সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজ়ায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক, প্রয়াত ছাত্রনেতা ওসমান হাদির শেষকৃত্য ঘিরেও ছড়াল বিশৃঙ্খলা! নমাজ শেষ হতেই একদল লোক দৌড়ে ঢোকার চেষ্টা করলেন সংসদ ভবনে। সেনার হস্তক্ষেপে কোনও মতে নিরস্ত করা হল তাঁদের।
হাদির শেষকৃত্যের পর উপস্থিত জনতার একাংশ জোর করে সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। সেখানে অবস্থানরত সেনা সদস্যেরা তাঁদের বাধা দেন। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বেলা আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে সংসদে প্রবেশের গেটগুলি ঘিরে ফেলেন সেনা। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বেঁধে ফেলা হয় ভবনের চার দিক। মাইকে সকলকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন সেনা সদস্যেরা। যদিও যাঁরা সংসদে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তাঁরা সরেননি। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁরা সেনার কর্ডনের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে খবর। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে ভিড় ফাঁকা হতে থাকে।
আরও পড়ুন:
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজ়ায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে হাদির। উপস্থিত ছিলেন সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়াও ছিলেন তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যেরা। হাদিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন কাতারে কাতারে মানুষ। বিবিসি বাংলা-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, নমাজের আগে ইউনূস বলেন, ‘‘তোমাকে আমরা বিদায় জানাতে আসিনি আজ। তুমি আমাদের বুকের ভিতরে আছ, সব বাংলাদেশির বুকের ভিতরে আছ।’’ এ সময়ে হাদির পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যদের পক্ষ থেকে হাদির খুনিদের গ্রেফতারি ও চরম শাস্তির দাবি জানানো হয়।
শেষকৃত্যের পর দুপুর সাড়ে ৩টের দিকে হাদির দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় মসজিদে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাধিস্থ করা হয় তরুণ নেতাকে। একাধিক শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সমাধিস্থ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নির্দিষ্ট চত্বরে। এ বার সেখানে স্থান পেলেন হাদিও।
হাদির শেষকৃত্যের জমায়েত থেকে হিংসা ছড়াতে পারে, এই মর্মে বাংলাদেশে থাকা নাগরিকদের আগেই সতর্ক করেছিল আমেরিকা। জমায়েতের কারণে শনিবার ঢাকায় ব্যাপক যানজট হতে পারে বলেও জানানো হয়েছিল। প্রস্তুত ছিল ইউনূস সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় হাদির মরদেহ। হাদির স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে শনিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।