আইপিএলের প্রথম বছরে এস শ্রীসন্থকে চড় মেরেছিলেন হরভজন সিংহ। বিতর্কিত সেই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটে। ১৮ বছর পর সেই বিতর্কিত ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ করলেন আইপিএলের তৎকালীন কমিশনার ললিত মোদী। বিয়ন্ড ২৩ ক্রিকেট পডকাস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে কথা বলার সময় সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন মোদী।
ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ২০০৮ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দু’দলের ক্রিকেটারেরা করমর্দন করছিলেন। সাধারণত যে ভাবে ক্রিকেটারেরা সৌজন্য বিনিময় করেন, সে ভাবেই লাইন করে শুভেচ্ছা বিনিময় চলছিল। শ্রীসন্থ সামনে আসতে হরভজন তাঁকে এড়িয়ে যান। করমর্দন না করে টেবল টেনিসের ব্যাকহ্যান্ড শটের মতো করে পঞ্জাবের জোরে বোলারের ডান গালে সপাটে চড় কষিয়ে দেন মুম্বইয়ের স্পিনার। পরে দু’জন পরস্পরের দিকে তেড়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। দু’দলের বাকি ক্রিকেটারেরা পরিস্থিতি সামলান তখনকার মতো। এই প্রথম চড়কাণ্ডে সম্পূর্ণ ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল।
বিতর্কিত সেই ঘটনা নিয়ে ললিত বলেছেন, ‘‘ঘটনাটা অবশ্যই ঘটেছিল। হরভজন এবং শ্রীসন্থ যুক্ত ছিল। ম্যাচের পর দু’দলের ক্রিকেটারেরা পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিল। হ্যান্ডশেক করছিল। শ্রীসন্থ আর ভাজ্জি মুখোমুখি হল এক সময়। ভাজ্জি এক ঝলক দেখল শ্রীসন্থকে, তার পরই একটা ব্যাকহ্যান্ডার চালিয়ে দিল।’’
এস শ্রীসন্থকে হরভজন সিংহের চড় মারার সেই ভিডিয়ো। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সেই ঘটনায় হরভজনকে আট ম্যাচের জন্য নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছিল। যদিও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কর্তাদের একাংশ চেয়েছিলেন প্রাক্তন অফস্পিনারকে আজীবন নিলম্বিত করা হোক। ললিত বলেছেন, ‘‘ঘটনাটা গুরুতর ছিল। শ্রীসন্থ এবং হরভজন দু’জনকে নিয়ে বসেছিলাম। কথা বলেছিলাম। হরভজনকে শাস্তি না দিয়ে উপায় ছিল না। ওকে আট ম্যাচ নিলম্বিত করেছিলাম।’’ ললিত আরও বলেছেন, ‘‘তখন আমি আইপিএল কমিশনার। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে অধিকাংশ সদস্য হরভজনকে আজীবন নিলম্বিত করার দাবি তুলেছিলেন। সে বার আইপিএলের প্রথম বছর। প্রতিযোগিতা ঘিরে দারুণ আবেগ, উৎসাহ ছিল। অত কঠিন শাস্তি দিলে অন্য রকম হতে পারত। তাই শেষ পর্যন্ত আট ম্যাচের শাস্তি দেওয়া হয়।’’
ক্লার্কের সঙ্গে কথা বলার সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ললিত। ‘‘বিশ্বকাপ ফুটবল বাদ দিলে আন্তর্জাতিক ফুটবলের যা অবস্থা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেরও সেই হাল হবে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। ক্রিকেটারেরা শুধু আইপিএল খেলতে চাইবে। টেস্ট ক্রিকেট এখন মৃত। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে হবে। ক্রিকেটের স্বর্থেই বাঁচাতে হবে। আইসিসি এবং বিভিন্ন দেশের বোর্ডকে দায়িত্ব নিতে হবে। আইসিসি এখন শুধু ডলারের পিছনে ছুটছে। সেটা খারাপ নয়। তবে টাকাটা ভুল জায়গায় চলে যাচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশছাড়া ললিত। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে। শোনা যাচ্ছে, ভারতের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে পারেন প্রাক্তন ক্রিকেট কর্তা।