E-Paper

রিভার্স সুইপ থামানোর অস্ত্র নিয়ে অপেক্ষায় কুলদীপ

ভারত সফরে ইংল্যান্ড যখন এসেছিল, তখন এই দু’টি শট বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছিল রুট, অলি পোপদের। সেই সিরিজ়ে ১৭ উইকেট পেয়েছিলেন কুলদীপ। অথচ এখন ভারতীয় দলে তাঁরই জায়গা হচ্ছে না।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৭:১৮
মরিয়া: ইংল্যান্ডে সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় কুলদীপ।

মরিয়া: ইংল্যান্ডে সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় কুলদীপ। —ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ড সফরে এখনও পর্যন্ত সুযোগ পাননি কুলদীপ যাদব। কিন্তু জো রুট, বেন ডাকেট, জ়াক ক্রলিদের রিভার্স সুইপ থামানোর অস্ত্রে শান দিয়ে চলেছেন তিনি। ইংল্যান্ড সফরে উড়ে যাওয়ার আগে ছোটবেলার কোচ কপিলদেব পাণ্ডের কাছে চার দিন অনুশীলন করেছিলেন কুলদীপ। ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের সুইপ ও রিভার্স সুইপ থামানোর বিশেষ অনুশীলন করে গিয়েছিলেন এই চায়নাম্যান স্পিনার।

ভারত সফরে ইংল্যান্ড যখন এসেছিল, তখন এই দু’টি শট বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছিল রুট, অলি পোপদের। সেই সিরিজ়ে ১৭ উইকেট পেয়েছিলেন কুলদীপ। অথচ এখন ভারতীয় দলে তাঁরই জায়গা হচ্ছে না।

ইংল্যান্ড সফরে উড়ে যাওয়ার আগে ছোটবেলার কোচের কাছে ‘ফ্লিপার’ ডেলিভারিতে শান দিয়েছিলেন কুলদীপ। রিস্টস্পিনারদের অন্যতম বৈচিত্র এই ডেলিভারি। এই বল পিচে পড়ে ঘোরে না। গতির সঙ্গে আছড়ে পড়ে ব্যাটসম্যানের প্যাডে। ক্রলিরা রিভার্স সুইপ করার সময়ই হয়তো পাবেন না। তার আগেই এলবিডব্লিউ অথবা বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে পারেন প্যাভিলিয়নে। কিন্তু এই অস্ত্র কাজে লাগানোর সুযোগ পাচ্ছেন না কুলদীপ।

প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল আথারটন বলেছেন, ‘‘কুলদীপের মতো বোলারকে ভারত কেন বসিয়ে রেখেছে জানি না। বুমরা ও সিরাজকে খেলানো হোক। নীতীশ কুমার রেড্ডি তৃতীয় পেসারের কাজ করে দেবে। বাকি তিন জন স্পিনার খেলাও। কুলদীপ, জাডেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর।’’

আথারটনের পরামর্শ গৌতম গম্ভীরের কান পর্যন্ত পৌঁছয় কি না, সময়ই বলবে। তবে কুলদীপ যে ভারতের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন, এ বিষয়ে একশো শতাংশ নিশ্চিত তাঁর ছোটবেলার কোচ। কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন কুলদীপ? তাঁর কোচ কপিল পাণ্ডে ফোনে বলছিলেন, ‘‘আইপিএল শেষ হওয়ার পরে ও চার দিন আমার কাছে অনুশীলন করার সময় পেয়েছে। ওকে বলেছিলাম, অতিরিক্ত কিছু পরিবর্তন করতে যাস না। যা তোর আয়ত্তের মধ্যে আছে, সেগুলোকেই উন্নত করার চেষ্টা কর।’’ যোগ করেন, ‘‘ও জানত ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানেরা সুইপ ও রিভার্স সুইপ ভাল খেলে। তাই গতি বাড়িয়ে ফ্লিপার ডেলিভারি আরও ভাল করে রপ্ত করেছে। এই বলে সুইপ বা রিভার্স সুইপ মারতে গেলে ব্যাটসম্যান নিজের বিপদ ডেকে আনবে। কারণ, পিচে পড়ার পরে বল আর সময় দেবে না। আছড়ে পড়বে প্যাডে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারতের মাটিতেই স্টোকসরা ওকে সুইপ ও রিভার্স সুইপ করতে পারছিল না। এখানে তো বল ঘোরে। ইংল্যান্ডে বল সে রকম ঘোরে না। ওখানে তো ওকে সুইপ মারাআরও কঠিন।’’

ইংল্যান্ড সফরের শেষ দু’টি ম্যাচে কুলদীপকে খেলানো হয় কি না, সেটাই এখন দেখার। তাঁর কোচ বলছিলেন, ‘‘মানসিক ভাবে শক্তিশালী থাকতে হবে। ও এত দিন ধরে ভারতীয় দলে খেলছে। ওকে আলাদা করে কিছু বলার নেই। তবে কুলদীপও তো মানুষ। দলে সুযোগ না পেলে মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক।’’ যোগ করেন, ‘‘কুলদীপ গুগলিও উন্নত করেছে। আইপিএলে ফ্লাইট কমিয়ে বল করতে হয়েছিল। কিন্তু টেস্টে তো সে রকম বল করলে চলবে না। বল ঘুরবে না। ইংল্যান্ডে প্রথাগত যে লেগস্পিনটা করবে, সেটায় ফ্লাইট বাড়িয়ে করতে হবে। যাতে বল আরও ঘোরানোর সুযোগ পায়। ওখানে পিচ থেকে তো আর সাহায্য পাবে না। যা করার নিজেকেই করতে হবে।’’

টেস্টে সুযোগ না পেয়ে কোচকে মন খারাপের কথা জানিয়েছেন কুলদীপ। বিশেষ করে যেখানে প্রথম দুই টেস্টের পিচে স্পিনাররা সাহায্য পেয়েছেন, সেখানে বাইরে বসে থাকার ফলে একটু বিষণ্ণ এই বাঁ-হাতি স্পিনার। তৃতীয় টেস্টেওয়াশিংটন সুন্দর চার উইকেট পেয়েছেন। বল ঘোরাতেও হয়নি। কুলদীপ সেই জায়গায় থাকলে কি সফল হতেন না? কোচের কথায়, ‘‘এমন অনেকপরিস্থিতি আসে যখন মেজাজ হারাতে নেই। মন শক্ত করতে হয়। কুলদীপও ধৈর্য হারায়। সুযোগ না পেলে মন খারাপ করে। ও ধ্যান করে মাথা ঠান্ডা রাখে। হেডফোন লাগিয়ে পুরনো দিনের গান শোনে। ভাল খেলতে গেলে অনেক কিছুর সঙ্গে লড়াই করতে হয়। শুধুমাত্র মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। ও এখন অভিজ্ঞ। সব কিছুই শিখে গিয়েছে।’’

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে কুলদীপ নিজের প্রতিভা কাজে লাগানোর সুযোগ পান কি না, সেটাই দেখার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-England Test Series reverse sweep

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy