গত বছর আইপিএলের মহানিলামে অনেক লড়াই করে, তিন-চারটি দলের সঙ্গে টক্কর দিয়ে ঋষভ পন্থকে কিনেছিলেন সঞ্জীব গোয়েন্কা। খরচ করতে হয়েছিল ২৭ কোটি টাকা, যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তাতেও ভাগ্য বদলাল না লখনউ সুপার জায়ান্টসের। সোমবার হায়দরাবাদের কাছে হেরে আইপিএলের প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেল তারা।
পচা শামুকে পা কাটল গোয়েন্কার দলের। কারণ, আইপিএল থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে গত বারের ফাইনালিস্ট হায়দরাবাদ। তাদের কাছেই মরণবাঁচন ম্যাচে হারতে হল লখনউকে। আগে ব্যাট করে লখনউয়ের তোলা ২০৫/৭ রান আট বল বাকি থাকতেই তুলে দিল হায়দরাবাদ (২০৬/৪)।
আইপিএলে ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্টেই থাকল লখনউ। বাকি দু’টি ম্যাচ জিতলেও তাদের আর প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা নেই। বাকি দু’টি ম্যাচ জিতলে তাদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হবে ১৪। চারে থাকা মুম্বই (১৪) এবং পাঁচে থাকা দিল্লি (১৩) খেলবে মঙ্গলবার। যে-ই জিতুক, তাদের ১৪-র বেশি পয়েন্ট হবে। ম্যাচ ভেস্তে গেলে মুম্বইয়ের ১৫ পয়েন্ট হয়ে যাবে। ফলে লখনউ কোনও ভাবেই আর হিসাবে থাকছে না।
লখনউয়ের অবস্থা যা, তাতে বাকি দু’টি ম্যাচে তাতে জেতার সম্ভাবনাও কম। সেই দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে গুজরাত এবং পঞ্জাবের সঙ্গে। দু’টি দলই প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে। দুই দলের কাছেই সুযোগ রয়েছে প্রথম দু’য়ে শেষ করার।
সোমবার ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে পারল না লখনউ। দুই ওপেনার যে ভাবে শুরুটা করে দিয়েছিলেন, তার পরে স্কোরবোর্ডে অনেক বেশি রান তোলার কথা ছিল তাদের। ওপেনিং জুটিতে একশোর বেশি রান উঠে গেলে যে কোনও দলই চাইবে ২৫০-এর কাছাকাছি রান তুলতে। সেটাই পারল না লখনউ। এর জন্য দায়ী তাদের মিডল অর্ডার।
মিচেল মার্শ শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলছিলেন। অন্য দিকটা ধরে রেখেছিলেন এডেন মার্করাম। শুরু থেকেই হায়দরাবাদের বোলারেরা সুবিধা করতে পারেননি। অনায়াসে রান তুলতে থাকেন দুই ব্যাটার।
মার্শ ফেরার পর নিকোলাস পুরান নয়, নামেন পন্থ। চলতি আইপিএলে বার বার যে জিনিস দেখা গিয়েছে তা-ই দেখা গেল সোমবার। আবারও পন্থের একটা খারাপ ইনিংস। কী শট খেললেন নিজেই বুঝতে পারলেন না। বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় নামের পাশে লেখা ৬ রান। বিরক্তি লুকোতে পারেননি মালিক গোয়েন্কাও। হতাশ মুখে ভিভিআইপি বক্সের ভিতরে ঢুকে গেলেন তিনি। ওই একটা দৃশ্যই যেন গোটা মরসুমে লখনউয়ের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে দিল।
লখনউয়ের দুই ওপেনার অর্ধশতরান করে ফেরার পরেও ছিলেন নিকোলাস পুরান। দলকে দুশো পার করাতে ভূমিকা নিলেন তিনিই।
আরও পড়ুন:
তবে একানা স্টেডিয়ামের এই পিচে ২০৫ রান কখনওই যথেষ্ট ছিল না। সেটা বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক শর্মা। ট্রেভিস হেড না থাকায় এ দিন হায়দরাবাদ ওপেন করতে পাঠিয়েছিল অথর্ব তাইড়েকে। অথর্ব ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে এর পরে হায়দরাবাদের যে ব্যাটাররাই এলেন, নিজেদের মতো অবদান রেখে গেলেন।
সবচেয়ে আগ্রাসী ছিলেন অভিষেক। ১৮ বলে অর্ধশতরান করলেন। ৪টি চার এবং ৬টি ছয়ের সাহায্যে ২০ বলে ৫৯ করে গেলেন। তাঁকে আউট করার অসভ্যতা করে অকারণে বিতর্ক তৈরি করলেন দিগ্বেশ রাঠী। কড়া শাস্তি পেতে পারেন তিনি।
তাতেও হায়দরাবাদের মনোবলে চিড় ধরাতে পারেনি লখনউ। ঈশান কিশন (৩৫), হাইনরিখ ক্লাসেন (২৮ বলে ৪৭) এবং কামিন্দু মেন্ডিস (২১ বলে ৩২) নিজেদের মতো অবদান রাখলেন। দলগত প্রয়াসে জিততে অসুবিধা হল না হায়দরাবাদের। আট বল বাকি থাকতেই জিতলেন প্যাট কামিন্সেরা।