেখা হল এই প্রতিবেদনে।

এশিয়া কাপে করমর্দন বিতর্ক

পাকিস্তান দলের সঙ্গে হাত না মেলানো আমাদের দলগত সিদ্ধান্ত ছিল। এর মধ্যে ভুল কিছু নেই। দেশের হয়ে কথা বলা তো আর অপরাধ নয়। এশিয়া কাপের দু’-তিন সপ্তাহ আগে থেকে মোবাইলের সব অ্যাপ মুছে দিয়েছিলাম। যাতে খেলার বাইরে অন্য কোনও দিকে নজর না থাকে। শুধু হোয়াটস্‌অ্যাপ ছিল। আর ফোন ধরতাম।

কোচ গৌতম গম্ভীর

গম্ভীর আর আমার সম্পর্ক ছোট ভাই-বড় ভাইয়ের মতো। কেকেআরে একসঙ্গে খেলেছি। সেখান থেকেই আমাদের দারুণ বোঝাপড়া। এ রকম বহু বার হয়েছে যে গৌতি ভাই কোচ হিসাবে প্রথম একাদশ বেছেছে। আমি আমার মতো করে বেছেছি। পরে দেখা গিয়েছে, দুটো দল হুবহু এক। আমাদের ভাবনা-চিন্তা এ রকমই। যত দিন যাচ্ছে আমাদের মধ্যে কথা বলার জন্য ইশারাই যথেষ্ট। ধরুন, আমি মাঠে রয়েছি। ও সাজঘর থেকে মাথা হেলাল। বুঝে যাই ও কী বলতে চাইছে। তবে কেকেআরে গৌতি ভাই যখন অধিনায়ক ছিল, তখন বেশ কয়েক বার মতবিরোধ হয়েছিল।

শুভমনের সংস্কার

বিসিসিআই থেকে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, প্যাডে বিশেষ এক ধরনের রং লাগাতে হবে। যাতে জার্সির রঙের সঙ্গে প্যাডের রং মিলে যায়। শুভমনই আমাদের দলে একমাত্র যে ওই রং লাগায় না। ও বিশেষ এক ধরনের রং লাগায়। ফলে জার্সির রঙের সাথে ওর প্যাডের রং কোনও দিন মেলে না।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই ক্যাচ

ফাইনালে রান পাইনি। অপেক্ষা করেছিলাম, কখন কিছু করে দেখানোর সুযোগ আসবে। যখন শেষ ওভার এল, ভাবলাম, কিছুই করতে পারলাম না এই ম্যাচে। তার পরেই ওই ক্যাচ। আমার ক্রিকেট জীবনের সেরা মুহূর্ত ছিল ওটা। অনুশীলনে আমরা অনেক বার ওই ধরনের ক্যাচ ধরা অনুশীলন করি। কিন্তু ক্যাচের সময় শেষ ৫-১০ সেকেন্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফাইনালে ওই সুযোগ আসবে কোনও দিন ভাবিনি।

কেকেআর না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স?

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে আসার পরেই আমি ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। ব্যাটিং অর্ডারে ওরা আমাকে অনেক উপরের দিকে নামিয়েছিল। ওপেনও করেছিলাম। ওদের অনুশীলনে সুযোগ-সুবিধা অসাধারণ। মুম্বইয়ের সাজঘর থেকে অনেক কিছু শিখেছি। (কেকেআরে খেলা সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি সূর্য। তবে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাঁর হৃদয়ের অনেক কাছে।)

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোলার

জসপ্রীত বুমরাহ। নেটেও ওর বল খেলি না।

নিজের অধিনায়কত্ব

আমি সতীর্থদের কাছে প্রিয় হতে চাই না। ওদের ভাল চাই। তাই সত্যি কথাটা বলি। হয়তো দু’-তিন দিন ওরা আমার সঙ্গে কথা বলবে না। কিন্তু আয়নাটা ধরার চেষ্টা করি। নিজের জন্যও আয়নার সামনে দাঁড়াই। তাতেও যদি জবাব না পাই, স্ত্রী তো আছেই।

টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ

টেস্ট ক্রিকেটই সেরা। টেস্ট ক্রিকেট থাকবে। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ়েই সেটা প্রমাণ হয়েছে।

আইপিএলে দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা উচিত?

