বেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স।
উসমান খোয়াজাকে আউট করতে প্রথম ইনিংসে অভিনব উপায় বার করেছিল ইংল্যান্ড। তাঁর সামনে উল্টো ছাতার মতো ফিল্ডার সাজিয়ে দিয়েছিল। সেই চাপেই ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন শতরান করা খোয়াজা। দ্বিতীয় ইনিংস বেন স্টোকস দাঁড়ালেন বোলারের পিছনে। অদ্ভুত জায়গায় ফিল্ডিং করে আবার খোয়াজার মনঃসংযোগ নষ্ট করার চেষ্টা করল ইংল্যান্ড। সেই সঙ্গে চলল স্টুয়ার্ট ব্রডদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। শেষ দিনে জিততে হলে ১৭৪ রান প্রয়োজন অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের দরকার সাত উইকেট।
জয় দিয়ে এ বারের অ্যাশেজ শুরু করতে হলে অস্ট্রেলিয়ার চাই শেষ ইনিংসে ২৮১ রান। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ ২৭৩ রানে। এজবাস্টনে প্রথম ম্যাচেই জয়ের সুযোগ রয়েছে প্যাট কামিন্সের দলের। রয়েছে পঞ্চম দিনও। অনেকটা সময় রয়েছে স্টিভ স্মিথদের হাতে। তাঁদের লক্ষ্য জয়ের রান তোলা। সেই পথে স্মিথদের কাজ কঠিন করার জন্য রয়েছেন ব্রডরা। একের পর এক বল ইনসুইং করানোর পর হঠাৎ একটা আউট সুইং করাচ্ছেন। ব্যাটারদের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছেন তাঁরা।
চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে আবার বাজ়বল খেলা শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। এক সেশনে উঠল ১২৭ রান তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটারেরা। ওভার প্রতি ৪.৭৯ রান করেছিলেন তাঁরা। চতুর্থ দিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৫ উইকেটে ১৫৫। পরের সেশনে উঠল ১১৮ রান। পড়ল পাঁচ উইকেট।
দিনের প্রথম বলটাই রিভার্স স্কুপ মারার চেষ্টা করেছিলেন জো রুট। দেখে অবাক হয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। কয়েক ওভার পরে আবার রিভার্স স্কুপ রুটের। তা-ও এক জোড়া। এ বার বোলারের নাম স্কট বোল্যান্ড। একটি বল গিয়ে পড়ল বাউন্ডারির বাইরে। অন্য বলটি গড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে গেল। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটার রুট ও ওলি পোপ। যদিও বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি পোপ। ১৪ রান করে প্যাট কামিন্সের ইয়র্কারে বোল্ড হন।
উইকেট পড়লেও খেলার ধরন বদলায়নি ইংল্যান্ডের। যে নীতিতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করেছিলেন, সেই একই নীতিতে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলছেন তাঁরা। যে করেই হোক স্কোরবোর্ড সচল রাখতে হবে। বড় শট না মারতে পারলে সিঙ্গল-ডাবলসে রান করতে হবে। সেটাই করলেন রুটরা। তাঁকে যোগ্য সঙ্গে দিলেন হ্যারি ব্রুক। প্রথম ইনিংসে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল ব্যাট করছিলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
নিজের অর্ধশতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন রুট। কিন্তু ৪৬ রানের মাথায় নেথান লায়নের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বড় শট মারতে গিয়ে স্টাম্প আউট হলেন তিনি। রুট আউট হওয়ার পরে অবশ্য রানের গতি কিছুটা কমে ইংল্যান্ডের। অধিনায়ক বেন স্টোকস সময় নিচ্ছিলেন। ফলে রান তোলার দায়িত্ব ছিল ব্রুকের কাঁধে। ৪৬ রান করে লায়নের বলে আউট হয়ে যান ব্রুক।
নাথান লায়ন এবং প্যাট কামিন্স চারটি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন জস হেজলউড এবং স্কট বোলান্ড। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় বাধা দেন তাঁরা। কামিন্সের একটি ইয়র্কারে অলি পোপের স্টাম্প ছিটকে যায়। এ বারের অন্যতম সেরা বল বলে মনে করা হচ্ছে সেটিকে। ইংল্যান্ডের বোলাররা পাল্টা আক্রমণে অস্ট্রেলিয়াকে ২৮১ রানের মধ্যে আটকে দিতে পারেন কি না সেই দিকেই নজর থাকবে।
চতুর্থ দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার খোয়াজা অপরাজিত রইলেন। তাঁকে আউট করার নানা চেষ্টা করলেও পারলেন না ব্রডরা। যদিও ডেভিড ওয়ার্নার, মার্নাস লাবুশেন এবং স্টিভ স্মিথকে আউট করে দিয়েছেন ইংরেজ বোলারেরা। খোয়াজার সঙ্গে রয়েছেন রাতপ্রহরী হিসাবে খেলতে নামা স্কট বোলান্ড। ইংল্যান্ড চাইবে মঙ্গলবার দ্রুত উইকেট তুলতে। হাতে খুব বেশি রান না থাকলেও পাল্টে যাওয়া ইংল্যান্ড জয়ের জন্য যে মরিয়া হয়ে উঠবে, তা বলাই যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy