ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়োজিত ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট সিরিজ়ের বিজয়ী দল পতৌদি ট্রফি পায়। এ বার থেকে দেওয়া হতে পারে তেন্ডুলকর-অ্যান্ডারসন ট্রফি। ভারতীয় দলের আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের জয়ী দলকে সম্ভবত নতুন ট্রফি দেওয়া হবে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডই (ইসিবি) প্রথম ট্রফি পরিবর্তনের প্রস্তাব দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই)। আপত্তি জানাননি বিসিসিআই কর্তারা।
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদি এবং তাঁর বাবা ইফতিকার আলি খান পতৌদির সম্মানে ২০০৭ সালে পতৌদি ট্রফি দেওয়া শুরু হয়। কিছু দিন আগে ইসিবি পতৌদি পরিবারকে চিঠি দিয়ে জানায়, তারা আর পতৌদি ট্রফিটি ব্যবহার করতে চায় না। পরিবর্তে নতুন ট্রফি নিয়ে আসতে চায়। বিসিসিআইকেও বিষয়টি জানানো হয়। নতুন ট্রফি দু’দেশের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর এবং জেমস অ্যান্ডারসনের নামে করার প্রস্তাব দেয় ইসিবি। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেনি বিসিসিআই। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিসিসিআইয়ের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘দু’দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটারদের নামে নতুন ট্রফির নামকরণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মনে হয় না বিসিসিআই আপত্তি করবে। তা ছাড়া ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়োজিত টেস্ট সিরিজ়ের জয়ী দলকে কী ট্রফি দেওয়া হবে, সেটা ইসিবির এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে।’’
সচিন ২০০টি টেস্ট খেলেছেন। বিশ্বের আর কোনও ক্রিকেটার এতগুলি টেস্ট খেলেননি। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৫৯২১ রান করার কৃতিত্বও তাঁর। সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটারদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন জোরে বোলার ১৮৮টি টেস্ট খেলে নিয়েছেন ৭০৪টি উইকেট। তিনি বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেট সংগ্রাহক (মুথাইয়া মুরলিথরন এবং শেন ওয়ার্নের পর)। জোরে বোলারদের মধ্যে শীর্ষে। লাল বলের ক্রিকেটে সচিন এবং অ্যান্ডারসনের দ্বৈরথ একটা সময় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ছিল অন্যতম সেরা আকর্ষণ। টেস্টে অ্যান্ডারসনের বলে ন’বার আউট হয়েছেন সচিন। যদিও অ্যান্ডারসন বেশ কয়েক বার বলেছেন, সচিনই তাঁর দেখা সেরা ব্যাটার। সচিন ২০১৪ সালে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। অ্যান্ডারসনকেও নাইটহুড দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। দু’দেশের এমন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারের নামে ট্রফি করতে চায় ইসিবি।
২০০৭ সাল থেকে পাঁচ বার পতৌদি ট্রফিতে মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড-ভারত। প্রথম বার সিরিজ় জিতেছিল ভারত। তার পর টানা তিন বার ২০১১, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সিরিজ় জেতে ইংল্যান্ড। ২০২১ সালের সিরিজ় ড্র হওয়ায় শেষ বিজয়ী হিসাবে ইংল্যান্ডের দখলেই রয়েছে পতৌদি ট্রফি। তাই বাতিল করা হলে ট্রফিটি ইংল্যান্ডের কাছেই স্থায়ী ভাবে থেকে যাবে। তবে কোন সিরিজ় থেকে তেন্ডুলকর-অ্যান্ডারসন ট্রফি দেওয়া শুরু হবে তা এখনও নির্দিষ্ট করে জানায়নি ইসিবি। মনে করা হচ্ছে, পাঁচ টেস্টের আসন্ন সিরিজ় থেকেই নতুন ট্রফি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
ভারতের মাটিতে দু’দেশ টেস্ট সিরিজ়ে মুখোমুখি হলে বিজয়ী দলকে দেওয়া হয় অ্যান্থনি ডি মেলো ট্রফি। ১৯৫১-৫২ মরসুম থেকে এই ট্রফি দেওয়া হচ্ছে। তখন থেকে ভারতের মাটিতে দু’দেশের ১৫টি টেস্ট সিরিজ় হয়েছে। ভারত অ্যান্থনি ডি মেলো ট্রফি জিতেছে ন’বার। তিন বার জিতেছে ইংল্যান্ড। সিরিজ় ড্র হয়েছে তিন বার।