আইপিএলে ১০ দল খেলে। এটা একদম ঠিক আছে।

বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুত্ব

আইপিএলে বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে একই সাজঘরে সময় কাটাই। ফলে সকলের সঙ্গেই একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু দেশের হয়ে মাঠে নামলে কেউ কারও বন্ধু নয়। কখনও না।

আকাশ অম্বানী না শাহরুখ খান?

আকাশ তো নিয়মিত আমাদের সঙ্গে এসে ক্রিকেট খেলে। শাহরুখকে কখনও খেলতে দেখিনি। দেখলে বলব।

স্ত্রী দেবিশা

পোদ্দার কলেজে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারছিলাম। সামনে দিয়ে রুইয়া কলেজের একটা মেয়ে যাচ্ছিল। আমার এক বন্ধু হাই বলল। সঙ্গে সঙ্গে ওকে বললাম, পরিচয় তো করা। পরিচয় করিয়ে দিল। সেই শুরু। প্রথমে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। পরে আসতে আসতে আমাদের সম্পর্ক এগোল। আমার মোবাইলে দেবিশার নম্বর ‘বেস্ট ডিসিশন অফ মাই লাইফ’ বলে সেভ করা আছে। ওর সঙ্গে যখন পরিচয় হল তখন আইপিএল ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছি। আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, এর পরের লক্ষ্য কী? বলেছিলাম, ভারতের হয়ে খেলব। বলেছিল, সেটা কি এমনই হয়ে যাবে? তার পর থেকে আমার জীবনে শৃঙ্খলা আনার কাজ ও শুরু করে।

তখন চুলে রং করতাম। ও বারণ করেছিল। আমার মনে আঘাত লেগেছিল। তাই চুলে নীল রং‌ করে ওর কাছে গিয়েছিলাম। প্রচুর গালাগাল করেছিল। আমার জীবনে তিন-চার জন বন্ধু আছে, যারা আমাকে মাটিতে পা রেখে চলতে সাহায্য করে। তারা ছাড়া আমার স্ত্রীও এই কাজটা করে। আইপিএলে প্রচুর রান করে বাড়ি ফিরলেও বলে, ওই রান দরজার বাইরে রেখে ভিতরে ঢোকো। রান না পেলেও বলে, সেটাও বাড়িরে বাইরে রেখে ভিতরে ঢোকো। আমরা পরিবারে খুব সাধারণ ভাবে থাকি। আমার খাওয়া হয়ে গেলে স্ত্রী বলে, নিজের থালাটা নামিয়ে রাখো।

মা-বাবা

আমাদের পরিবারে সকলেই উচ্চশিক্ষিত। বাবা বিজ্ঞানী। বাবা-মা আমার ১০-১২ বছর বয়স পর্যন্ত চেষ্টা করেছিল, আমাকেও বিজ্ঞানী করার। কিন্তু তার পর বুঝল, আমার দ্বারা হবে না। বইপত্র ফেলে দিল। কিন্তু আমার খেলা নিয়ে কখনও আপত্তি করেনি। যখন বুঝল, ক্রিকেটই আমার ভবিষ্যৎ, তখন পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিল।

ট্যাটু

আমার হাতে অজস্র ট্যাটু। এর শুরুটা ২০১৩-১৪ সালে। কী ট্যাটু করাব, তা নিয়ে প্রচুর নকশা মাথায় ছিল। বুঝতে পারছিলাম না, কোনটা দিয়ে শুরু করব। হঠাৎ মনে হল, মা-বাবার ছবি দিয়ে শুরু করি। করলাম। ওদের দেখালাম। ওদের ভাল লাগল। ব্যস। সেই শুরু।

ক্রিকেটারদের জন্য ট্যাটু করালে কী লিখবেন?

কোহলি- গোট

বুমরাহ- ভাই

শুভমন- শুধু হাসির ইমোজি

রোহিত- গার্ডেন

সলমন আঘা- স্টপ

হনুমান ভক্ত

প্রতিদিন স্নান করার পর ১০-১৫ মিনিট হনুমান চালিশা শুনি। হালকা লাগে। যখন যেখানে খেলতে যাই, এটা করি। এখন তো রুটিন হয়ে গিয়েছে।

Suryakumar Yadav India Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy